রবিবার, ডিসেম্বর ১, ২০২৪
প্রচ্ছদটপমহাজোট সরকারের শেষ বাজেট বৃহস্পতিবার ঘোষণা

মহাজোট সরকারের শেষ বাজেট বৃহস্পতিবার ঘোষণা

budgetমহাজোট সরকারের শেষ বাজেট বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে। এবারের বাজেটের আকার প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা হবে বলে আভাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) জন্য ৭৩ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দুই প্রধান জোট সমঝোতায় আসতে না পারলে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার জেরে বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

অব্যাহত রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিরোধীদলের হরতালে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এক নাজুক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আর অর্থনীতিতে এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে। কর আদায়সহ বিভিন্ন খাতে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হয়নি। এ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষিত হতে যাচ্ছে। ফলে বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

কারণ গত বছরের ৭ জুন বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। বেশ উচ্চাশা নিয়েই মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৭.২% নির্ধারণ করা হয়। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ১২ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা ধরা হয়। কিন্তু সব উচ্চাশাই রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার জেরে ফিকে হতে শুরু করে। রাজনৈতিক অস্থিরতায় পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে এবং স্থল ও সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রমে ছেদ পড়ে। একইসঙ্গে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ কমতে শুরু করে।

জাতীয় সংসদে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেট বৃহস্পতিবার বিকেলে অর্থমন্ত্রী পেশ করবেন। এর রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৬৭ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রাজস্ব বোর্ড নিয়ন্ত্রিত কর ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা এবং প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.২ শতাংশ।

তবে এসব লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘রেভেন্যুউ টার্গেট যেটা ধরা হয়েছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এর দুইটি কারণ: একটি রাজনৈতিক অস্থিরতা, অন্যদিকে জিডিপি ধরা হয়েছে ৭.২% যেটা অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।’

২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য এরইমধ্যে এডিপি ঘোষণা করেছে সরকার। স্বায়ত্ব শাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব অর্থায়নসহ এর আকার ধরা হয়েছে ৭৩ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। তবে প্রকৃত এডিপি ৬৫ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। সমাপ্ত প্রায় অর্থবছরের বাস্তবতায় নতুন এডিপি বাস্তবায়ন নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) পরিচালক ড. জায়েদ বখত বলেন, ‘এবারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে অনেকগুলো বরাদ্দহীন এবং অনুমোদনহীন প্রকল্প রয়ে গেছে। এগুলো ক্লিয়ারলি রাজনৈতিক বিবেচনা।’

এছাড়া বাজেট ঘাটতি থাকছে প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকা যা জিডিপি ৪.৮ শতাংশ। আর ঘাটতি মোকাবেলায় ব্যাংক থেকে ২৫ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। একইসঙ্গে বৈদেশিক সাহায্য পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রাও বাড়ানো হয়েছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকলে বাজেট ঘাটতি বাড়তে পারে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

এ সম্পর্কে ড. এবি মির্জ্জা বলেন, ‘পুরোটা ঘাটতি যদি আমি বৈদেশিক কনসেশন লোনে করতে পারি তাহলে ঘাটতি হলে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু অপজিট এক্সট্রিমে আমার পুরোটা ঘাটতি যদি আভ্যন্তরীণ ব্যাংকি ব্যবস্থা থেকে করতে হয় তাহলে এর একটা নীতিবাচক প্রভাব হবে। সুতরাং ঘাটতির লেভেলটা আমার জন্য কনসার্ন নয়, কনসার্ন হচ্ছে ঘাটতির অর্থায়নটা কিভাবে করবো।’ বরাবরের মতো এবারো বাজেটে কালো টাকা সাদা করার পাশাপাশি ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো হবে। একইসঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ উন্নয়ন পরিকল্পনাও রয়েছে।

গত তিনবারের মতো এবারো ডিজিটাল পদ্ধতিতে অর্থাৎ পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ