বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪
প্রচ্ছদটপবুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড মাঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ২৭ জুন

বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড মাঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ২৭ জুন

tribunalএকাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে জড়িত চৌধুরী মাঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে ২৭ জুন অভিযোগ গঠনের দিন ঠিক করেছে ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আদেশ দিয়েছে।

এর আগে গত ২৭মে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ শুরুর নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।

ওই দিন আদেশে বলা হয়েছে চৌধুরী মাঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানকে উপস্থিত হওয়ার জন্য ইতিমধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১০ দিনের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা দুজন ওই সময়ের মধ্যে উপস্থিত হননি। পুলিশের দেয়া প্রতিবেদনেও তারা দুজন পলাতক।

আন্তর্জাতিক (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩ অনুযায়ী তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ শুরুর নির্দেশ দেয়া হলো।

এরইমধ্যে চৌধুরী মাঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানের পক্ষে আইনি লড়াই চালানোর জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত সুপ্রিম কোর্টের দুজন আইনজীবী আবদুস শুকুর খান ও সালমা হাই টুনিকে নিয়োগ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

আদেশে বলা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগসহ অন্যান্য নথিপত্র রাষ্ট্রনিযুক্ত ওই দুজন আইনজীবীকে ৪ জুনের মধ্যে রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে সরবরাহের নির্দেশ দেয়া হয়। এর আগে ২ মে চৌধুরী মাঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে ওই দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল।

গত ২৫ এপ্রিল চৌধুরী মাঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকউশন। প্রসিকিউশনের এ অভিযোগ আমলে নেয়ার জন্য প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল ট্রাইব্যুনালে তা দাখিল করে।

গতবছর ১১ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক এ দু’জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন প্রসিকিউশনের কাছে। যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষক, ৬ জন সাংবাদিক ও ৩ জন চিকিৎসকসহ ১৮ জন বুদ্ধিজীবীকে হত্যার ১৬টি অভিযোগ রয়েছে।

যে ১৮ জন বুদ্ধিজীবীকে হত্যার জন্য আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মাঈনুদ্দীন অভিযুক্ত করা হচ্ছে, তারা হলেন—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শিক্ষক অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমদ, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, ড. আবুল খায়ের, ড. সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. সিরাজুল হক খান, অধ্যাপক ফয়জুল মহি, অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী এবং অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী।

শহীদ চিকিৎসকরা হলেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. মর্তুজা, বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুল আলীম চৌধুরী এবং বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট ডা. ফজলে রাব্বী।

শহীদ সাংবাদিকরা হলেন : দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক সিরাজউদ্দিন হোসেন, পিপিআইয়ের চিফ রিপোর্টার সৈয়দ নাজমুল হক, দৈনিক পূর্বদেশের চিফ রিপোর্টার আনম গোলাম মোস্তফা, বিবিসির সংবাদদাতা ও পিপিআইয়ের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার নিজামউদ্দিন আহমেদ, শিলালিপি পত্রিকার সম্পাদিকা সেলিনা পারভীন এবং দৈনিক সংবাদের যুগ্ম সম্পাদক ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক শহীদুল্লাহ কায়সার।

একাত্তরে আশরাফুজ্জামান ও মাঈনুদ্দীন জামাতের তৎকালীন ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। বর্তমানে আশরাফুজ্জামান খান আমেরিকা এবং চৌধুরী মাঈনুদ্দীন লন্ডনে অবস্থান করছেন।

উল্লেখ: মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত সংস্থা ২০১১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মাঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। গত বছরের ৯ অক্টোবর তা শেষ হয়। তদন্তে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৮ জন বুদ্ধিজীবীকে হত্যার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। তদন্ত সংস্থা ১০ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন, সাক্ষীদের জবানবন্দি ও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলির কার্যালয়ে জমা দেয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ