শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়মসলার বাজারে কারসাজির হোতাদের খুঁজতে মাঠে গোয়েন্দা সংস্থা

মসলার বাজারে কারসাজির হোতাদের খুঁজতে মাঠে গোয়েন্দা সংস্থা

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে মসলার বাজারে ‘ঝাঁজ’ বাড়ছে প্রতিদিন। এমন পরিস্থিতিতে ভোক্তার নাভিঃশ্বাস অবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে মসলার মূল্য ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে মাঠে কাজ করছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে মসলার বাজারে কারসাজির হোতাদের খুঁজতে মাঠে কাজ করছে গোয়েন্দা সংস্থা।

এমন তথ্য জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

মহাপরিচালক জানিয়েছেন, আসন্ন কোরবানির ঈদে মসলার বাজার স্থিতিশীল রাখতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সারাদেশে মসলার বাজার নিবিড়ভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। আমরা পুরো সপ্তাহ এটা নজরদারিতে রাখবো। গোয়েন্দা সংস্থা এখানে কাজ করবে। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য এবং আমাদের মনিটরিংয়ে প্রাপ্ত তথ্য সমন্বয় করে একটি প্রতিবেদন সরকারের নিকট তুলে ধরবো।

বাজারে এখন যে অবস্থা তাতে অভিযান চালানোর বিকল্প নেই মন্তব্য করে সারা দেশের মসলার বাজার গুলোতে অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

রাজধানীর নিউমার্কেট- কারওয়ান বাজার- শাহ আলী মার্কেট বাজারের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ পড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে মসলার দামের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। বিক্রেতারা ইচ্ছে মতো দাম রাখেন, যার প্রভাব পড়ছে বাজারে। আবার বন্দরে মসলা পণ্য ছাড়ে বেশি সময় লেগে যাওয়ায় দাম বেড়ে যায়, এমন অভিযোগ আমদানিকারকদের।

এমন পরিস্থিতিতে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে বন্দরে মসলা খালাসের ক্ষেত্রে সমস্যার বিষয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরকে অবহিত করলে তা সমাধানের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

খুচরা পর্যায়ের মসলার দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযানে কোনো দোকানে মূল্যতালিকা না থাকলে ওই দোকানকে জরিমানা ও কম করে হলেও একদিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে। এছাড়া দোকানগুলো ক্রয়মূল্যের রশিদ দেখাতে না পারলে কমপক্ষে তিন দিনের জন্য দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে: এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ মসলা জাতীয় পণ্য আমদানি করা হয়েছে তাতে করে কোরবানি ঈদ পর্যন্ত সঙ্কটের কোন সম্ভবনা নেই।

সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে আদা-পেঁয়াজসহ বেশ কয়েক পদের মসলার দাম বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তালিকা বলছে: মঙ্গলবার ঢাকার বাজারে আমদানি (ভারত-ইন্দোনেশিয়া) করা আদা বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। চীনা আদা বাজারে তেমন একটা নেই। থাকলেও সেটি ৫০০ টাকা কোজি বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগে যা প্রতিকেজি সর্বোচ্চ ২৮০ টাকা, ১ বছর আগে ৮০ থেকে ১১০ টাকা ছিলো। শুধু আদাতেই মাস ব্যবধানে দাম বেড়েছে ১১৪.২৯ শতাংশ, আর বছর ব্যবধানে দাম বেড়েছে ২১৫.৭৯ শতাংশ।

প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। এক মাসে যার দাম ছিলো ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা প্রতিকেজি। এক্ষেত্রে মাস ব্যবধানে দাম বেড়েছে ৪৫ শতাংশ।

মসলার আরেক গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ জিরা বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৬০ টাকা প্রতিকেজি। এক মাস আগে যা ছিলো ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা। দাম বেড়েছে ৩২.৮ শতাংশ।

দাম বাড়ার দৌঁড়ে রয়েছে লবঙ্গ-এলাচ-দারুচিনিও। প্রতিকেজি লবঙ্গ ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা, এলাচ ১৬০০ থেকে ২৮০০ টাকা, দারুচিনি ৪৫০ থেকে ৫২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক মাস লবঙ্গ ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা, এলাচা ১৬০০ থেকে ২৬০০, দারুচিনি ৪১০ থেকে ৫২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিলো। এক্ষেত্রে মাস ব্যবধানে লবঙ্গ ১০.৭১, এলাচ ৪.৭৬, দারুচিনি ৪.৩ শতাংশ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

এছাড়া মসলা পণ্যের মধ্যে দাম বেড়েছে ধনিয়ার। প্রতিকেজি ধনিয়া বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা। এক মাস আগে যা ছিলো ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ৪৮.২৮ শতাংশ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ