শনিবার, মে ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদআরো খবর......মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের রায় পড়া শুরু

মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের রায় পড়া শুরু

ষ্টাফরিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিশেষ করে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে পলাতক দুই আলবদর নেতা চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে রায় পড়া শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল- ২। রবিবার বেলা ১১টায় বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আসন গ্রহণ করেন। বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম রায়ের প্রথম অংশ পড়ে শোনাচ্ছেন। রায়ের কপি ১৫৪ পৃষ্ঠার, প্যারা ৫৫৩, শব্দ ৮৭ হাজার ২৫৮টি।

এজলাসে আসন গ্রহণ করে ওবায়দুল হাসান বলেন, যেহেতু আসামিরা এজলাসে উপস্থি নেই সেহেতু এই রায়ের কপি নিয়মানুযায়ী প্রসিকিউশন পাবে, এবং অপর একটি কপি এটর্নি জেনারেল পাবেন। তিনি বলেন, আসামিরা যদি আত্মসমর্পন করেন তাহলে এই সার্টিফাইড কপি নিয়ে আপিল করতে পারবেন।
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে  মামলাটির রায় ঘোষণা অপেক্ষামান রাখা হয় । মূলত বুদ্ধিজীবী অপহরণের পর নির্যাতন ও হত্যার ১১ অভিযোগে তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠনের এই দুই নেতার বিচার হয়। তাদের অনুপস্থিতিতেই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। দুই বদর নতার বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়জন শিক্ষক, ছয়জন সাংবাদিক ও তিনজন চিকিৎসকসহ ১৮ বুদ্ধিজীবীকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার কার্যক্রম শেষ করার প্রায় ৩১ দিনের মাথায় রায় ঘোষণার দিন ঠিক করলেন ট্রাইব্যুনাল। মামলায় যুক্তি উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর শাহিদুর রহমান, অন্যদিকে আসামিপক্ষে আব্দুস শুকুর খান ও সালমা হাই টুনি। অন্যদিকে প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী দুই অভিযুক্তের  বিরুদ্ধে আইনি বিষয়ে যুক্তি খণ্ডন করেন। তাদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা অভিযোগগুলোর মধ্যে একটি হলো বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ করার জন্য আল বদরের সদস্যদের উদ্বুদ্ধ করেছেন।
তাদের দুই জনের একজন ছিলেন আল-বদরের চিফ এক্সিকিউটর আশরাফুজ্জামান খান ও অন্যজন ছিলেন চিফ ইনচার্জ চৌধুরী মুঈনুদ্দিন। অভিযো্গে বলা হয় ওই দুই আল বদর নেতার নেতৃত্বে দেশের বরেণ্য বুদ্ধীজীবীদের অপহরণ করার পরে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে।
এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকউটর শাহীদুর রহমান  চৌধুরী মুঈনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আনা ১১টি অভিযোগে বিভিন্ন সাক্ষীর জবানবন্দি ও দালিলিক প্রমাণ নিয়ে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। পরে ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর দুই দিন আসামি পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত দুই আইনজীবী তাদের যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন।
যুক্তি উপস্থাপন শেষে প্রসিকিউটর শাহিদুর রহমান বলেন, ‘দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা অভিযোগ আমরা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি। আমরা আশা করি তার সবোর্চ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত।’ গত ২৪ জুন চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে ১১টি অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল-২ এ অভিযোগ গঠন করে। গত ২ মে দু’জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল।  বিদেশে অবস্থান করায় তাদের হাজির হতে দুটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশও করা হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর তারা হাজির না হওয়ায় তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। এই মামলায় গত ১৫ জুলাই সাক্ষ্য নেয়া শুরু করে মোট ২৫ জন সাক্ষী তাদের বিরুদ্ধে জবানবন্দি পেশ করেন। পরে তাদেরকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। আশরাফুজ্জামানের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বেজড়া ভাটরা (চিলেরপাড়) গ্রামে। চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের বাড়ি ফেনীর দাগনভুঞার চানপুরে।
আরও পড়ুন

সর্বশেষ