রবিবার, মে ১৯, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিননারীদের দক্ষতা উন্নয়ন, পেশাদারীত্ব, উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ ও নেতৃত্বের উন্নয়নে অবদান রাখছে...

নারীদের দক্ষতা উন্নয়ন, পেশাদারীত্ব, উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ ও নেতৃত্বের উন্নয়নে অবদান রাখছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান

IMG_20190504_180827আর্ন্তজাতিক বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ.ডব্লিউ) চট্টগ্রামের ৭ম সমাবর্তন আগামী ১১ মে, ২০১৯ শনিবার বেলা ২ঘটিকায় হোটেল রেডিসন ব্লু, চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে। সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান এর মাননীয় চ্যান্সেলর চেরী ব্লেয়ার । এবারের সমাবর্তনে বাংলাদেশ সহ এশিয়া ও মিডলইস্ট এর দেশ সমূহের ১০০ জন শিক্ষার্থীকে গ্র্যাজুয়েট সম্মাননা সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে । উক্ত দেশ সমূহ হলো ঃ ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মায়ানমার, নেপাল, ফিলিস্তিন, যুক্তরাষ্ট্র, কম্বোডিয়া, শ্রীলংকা, ভিয়েতনাম, ভূটান এবং বাংলাদেশ।সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আফগানিস্থানের প্রেসিডেন্টের অবকাঠামো,মানব সম্পদ উন্নয়ন ও প্রযুক্তি বিষয়ক মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও অর্থমন্ত্রী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হুমায়ন কাইয়ুমী এবং ২০১৬ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক খেতাব “স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার ” প্রাপ্ত বাংলাদেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা ডিপার্টমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। পাশাপাশি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান এর পক্ষথেকে সমাবর্তন বক্তা প্রফেসর মুহাম্মদ হুমায়ন কাইয়ুমীকে “ডক্টর অফ লজ” এবং প্রফেসর রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে “ “ডক্টর অফ আর্টস” সম্মান সূচক ডিগ্রী প্রদান করা হবে । এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান চট্টগ্রাম কর্তৃক আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে এই তথ্য গুলি উপস্থাপন করেন ইউনিভার্সিটি রেজিষ্ট্রার ড.ডেভ ডোল্যান্ড ।

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান এর মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. র্র্নিমলা রাও বলেন “ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হুমায়ন কাইয়ুমী এবং প্রফেসর রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ.ডব্লিউ) চট্টগ্রামের ৭ম সমাবর্তনে তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসাধারণ কার্যক্রম ও অর্জন সবার সামনে তুলে ধরবেন । আমি বিশ্বাস করি , সমাবর্তনে যে সমস্ত তরণীরা গ্রাজুয়েট সার্টিফিকেট অর্জন করবে তারা তাদের মাঝে অনন্য “রোল মডেল” ব্যক্তিদের সাহচর্য্য পাবে ও তাদের মত অভিষ্ঠ লক্ষ্য অর্জনে সাহসী হয়ে উঠবে ।”
“ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হুমায়ন কাইয়ুমী বৈরত আমেরিকান ইউনিভার্সিটি হতে ইলেকট্রিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ¯œাতক ডিগ্রী অর্জন করার পাশাপাশি ইউনিভার্সিটি অফ সিনসিনাতি হতে আরো ৪ টি বিষয়ে ¯œাতক ডিগ্রী অর্জন করেন । নিওক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং,ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ৩টি ¯œাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন । পরবর্তীতে ফিন্যান্স বিষয়ে এমবিএ ও ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন ।
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হুমায়ন কাইয়ুমীর ৮ টি বই এবং ১০০ এর অধিক আর্টিক্যাল বিশ্বের বিভিন্ন র্জানালে মুদ্রিত হয় । আফগানিস্থানের প্রেসিডেন্টের অবকাঠামো,মানব সম্পদ উন্নয়ন ও প্রযুক্তি বিষয়ক মাননীয় প্রধান উপদেষ্ঠা ও অর্থমন্ত্রী হওয়ার পূর্বে আমেরিকার ক্যালিফূর্নিয়ার সিলিকণ ভ্যালির প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত স্যান জোস স্টেট ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ২৮তম সভাপতি ও প্রফেসর হিসেবে কর্মরত ছিলেন । এর পূর্বে তিনি ক্যালিফূর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি ইস্ট বে’র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ।

প্রফেসর রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা প্রফেসর রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বাংলাদেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী । বর্তমানে বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা ডিপার্টম্যান্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন । সংগীতে অনন্য অবদানের জন্য প্রফেসর রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ২০১৬ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার “স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার ” লাভ করেন । ইতিপূর্বে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত ডিপার্টম্যান্টের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন । তিনি ঢাকায় অবস্থিত সংগীত বিদ্যালয় “সুরের ধারার” প্রতিষ্ঠাতা ।তিনি ঢাকার ছায়ানট,বুলবুল একাডেমী ও চারুকলায় সানজিদা খাতুন ও আতিকুল ইসলামের তত্তাবধানে সংগীতে তালিম গ্রহন করেন । পরবর্তীতে তিনি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন (আইসিসিআর) এর মাধ্যমে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত “শান্তি নিকেতন” বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার জন্য স্কলারশীপ লাভ করেন । তিনি শান্তি নিকেতনের বিখ্যাত সব শিক্ষক কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়,নিলীমা সেন,শৈলাজরঞ্জন মজুমদার, শান্তিদেব ঘোষ, গোরা সর্বাধিকারী, মনজু বন্দ্যোপাধ্যায়, এবং অশেষ বন্দ্যোপাধ্যায় এর সাহচর্যে রবীন্দ্র সংগীতের উপর শিক্ষা লাভ করেন ।
রেহেনা খান ,ডিরেক্টর ,এডমিশন ও সুমন চ্যাটার্জী ,ডিরেক্টর ,মার্কেটিং এন্ড স্টুডেন্ট রিক্রুইটম্যান্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ ডব্লিউ) এর ভর্তি কার্যক্রম এবং ১ম বারের মত আয়োজিত সামার স্কুল প্রোগ্রাম সম্পর্কে সবার সামনে উপস্থাপন করেন । সেন্টার ফর ক্যারিয়ার ডেভেলপম্যান্ট এন্ড ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামের হেড আমিনা চৌধুরী এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ ডব্লিউ) এর ছাত্রীদের প্রফেশনাল কার্যক্রম তাদের কর্মক্ষেত্র ও কর্মপরিধি সম্পর্কে অবগত করেন । এর পর এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ ডব্লিউ) তিন কৃতি ছাত্রী ইউনিভার্সিটি সম্পর্কে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন ।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ ডব্লিউ) স্টুডেন্ট গর্ভনমেন্ট এর প্রেসিডেন্ট মুনতাহা চৌধুরী বলেন “ আমি ৪ বছর আগেও কখনো কারো সামনে দাড়িয়ে কোন কিছু বলার সাহস পেতাম না । আর আজ আমি আপনাদের সবার সামনে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ ডব্লিউ) স্টুডেন্ট গর্ভনমেন্ট এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছি আর বক্তব্য রাখছি । আর আমাকে তৈরি করেছে এশিয়ান এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ ডব্লিউ) ।
কারিমা খান, পাকিস্তান হতে আগত ছাত্রী । সে রাজনীতি,দর্শন ,অর্থনীতি ও ডেভেলপম্যান্ট স্টাজিজের ছাত্রী । এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ ডব্লিউ) এর বিতর্ক দলের প্রেসিডেন্ট ও ইউনিভার্সিটি এর ভলিবল দলের সর্বকণিষ্ঠতম সদস্য । ২০১৬ সালে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত জুবীলি গেমস এ বাংলাদেশের পক্ষে তার নিজ দেশ পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলায় অংশগ্রহন করে । এই বছর সে কুয়েত ভিত্তিক আওকাফ পাবলিক ফাইন্ডেশন কর্তৃক “ ফিউচার এশিয়ান লিডারশীপ স্কলারশীপ” লাভ করে । আর এই বিরল সুযোগটি সে পেয়েছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ ডব্লিউ) এর ছাত্রী হিসেবে । তার বক্তব্যে তিনি সকল নারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “কখনো নিজের স্বপ্ন দেখা বন্ধ করবেন না ,যতক্ষন না নিজে সে স্বপ্নের অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌছান” ।
গার্মেন্টস হতে পড়তে আসা ছাত্রী মোছাম্মৎ ফিরোজা খাতুন বলেন, আমার বাড়ি রাজশাহীর চাপাঁইনবাবগঞ্জ। চরম দারিদ্রতার কারণে এইচএসসি পাশ করার পর আমার পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য আমি চট্টগ্রাম চলে আসি । এবং ইয়ংওয়ান গার্মেন্টস এ চাকরি গ্রহন করি। বিন্তু আমার স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করার ।একদিন শুনলাম এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ ডব্লিউ) গার্মেন্টস শ্রমিকদেও লেখাপড়া করার জন্য সুযোগ কওে দিচ্ছে এমনকি বেতন ও দিচ্ছে । আর তখনই আমি চিন্তা করলাম আমার স্বপ্ন পুরণে আমাকে এবার ঠেকায় কে ? আর আমি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ ডব্লিউ) এ ভর্তি হই এবং আমি বর্তমানে আমি আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ২বর্ষে লেখাপড়া করছি । সে আরো বলেন “এখনই সময় স্বপ্নকে তৈরি করার ! আর এটা যদি না কর আর কেউ তোমার সে সুযোগ নিয়ে তাদেও স্বপ্ন পূরণ করবে ! তাহলে তোমার স্বপ্ন পূরণে তুমি সেই ব্যাক্তি নয় কেন? ”
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ ডব্লিউ) এর ফাউন্ডার কামাল আহমেদ সবাইকে বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে ও সংবাদ সম্মেলনে সকল সাংবাদিক বন্ধুদের প্রেস কনফারেন্সে আসার জন্য ধন্যবাদ প্রদান করেন ।

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ ডব্লিউ)
২০০৮ সালে চট্টগ্রামে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ ডব্লিউ) যাত্রা শুরু করে । বিশ্ববিদ্যালয়টি এতদঅ লের প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেটি আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে নারীদের শিক্ষা ও নেতৃত্ব উন্নয়ন ও বিকাশে অবদান রাখছে ,যার শেকড় রয়েছে এশিয়ার জনগণের আকাঙ্খা ও প্রত্যাশা । বর্তমানে বিশ্বের ১৫ টি দেশের মেয়েরা এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ ডব্লিউ) এ অধ্যায়ন করছে ।এই বিশ্ববিদ্যালয়টি এতদঅ ল তথা এশিয়ার নারীদের নারী নেতৃত্ব,উদ্যোক্তা এবং সমাজ পরিবর্তনের অবদানের জন্য নারী নেটওয়ার্ক তৈরি করার জন্য অসাধারণ ভাবে সহযোগিতা করে আসছে । পাশাপাশি এটি এমন সব নারীদের জন্য কাজ করছে ,যাদের মধ্যে রয়েছে অসাধারণ শিক্ষার সম্ভাবনা, সাহসী মনোভাব এবং সকল প্রকার অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে গিয়ে সমাজ বির্নিমানে নিজেদের তৈরি করার অপার আগ্রহ । এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের মধ্যে বেশীর ভাগই হলো তাদের পরিবারের ১ম সন্তান যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে । বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮% ছাত্রী বিশ্বের ১০০% বৃত্তি বা প্রায় ১০০% বৃত্তি নিয়ে পড়া লেখা করে আসছে । এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এ.ইউ ডব্লিউ) এর বেশির ভাগ ছাত্রী তাদের নিজ নিজ দেশে বেসরকারী ক্ষেত্রে সুনামের সাথে কাজ করে আসছে । ২৫% ছাত্রী উচ্চতর শিক্ষার জন্য সুযোগ গ্রহন করেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় হতে ¯œাতক ডিগ্রী প্রাপ্ত ছাত্রীরা বা ইতিপূর্বে অধ্যয়নরত ছাত্রীরা বিশ্বের বড় বড় নামী দামি বিশ্ববিদ্যালয় যেমন:- স্ট্যানফোর্ড,অক্সফোর্ড,কলম্বিয়া, ব্র্যান্ডে,সারে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ