সোমবার খালেদার বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা দুই মামলার মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ফের শুরু হওয়ার কথা ছিল। মামলাটির প্রথম সাক্ষী বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদের অসমাপ্ত সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল এদিন। গত ২২ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেন তিনি। হারুন অর রশিদ অপর মামলা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলারও বাদী ও সাক্ষী।
সকালে সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবিসহ মামলা দু’টিতে মোট ৫টি আবেদন করেন আসামিপক্ষ। এর মধ্যে, সোমবার আদালতে খালেদার অনুপস্থিতির জন্য দুই মামলায় দু’টি আবেদন করা হয় এবং অপর দু’টি দরখাস্ত করা হয়েছে সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি রাখার জন্য। এছাড়া বিচারিক আদালতের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে হাইকোর্টে আপিলের জন্য সর্বশেষ আবেদনটি জানানো হয়েছিল এর আগের ধার্য তারিখ ২২ সেপ্টেম্বরে। পাঁচটি আবেদনের ওপরই শুনানি শুরু হয় বেলা ১১টা ৫ মিনিটে। সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন খালেদার পক্ষে শুনানি করেন। শুনানি শেষে ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে’ সোমবার আদালতে উপস্থিত না হতে খালেদা জিয়ার দু’টি আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। মামলা দু’টির বিষয়ে আপিল বিভাগে আপিল বিচারাধীন উল্লেখ করে সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবির আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত। তবে বিচারিক আদালতের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে হাইকোর্টে আপিলের আবেদনটি মঞ্জুর করে সাক্ষ্যগ্রহণ আগামী ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতবি করেন বিচারক। তিনি ওইদিন অবশ্যই খালেদা জিয়াকে হাজির করার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন আসামিপক্ষের আইনজীবীদের।
এর আগে, গত ২২ সেপ্টেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার প্রথম সাক্ষী বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদের আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এরপর সোমবার ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি করেছিলেন বিচারক। ওইদিন মামলা দু’টির প্রধান আসামি খালেদা জিয়ার করা দু’টি মামলারই সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোসহ ৬টি আবেদন নামঞ্জুর করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেছিলেন আদালত।খালেদা ছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার অপর ৫ আসামি হচ্ছেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল এবং শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনে আছেন। মামলার অপর আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া আদালতে হাজিরা দিয়ে আসছেন।
খালেদা ছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার অন্য ৩ আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর সাবেক একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান জামিনে আছেন। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।