শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদরাজনীতিজাতীয়তাবাদী শক্তিকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে একেরপর এক মামলা দেওয়া হচ্ছে

জাতীয়তাবাদী শক্তিকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে একেরপর এক মামলা দেওয়া হচ্ছে

খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা সহ্য করতে না পেরে ঢাকা আলিয়া মাদরাসায় স্থাপিত অস্থায়ী আদালত চত্বরে তার নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের সিনয়ির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সপ্তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে বুধবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।

আলোচনায় অন্যদের মধ্যে অংশ নেন-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শওকত মাহমুদ, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, বরকতউল্লাহ বুলু, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আফম ইউসুফ হায়দার প্রমুখ।

জাতীয়তাবাদী শক্তিকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে একেরপর এক মামলা দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের মামলা দেওয়া হয়েছে। আমাদের নেত্রী আইনের ওপর শ্রদ্ধাশীল বিধায় আজ (বুধবার) তিনি আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। যেহেতু তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী সেহেতু হাজার হাজার নেতা, কর্মী ও সমর্থক অস্থায়ী আদালত চত্বর এবং এর আশপাশে জড়ো হয়ে খালেদার প্রতি তাদের সমর্থন স্লোগানে স্লোগানে জানিয়ে দেন। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার খালেদা জিয়ার এ জনপ্রিয়তা সহ্য করতে পারেনি। শেখ হাসিনা তার অনুগত বাহিনী দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্মমভাবে হামলা চালিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানাই।

স্থায়ী আদালত থেকে আলিয়া মাদরাসার অস্থায়ী আদালতে খালেদার মামলা শিফট (স্থানান্তর) করার বিষয়টিকে ভয়ংকর আখ্যা দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, এর পেছনে সুদূরপ্রসারী উদ্দেশ্য আছে। যেখানে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে, সেখানেই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়ার বিচারকার্য শিফট করা হয়েছে। মূলত তাকে হেয় করার জন্যই এ কাজ করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি।

প্রসঙ্গ তারেক রহমান
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখনও কারামুক্ত হননি মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, তিনি কারামুক্ত হয়েছেন এমনটি মনে করি না। তিনি এখনও নির্বাসিত, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার আগে এই দানব সরকারকে সরাতে হবে। এদের না সরিয়ে তারেককে দেশে ফেরানো নিরাপদ নয়। তিনি আমাদের নেতা, তাকে ‍আগে বাঁচাতে হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পক্ষে যারা অবস্থান নিয়েছে তাদের নেতা তারেক রহমান, তাই স্বাধীনতা-সার্বভৌমবিরোধী শক্তির রোষানলে তিনি পড়বেন এটাই স্বাভাবিক। অতএব, এখনও যারা আমরা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে ‍আছি তাদের উচিত তারেককে ফেরানোর জন্য এ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা।

মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের এ কে খন্দকারের বই ‘১৯৭১ ভেতরে বাইরে’ পড়ার অনুরোধ জানিয়ে ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়‍া যে ভাষণকে আওয়ামী লীগ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে দাবি করে-সেই ভাষণ সম্পর্কে এ কে খন্দকার বলেছেন, এর মধ্যে স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল না। কারণ, ভাষণের শেষ অংশে শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’। এ থেকে প্রমাণ হয় তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি।

ফখরুল বলেন, শুধু তাই নয়, তাজউদ্দিন আহমেদের মেয়ে শারমিন আহমেদের মতো এ কে খন্দকারও তার বইয়ে লিখেছেন, ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া শেখ মুজিবের কাছে ২৫ মার্চ রাতে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ওটা রেকর্ড হয়ে যাওয়ার ভয়ে শেখ মুজিব সে ঘোষণাপত্রে সই করেননি। এ থেকেও প্রমাণ হয়, শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যাননি।

আওয়ামী লীগ সরকারকে বেহায়া-বেশরম আখ্যা দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, এদের কোনো শরম নেই। এরা উন্নয়ন-উন্নয়ন করে গলা ফাটাচ্ছে। অথচ তিন ঘণ্টার এই প্রোগ্রামের (আলোচনা সভা) পুরো সময়ই বিদ্যুৎ নেই। তাদের যদি ন্যূনতম শরম থাকতো তাহলে বিনা ভোটে নির্লজ্জের মতো ক্ষমতা দখল করে বসে থাকতো না। সরকারকে সরাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ