সোমবার, মে ২০, ২০২৪
প্রচ্ছদঅর্থ ও বানিজ্য সময়দুই দিন ব্যাপী SEANZA Governors’ Symposium এর সমাপ্ত

দুই দিন ব্যাপী SEANZA Governors’ Symposium এর সমাপ্ত

_MG_5765খন্দকার শাফায়েত হোসেন (বিডিসময়২৪.কম) SEANZA Forum এর স্বাগতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের আয়োজনে রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে ২৯ আগস্ট ২০১৪ থেকে দুই দিন ব্যাপী SEANZA Governors’ Symposium 2014 ২০১৪  সমাপ্ত হয়েছে। SEANZA সদস্য ভুক্ত দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এ সম্মেলন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক আয়োজিত এ যাবৎকালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত বৃহত্তম সম্মেলন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

তাছাড়া, SEANZA Forum এর বর্তমান চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী সম্মেলনে স্বাগত বক্তৃতা দেন। এ সম্মেলনে নেপালের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (নেপাল রাষ্ট্র ব্যাংক) এর গভর্নর ড. যুবরাজ খাতিওয়াদা এবং বাংলাদেশ, কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও পাকিস্তান এর ডেপুটি গভর্নর ছাড়াও ঝঊঅঘতঅ ভুক্ত ১৪টি (বাংলাদেশসহ) দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মোট ২৯ জন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

এ বছর সম্মেলনটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল “Macroeconomic Environment and Financial Sector Stability: Vulnerabilities and Managing Crises”| বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমেরিটাস ড. পিটার সিনক্লেয়ার সম্মেলনে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন। সম্মেলনে আলোচক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ছাড়াও SEANZA ভুক্ত অন্যান্য সদস্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।  তাছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের চেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট এডভাইজার জনাব আল্লাহ মালিক কাজেমী সম্মেলনে পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি ডিপার্টমেন্ট সম্মেলনের সার্বিক পরিচালনা ও সাচিবিক দায়িত্ব পালন করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বলেন, বৈশ্বিক আর্থিক মন্দা এবং পরবর্তী সময়কালে উন্নত দেশগুলোর সামষ্টিক অর্থনীতির অচলাবস্থা সৃষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বিভিন্ন আর্থিক নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানের গৃহীত ব্যবস্থার ফলাফল ছিল অত্যন্ত তিক্ত। বিশ্বের বৃহৎ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাত্রারিতিক্ত ঝুঁকি গ্রহণ, অপর্যাপ্ত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও কৌশল এবং অনিয়ন্ত্রিত তারল্য ব্যবস্থাপনা সম্পদ বাজারে কৃত্রিম নঁননষব সৃষ্টি করে যা পরবর্তী সময়ে এসব দেশের গোটা অর্থনীতিকে পিছনের দিকে ঠেলে দেয়। এ থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে এ দেশগুলোর সরকার মুদ্রা এবং রাজস্ব নীতিমালার যে পরিবর্তন আনয়ন করে তার ফলাফল তাৎক্ষণিক বা দীর্ঘমেয়াদ-উভয়ক্ষেত্রেই শতভাগ ফলপ্রসু ছিল না। তাই সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে আর্থিক খাত এবং সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষা করা পূর্বের যে কোন সময়ের চাইতে এখন অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি অত্যন্ত জোর দিয়ে বলেন, আর্থিক খাত এবং সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার বিষয় মাথায় রেখেই বাংলাদেশের রাজস্ব ও মুদ্রানীতির নীতিনির্ধারকগণ নিজেদের মধ্যে সমন্বয় স্থাপনের মাধ্যমে রাজস্ব এবং মুদ্রানীতি প্রণয়ন করে থাকেন এবং নীতি নির্ধারণের পূর্বে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের পরামর্শগুলো আমলে নেন। এরূপ আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিদৃত পদ্ধতি বাংলাদেশের জন্যে কার্যকর প্রতীয়মান হয়, যেখানে বর্তমান রক্ষণশীল কিন্তু প্রাসঙ্গিক মুদ্রানীতি রাজস্বনীতির সম্পূরক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সফল নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যষ্টিক পর্যায়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তদারকির পাশাপাশি সামষ্টিক পর্যায়ে গোটা আর্থিক খাতের পদ্ধতিগত বলিষ্ঠতা নিশ্চিতকরণের জন্য নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে ব্যাংকগুলোকে ব্যাসেল-২ এর নীতিমালা পরিপালনের সাথে সাথে ব্যাসেল-৩ এর নীতিমালা পরিপালনের জন্য উৎসাহ এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে।

তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত আর্থিক অন্তর্ভূক্তিকরণের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণের কথা তুলে ধরে বলেন, অন্তর্ভূক্তিমূলক অর্থায়ন বর্তমানে ক্ষুদ্র এবং তৃণমূল পর্যায়ে উদ্যোক্তাদের জন্য এমন এক সুযোগ সৃষ্টি করেছে যার সুফল দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ