বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের উকিল নোটিশ পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ। শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নওজোয়ান আয়োজিত এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকে বিএনপি নেতাদের মধ্যে যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে এতে মনে হচ্ছে নিশ্চয় সেখানে (সুইস ব্যাংক) তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোসহ আরো অনেকের টাকা আছে। আমি সন্দেহের কথাটাই বলেছি। সুতরাং এই সন্দেহের উদ্রেক করানোর জন্য বিএনপি নেতারাই দায়ী। তারেক রহমানকে অনুরোধ জানাবো তাদেরকে একটা উকিল নোটিশ দেওয়ার জন্য। তিনি বলেন,‘পত্রপত্রিকা টেলিভিশনে দেখেছি, শুনেছি যে, জনাব তারেক রহমান আমাকে একটি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন। আমি এখনো তা হাতে পাইনি। উকিল নোটিশ হাতে পাওয়ার পর আমি সিদ্ধান্ত নেবো, উকিল নোটিশের জবাব দিব, নাকি পাল্টা উকিল নোটিশ দিব।’
ড. হাসান মাহমুদ বলেন,‘যদি তিনি উকিল নোটিশ দিয়ে থাকেন, আমি মনে করি তিনি ভুল করে উকিল নোটিশ দিয়েছেন। উকিল নোটিশ তো দেওয়া উচিত ছিল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন ঘোষণা করলেন সুইস ব্যাংকে কাদের টাকা আছে সেটা নিয়ে তদন্ত হবে এবং সেখান থেকে টাকা ফেরত আনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপর থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তাদের সিনিয়র নেতারা যেভাবে কথা বলা শুরু করেছেন এতেই বরং সন্দেহটা ঘনীভূত হয়েছে।
নওজোয়ানের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ ইমাম হোসাইন চৌধুরীর সঞ্চালনায় সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মো. জাফর আলম।
‘নগরায়ণ ও জলাবদ্ধতা: সমুদ্রপৃষ্টের উচ্চতায় হুমকিতে উপকূলীয় শহর’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজের সহকারি অধ্যাপক সাইদুর রহমান চৌধুরী ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এ কে এম রেজাউল করিম।
সেমিনারের প্রধান অতিথি ড. হাসান মাহমুদ বলেন, রাতের আধারে যখন দুর্বৃত্তরা পাহাড় কাটে তখন পুলিশ সেখানে পাহারা দেয়। যেখানে তাদের প্রতিরোধ করার কথা সেখানে তারা সহায়তা করছে। সেজন্য ৩০ বছর আগে চট্টগ্রামে যত পাহাড় ছিল তার ৪০ শতাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি মহাপরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
সেমিনারে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ বলেন,সিডিএ, সিটি কর্পোরেশন ও ওয়াসার কাজের মধ্যে সমন্বয় না থাকার কারণে নগরবাসীকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এক সঙ্গে কাজ করলে এ ভোগান্তি হতো না। চাক্তাই খালের তলদেশ পাকাকরণের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিশ্বের কোথাও খালের তলদেশ পাকা করার নজির নেই।
নগর পরিকল্পনাবিদ সুভাষ বড়ুয়া বলেন, সমুদ্র পৃষ্টের উচ্চতার চেয়ে উন্নয়ন সংস্থাগুলো আমাদের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাস্টার প্ল্যান করা হয়েছে অথচ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। কে বাস্তবায়ন করবে এর কোনো নির্দেশনাও নেই। নগর উন্নয়নে নিরপেক্ষ ও স্বাধীন পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষসহ সিটি গভর্নমেন্ট দরকার বলেও মনে করেন তিনি।
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে চট্টগ্রামে নিযুক্ত জাপানের অনারারি কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক হাসিনা জাকারিয়া, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান পরিকল্পনাবিদ শাহীনুল ইসলাম খান, অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজের সহকারি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।