শনিবার, জুন ১, ২০২৪
প্রচ্ছদঅর্থ ও বানিজ্য সময়পর্ষদের অযাচিত ও অনৈতিক চাপে চাকরি ছেড়েছেন মেঘনা ব্যাংকের এমডি

পর্ষদের অযাচিত ও অনৈতিক চাপে চাকরি ছেড়েছেন মেঘনা ব্যাংকের এমডি

পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের টানাপোড়েন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে নতুন অনুমোদন পাওয়া মেঘনা ব্যাংকে। পর্ষদের অযাচিত ও অনৈতিক চাপের কারণে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কাইজার এ চৌধুরি চাকরি ইস্তফা দিয়ে চলে গেছেন। চাকরি ছাড়তে পারেন ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের আরও কিছু কর্মকর্তা। যদিও ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে কাইজার এ চৌধুরির নাম এখনও এমডি হিসেবে দেখানো হচ্ছে। মেঘনা ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ সূত্রে পরিচালনা পর্ষদ আর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর স্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ এমডির চাকরিতে ইস্তফা দেওয়া। বিষয়টি সম্পর্কে কয়েক দফা মেঘনা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এইচএন আশিকুর রহমানকে টেলিফোন করলেও তিনি ব্যস্ত আছেন অযুহাতে ফোন কেটে দেন।

সূত্র বলছে, মেঘনা ব্যাংকের লাইসেন্স পেয়েছেন মূলত সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আশিকুর রহমান। আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনের সময় এইচএন আশিকুর রহমান ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ছিলেন। তখন তিনি বেসরকারি ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন পরিচালক।

ব্যাংকের একজন উচ্চ পর্যায়ের সূত্র বলছে, প্রভাব বিস্তার করা আশিকুর রহমানের সাধারণ আচরণ। তিনি ব্যাংকের দৈনন্দিন কার্যক্রমেও হস্তক্ষেপ করে থাকেন। ব্যাংকের কোনো সিদ্ধান্ত স্বাধীনভাবে ব্যবস্থানা পর্ষদ নিতে পারে না। এমন পরিস্থিতিতে বেকায়দায় পড়ে এমডির পদ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে কাইজার এ চৌধুরিকে। আর এই অপেশাদার কাজে আশিকুর রহমানের সঙ্গে রয়েছেন ব্যাংকের আরেকজন পরিচালক।

সূত্র বলছে, আশিকুর রহমান ও তার ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আলিম খান সেলিমের সিদ্ধান্তের বাইরে কিছুই হয় না মেঘনা ব্যাংকে। জানা গেছে, কাইজার এ চৌধুরির ইস্তফার পর মেঘনা ব্যাংকের এমডি হিসেবে যোগ দিচ্ছেন অন্য একজন ব্যাংকার। যিনি বর্তমানে কোনো ব্যাংকে নেই। অতি সম্প্রতি তিনি অন্য একটি ব্যাংকের এমডি পদ থেকে অবসর নেন। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন ওই ব্যাংকার।

নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, কর্মী নিয়োগ, ঋণ প্রদান, আমানত সংগ্রহ, অফিস ভাড়া, কেনাকাটা, নিয়োগসহ সব ধরনের দৈনন্দিন কাজে চাপ দিয়ে যান আশিকুর রহমান। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, যে বড় উদ্দেশ্য নিয়ে নতুন ব্যাংকগুলোর লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিলো তা হচ্ছে না। মেঘনা ব্যাংক সে পথে চলছে না। সূত্র বলছে, মেঘনা ব্যাংকের পর্ষদ অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ করছে। এমন তথ্য রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছেও। তাই সম্প্রতি এক বৈঠকে সর্তকও করা হয়। ওই বৈঠকে চেয়ারম্যানদের উদ্দেশে গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ব্যাংক পরিচালনায় ব্যবস্থাপনা পর্ষদকে চাপ দেবেন না।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ