সোমবার, মে ২০, ২০২৪
প্রচ্ছদআরো খবর......খালেদা-তারেকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ সুরঞ্জিতের

খালেদা-তারেকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ সুরঞ্জিতের

ষ্টাফ  রিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। একইসঙ্গে তাদের দেওয়া বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক উল্লেখ করে এজন্য খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে বলেছেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ মিলনায়তনে চলমান রাজনীতি নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু একাডেমী’র আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আইন মন্ত্রণালয় নয়, আমি বলবো, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করতে হবে। যদি ক্রিমিনাল প্রসিডিউর অ্যাক্ট-এ কাজ না হয়, তাহলে, আইন মন্ত্রণালয় ছোট্ট একটি অধ্যাদেশ জারি করে এর নিষ্পত্তি করতে পারে।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিককালে সাবেক প্রধানমন্ত্রীপুত্র (তারেক রহমান) লন্ডন থেকে বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। ইতিহাস বিকৃতির জন্যই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এ বক্তব্য দিচ্ছেন। এটা এত বেশি উদ্বেগের বিষয় হতো না, যদি খালেদা জিয়া ও বিএনপি নেতারা একে সমর্থন না করতেন।

আওয়ামী লীগের এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, জাতীয় ইতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য তারা একের পর এক বক্তব্য দিচ্ছেন। আগে খালেদা জিয়ার গুণধরপুত্র (তারেক রহমান) দাবি করলেন, তার পিতা (প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান) দেশের স্বাধীনতার ঘোষক। এখন বঙ্গবন্ধুকে (শেখ মুজিবুর রহমান) অবৈধ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। এটি আপাতঃদৃষ্টিতে দেখলে মনে হয়, অর্ধশিক্ষিত রাজনৈতিক যুবকের বাচালতা। কেউ কেউ বলছেন অর্বাচীনতা। কিন্তু এটাকে এখনই সমূলে বিনাশ না করলে, এর ঢাল পালা মেলবে।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আমাদের সংবিধানে ইতিহাস বিকৃতির সুযোগ নেই। ৭ মার্চ এর ভাষণ সংবিধানের অংশ। স্বাধীতার ঘোষণাও সংবিধানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কেউ এর বিকৃতি করলে সেটা হবে রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। এর শাস্তি হবে সর্বোচ্চ শাস্তি। আমাদের সংবিধানের ৪ এর ‘ক’ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট বলা আছে, কে দেশের স্বাধীনতার ঘোষক। যারা স্বাধীনতার মৌল ইতিহাস ও মৌল তত্ত্বের উপর আঘাত করে তারা বাংলাদেশকে বিশ্বাস করে না। তাদের বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকার অধিকার নেই।

তারেকের কাছে প্রশ্ন রেখে সুরঞ্জিত বলেন, তিনি কি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পড়ে দেখেছেন? আইনসম্মতভাবে ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করেন। বিএনপিতে অনেক বিজ্ঞ ব্যক্তি আছেন। তারা এখন এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না। খুলতে পারবেনও না। এটা শুধু তারেক রহমানের বালখিল্যতা, অর্বাচীনতা বা মূর্খতা কিছুই নয়। পাকিস্তানের আইএসআই যা পড়িয়েছে তিনি তাই বলছেন। সুতরাং এটিকে স্বাভাবিকভাবে নিলে হবে না। যারা এ জাতীয় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করবে, এটাকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করতে হবে। সংবিধানে লেখা থাকবে, আর যে ইচ্ছা লঙ্ঘন করে যাবে, এটা হতে পারে না।

ফজলুল হক বনাম রাষ্ট্রের একটি মামলার কথা উল্লেখ করে সুরঞ্জিত বলেন, ওই মামলা সবশেষে সুপ্রিম কোর্টে গড়ায়। মামলার রায়ে বিচারপতি এ এস এম সায়েম ও মাহমুদ হাসান স্পষ্ট বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যা করেছেন সেটাই আইনসম্মত।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, যদি এটা মূর্খতাবশত হয়, তাহলে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। যদি তারা ক্ষমা চেয়ে বক্তব্য তুলে নেন, তাহলে সরকার একভাবে দেখবে। না হয়, মামলার মাধ্যমে এর নিষ্পত্তি হবে, এটাই বাঙালি জাতির প্রত্যাশা।

সুরঞ্জিতের প্রশ্ন, ৪৩ বছর পর সেদিনের একটি ছেলে ইতিহাস বিকৃতির সাহস কোথা থেকে পায়? ইতিহাস জানেন না, সংবিধানের ন্যূনতম জ্ঞান নেই। এটা রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষী যুবকের মূর্খতা মাত্র। এটি ভয়ংকর। সংগঠনের উপদেষ্টা ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য শিরিন নাঈম পুনম, সাম্যবাদী দলের নেতা হারুণ চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান প্রমুখ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ