শনিবার, মে ৪, ২০২৪
প্রচ্ছদইন্টারভিউচট্টগ্রামের তিন মন্ত্রীর ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

চট্টগ্রামের তিন মন্ত্রীর ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

চট্টগ্রামের তিন মন্ত্রীর ভবিষ্যতের পরিকল্পনা কী, উন্নয়ন ধারণা কেমন তাদের, কিভাবে সাজাতে চান নিজেদের মন্ত্রণালয় আর চট্টগ্রামের জন্য তারা কতটা আন্তরিক? শপথ নেওয়ার  পরে এসব নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন ।

03
সিঙ্গাপুরের মত বাংলাদেশ হবে শহররাষ্ট্র

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন
বয়স ৭২, সংসদ সদস্য, মিরসরাই
মন্ত্রী, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

সুপ্রভাত বাংলাদেশ : এক মেয়াদ পরে আবারও একই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হবেন-এটা কি প্রত্যাশা করেছিলেন?
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন : হ্যাঁ, আমি প্রত্যাশা করেছিলাম। মনে মনে আশা ছিল আমি এবার মন্ত্রী হবই। যেদিন মন্ত্রী হলাম সেদিন ছিল আমার ৭২তম জন্মদিন। শপথ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছিলাম আমার জন্মদিনে বড় ‘গিফট’ পেলাম আপনার কাছ থেকে। শুনে প্রধানমন্ত্রী হেসে বললেন, আপনাকে ‘সারপ্রাইজ’ দিলাম। আমার জীবনে এটা স্মৃতি হয়ে থাকবে।
সুপ্রভাত বাংলাদেশ : একই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন আগের অভিজ্ঞতা কিভাবে কাজে লাগাবেন?
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন : ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আমার মন্ত্রিত্ব থাকাকালীন সময়ে গৃহায়ন ও পূর্ত মন্ত্রণালয়ের আইন পাস করেছিলাম। আগের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবারে
আমরা গ্রামেগঞ্জে আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলবো। যাতে থাকবে সব ধরনের নাগরিক সুবিধা। যাতে গ্রামের মানুষ আর শহরমুখী না হয়। সিঙ্গাপুর যেমন পুরোটাই একটি শহররাষ্ট্র, সেখানে কোনো গ্রাম নেই। বাংলাদেশকেও একইভাবে শহররাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
সুপ্রভাত বাংলাদেশ : আপনার নিজের জেলা চট্টগ্রামের জন্য কি পরিকল্পনা করছেন?
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন : আমার মন্ত্রণালয়ের অধীন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এ পর্যন্ত সিডিএ যেসব প্রকল্প হাতে নিয়েছে সেগুলো দ্রুত শেষ করে আরো নতুন প্রকল্প হাতে নিতে চাই। চট্টগ্রামকে যানজটমুক্ত করার জন্য আরো নতুন ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। ঢাকার রমনার মত চট্টগ্রামে বড় কোনো পার্ক নেই। এখানে দুই একটি বড় ধরনের পার্ক গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
সুপ্রভাত বাংলাদেশ : পর্যটন শহর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিশেষ জোন গড়ার পরিকল্পনা এবার কি বাস্তব রূপ নেবে?
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন : এটি পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীন। আমার মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারে নেই। তারপরও যাতে এ ধরনের বিশেষ জোন গড়ে তোলা হয় সেটি সরকারের পলিসিতে অবশ্যই থাকবে।
চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য সিরিয়াসলি উদ্যোগ নেব

04
ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
বয়স ৬৫, সংসদ সদস্য, হাটহাজারী
মন্ত্রী, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়

সুপ্রভাত বাংলাদেশ : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ছিলেন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর আবারও একই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার কথা ভেবেছিলেন?
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ : এরকম কথাবার্তা তো চলছিল আওয়ামী লীগের সাথে। নতুন সরকারে আমাদের জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণের বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত ছিল।
সুপ্রভাত বাংলাদেশ : পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় নিয়ে অনেক অভিযোগ। টাকা খরচ হয় কিন্তু কাজ হয় না-এটি আবার চোখেও দেখা যায় না?
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ : আমি আগেও অর্থাৎ আশির দশকে এরশাদ সরকারের আমলে প্রায় তিন বছর এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছিলাম। আমার কাজের অভিজ্ঞতা আছে। এখন শুধু সিস্টেমটাকে গতিশীল করা। আমিও জোর দিতে চাই মন্ত্রণালয়ের কাজে।
সুপ্রভাত বাংলাদেশ : অনেক বছর পর আবার মন্ত্রী হলেন। চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য কী ভাবছেন?
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ : মন্ত্রিসভায় আমাদের সিনিয়র মোশাররফ ভাই আছেন। প্রতিমন্ত্রী জাবেদও আছেন। আছেন পুরো জেলার সংসদ সদস্যরা। তাদের সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে সরকারের কাছে প্রস্তাব তুলে ধরবো। চট্টগ্রামকে একটি কার্যকর আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলার সকল চেষ্টাই আমরা চালাব।
সুপ্রভাত বাংলাদেশ : ৯১ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সরকারের গত চার মেয়াদে অসংখ্য মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। সবাই একই আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ : এবার আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে চট্টগ্রামের উন্নয়নের বিষয়ে সিরিয়াসলি উদ্যোগ নেব। নিশ্চিতভাবেই সেটি দেখতে পাবেন আপনারা।

01
হয়রানি কমাতে অনলাইন সিস্টেম ভূমি অফিসে
সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ
বয়স ৪৫, সংসদ সদস্য আনোয়ারা-পশ্চিম পটিয়া
ভূমি প্রতিমন্ত্রী, ভূমি মন্ত্রণালয়

সুপ্রভাত বাংলাদেশ : নতুন মন্ত্রী হলেন কেমন লাগছে?
সাইফুজ্জামান চৌধুরী : আল্লাহর কাছে অশেষ শোকরিয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে তিনি আমার আস্থা রেখেছেন। আমিও চেষ্টা করবো সৎ থাকতে, কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা রাখতে। যাতে মন্ত্রী থাকা অবস্থায় কোনো বদনামের ভাগি না হয়।
সুপ্রভাত বাংলাদেশ : আপনি কি ভেবেছিলেন মন্ত্রী হবেন?
সাইফুজ্জামান চৌধুরী : মনে মনে তো আশা করেছিলাম। তবে মন্ত্রী হতেই হবে এমন কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না। এ মুহূর্তে আমার প্রয়াত বাবাকে (আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু) মনে পড়ছে। চট্টগ্রামের আনোয়ারায় গিয়ে বাবার কবর জেয়ারত করবো আর মাকে সালাম করবো।
সুপ্রভাত বাংলাদেশ : মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে কী কাজ করবেন প্রথমে?
সাইফুজ্জামান চৌধুরী : ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনেক দুর্নাম আছে। এখানে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার অভিযোগও প্রচুর। অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নের মাধ্যমে একটা বিপ্লব করার ইচ্ছা রয়েছে।
সুপ্রভাত বাংলাদেশ : চট্টগ্রামের জন্য আপনার কি পরিকল্পনা?
সাইফুজ্জামান চৌধুরী : দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে দেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রামের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবো।
সুপ্রভাত বাংলাদেশ : এ ধরনের সমন্বয় বা ঐক্যের জন্য সিনিয়রদেরই উদ্যোগ নিতে হয়। আপনি তো চট্টগ্রামের অন্য মন্ত্রীদের তুলনায় অনেক জুনিয়র বয়স মাত্র ৪৫ বছর।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী : কে জুনিয়র আর কে সিনিয়র এই নিয়ে চিন্তা করে পিছিয়ে পড়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই আমরা সবাই কাজ করবো। বয়স এ ক্ষেত্রে কোনো ফ্যাক্টর নয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ