বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪
প্রচ্ছদআরো খবর......চট্টগ্রামের ৯ বিজয়ীর মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পেলেন জাবেদ

চট্টগ্রামের ৯ বিজয়ীর মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পেলেন জাবেদ

চট্টগ্রাম অফিস (বিডি সময় ২৪ ডটকম)

ছিলেন ব্যবসায়ী নেতা। রাজনীতিতে এসে দু’জনেই সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছেন। এই দুই প্রার্থী হলেন এম আবদুল লতিফ ও সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। জাবেদ বাবার উত্তরসূরি হিসেবে উপ নির্বাচনে সহজ বিজয়ে সংসদে যান। তবে লতিফ গত নির্বাচনে নিজ যোগ্যতায় বিপুল ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়েছিলেন। আর এবার তিনি চট্টগ্রামের ৯ বিজয়ীর মধ্যে সবচেয়ে কম ভোট পেলেন, আর জাবেদ পেলেন সর্বোচ্চ।

এই দুই প্রার্থী চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি। দু’জনের মধ্যে এম আবদুল লতিফ চট্টগ্রাম-১১ (পতেঙ্গা-বন্দর) আসন থেকে এবং সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ চট্টগ্রাম-১৩ (আনেয়ারা-পশ্চিম পটিয়া) আসনে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হন। তবে ফলাফলের দিকে দু’জনের অবস’ান দুই মেরুতে। এ নির্বাচনে চট্টগ্রামে ৯ আসনের মধ্যে জাবেদ সর্বোচ্চ ভোট পেলেও লতিফ পেয়েছেন সর্বনিম্ন।

আনোয়ারা আসনের ২ লাখ ৭২ হাজার ৭৮৭ জন ভোটারের মধ্যে শতকরা প্রায় ৬৬ ভাগই রায় দিয়েছে জাবেদকে। চট্টগ্রাম জেলায় ৯টি আসনের মধ্যে এই আসনেই সর্বোচ্চ ৬৯ ভাগ ভোট কাস্ট হয়।

আর বিপরীত চিত্র লতিফের বন্দর-পতেঙ্গা আসনে। এ আসনের ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৯ ভোটের মধ্যে কাস্ট হয় মাত্র ৬৬ হাজার ৫৮৮ ভোট। যা মোট ভোটের শতকরা ১৩ দশমিক ৭ ভোট এবং চট্টগ্রামে ৯ আসনের মধ্যে এ আসনেই সর্বনিম্ন ভোট কাস্ট হয়। আর এর মধ্যে ১৩ দশমিক ২ ভাগ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন লতিফ।

বিজয়ী হয়ে দু’জনই সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার টিকিট পেলেও ফলাফলের দিকে দুই জনের অবস’ান দুই মেরুতে। তবে মাত্র ১ বছরের কম সময়ের মধ্যে দুইবার এমপি হওয়ার স্বাদ পেলেন জাবেদ। এর আগে ২০১১ সালের ৪ নভেম্বর আনোয়ারা আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু মারা গেলে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে ১৭ জানুয়ারি উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে আখতারুজ্জামানেরই পুত্র সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ১ লাখ ২৪ হাজার ৯৬৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। সেই নির্বাচনে বাবার উত্তরসূরি হয়ে সংসদে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা উঠে। তবে এবার জাবেদ সেই আলোচনার সমুচিত জবাব দিলেন চট্টগ্রামের বিজয়ীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে।

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে গতরাতে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘সব সময় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। এলাকার মানুষ আমাকে ভালোবেসেছে। তার চেয়েও বড় কথা হচ্ছে, আমার নেতাকর্মীরা অজস্র পরিশ্রম করেছে। মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচারণা চালিয়েছে। এ কারণেই ফলাফল ভালো হয়েছে।’

এদিকে এম আবদুল লতিফ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বন্দর-পতেঙ্গা আসনে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেছিলেন। স’ানীয় খেটে খাওয়া মানুষের সাথে তার সুসম্পর্ক, সারা বছর বিভিন্নভাবে তাদের সাহায্য সহযোগিতার কথাও শোনা যায় এই প্রার্থী সম্পর্কে। পাশাপাশি রাজনীতির বাইরেও বিভিন্ন ইস্যুতে শিরোনাম হয়ে আলোচনায় থাকেন এই প্রার্থী। এসব কারণে ২০০৮ এর নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিএনপির হেভিওয়েইট প্রার্থীকে পরাজিত করতে পেরেছিলেন এই প্রার্থী। এমন কথাই শোনা যায় রাজনৈতিক আলোচকদের মুখে। তবে এবার ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৯ ভোটের মধ্যে লতিফ পেয়েছেন মাত্র ৬৪ হাজার ৩২ ভোট। যা চট্টগ্রামের প্রার্থীদের মধ্যে পাওয়া সবচেয়ে কম ভোট।
এ বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানতে গতরাতে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি এম এ লতিফ। যদিও বেশিরভাগ কেন্দ্রে ভোটারদের উপসি’তি কম হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচনের দিন এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ওটা সামগ্রিক চিত্র নয়। অপরাপর কেন্দ্রগুলোতে বিপুল ভোটার স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
তবে নির্বাচনের দিন ওই আসনের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে মাঠপর্যায়ের রাজনৈতিক কর্মীদের মুখে শোনা যায়, নিশ্চিত জয়ের আশায় তিনি এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় তেমনটা গুরুত্ব দেননি। ভোটের দিনের জন্যও তিনি উল্লেখযোগ্য পরিকল্পনা নেন নি। ফলে ভোটাররা কেন্দ্রে আসছেন না। গত রোববার সন্ধ্যায় ভোট গণনা শেষে মাঠপর্যায়ের কর্মীদের কথাই সত্য হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ