মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়অবৈধ সরকারকেই র‌্যাব বিলুপ্ত করতে হবে : খালেদা জিয়া

অবৈধ সরকারকেই র‌্যাব বিলুপ্ত করতে হবে : খালেদা জিয়া

দেশব্যাপী খুন ও গুমের ঘটনায় সাবেক প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত কমিশন গঠনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলশানে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার নেতাকর্মীদের স্বজনদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে একথা বলেন তিনি।

খালেদা বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে বিশিষ্ট আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিশন গঠন করে সাম্প্রতিক খুন-গুমের ঘটনার বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি। র‌্যাব এর কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর মর্যাদা ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বর্তমান সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, এই অবৈধ সরকারকেই র‌্যাব বিলুপ্ত করতে হবে।

এছাড়া যে কোনো গ্রেফতারের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটকে সাক্ষী রাখার কথা বলেন তিনি। খালেদা বলেন, সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না।  রাতের আঁধারে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। করতে হলে সাক্ষী রেখে করতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশকে জানিয়ে আটক করতে হবে। এ অবস্থায় কেউ আহত বা নিহত হলে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, র‌্যাবের নীতি-নৈতিকতা ও নিয়মশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। র‌্যাবের কিছু সদস্য উচ্ছৃঙ্খল ও অপরাধে লিপ্ত। এই অবৈধ সরকারকেই র‌্যাব বিলুপ্ত করতে হবে। খালেদা বলেন, যে র‌্যাব মানুষের নিরাপত্তার জন্য করা হয়েছে, তারা আজ মূর্তিমান আতঙ্ক। তাই তাদের বিলুপ্তির দাবি উঠেছে। সরকারের সমালোচনা করে খালেদা বলেন, এমন সরকার সত্যিই বিপদজনক। এমন সরকার যত তাড়াতাড়ি বিদায় নেয়, ততই মঙ্গল।

সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি জানিয়ে খালেদা বলেন, অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের আহ্বান জানাই। দেশ থেকে আইনের শাসন উঠে গিয়ে জাতি হিসেবে বাংলাদেশের মানুষ পিছিয়ে গেছে ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ক্ষতিগ্রস্ত স্বজনদের প্রসঙ্গে খালেদা বলেন, প্রিয়জনের মৃতদেহের সৎকারের অধিকার থেকেও তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। কবর জিয়ারতও করতে পারবে না তারা। তাদের কী সান্ত্বনা দেব?

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মতবিনিময় অনুষ্ঠানে ক্ষতিগ্রস্ত ২২টি পরিবারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। যাদের পরিবারকে আমন্ত্রণ জানানো হয় তারা হলেন- এম ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, ইফতেখার আহমেদ দিনার, মো. জহির, সেলিম রেজা, আসাদুজ্জামান, সম্রাট মোল্লা, মাজহারুল ইসলাম রাসেল, পারভেজ হোসেন, চঞ্চল, আল-আমিন, খালেদ হোসেন সেলিম, সাজেদুল ইসলাম সুমন, আবদুল কাদের ভুইয়া মাসুম (তানভির), এ এম আদনান চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন মুন্না, কাউসার, মো. তরিকুল ইসলাম, মাহবুব হোসেন সুজন, কাজী ফরহাদ, তরিকুল ইসলাম তারা এবং মফিজুল ইসলাম রাশেদ।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম-মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ, আমান উল্লাহ আমান, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার অসীম, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সভাপতি আন্দালিব রহমান পার্থ, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান প্রমুখ। এছাড়া ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড পিয়াস করিম, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দিলারা বেগমও এ সময় বক্তব্য রাখেন।

উল্লেখ্য, দুপুরে রমনার ইন্সটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সে ক্ষতিগ্রস্ত স্বজনদের নিয়ে বিএনপির নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু পুলিশ বাধায় ওই সমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে গুলশানে চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ