শনিবার, মে ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়মেধা পাচার বন্ধে যুবকদের মেধা ও আবিস্কার মূল্যায়নে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন...

মেধা পাচার বন্ধে যুবকদের মেধা ও আবিস্কার মূল্যায়নে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি

ষ্টাফরিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

মেধা পাচার বন্ধে দেশের যুবকদের মেধা ও আবিস্কার মূল্যায়নে পদক্ষেপ নিতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘উদ্যোক্তা ও আবিস্কার প্রদর্শনী’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সারাদেশে ২ হাজার উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। তিনি বলেন, দতারা দেশে মেধার মূল্যায়ন না পেয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে।’ তিনি এ ধরনের মেধাবি তরুণদের আবিস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমে তাদের মেধার মূল্যায়নে এগিয়ে আসতে হবে।

রাষ্ট্রপতি আরও গতিশীল ও পেশাদার উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে একটি এনটারপ্রেনার্স ডেভলপমেন্ট ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, ‘আবিস্কারের নতুন ধারণাসমূহের অধিকাংশই আসে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবিস্কারের মাধ্যমে। তবে আমাদের দেশের শিক্ষক ও ছাত্ররা প্রয়োজনীয় স্পনসরশিপের অভাবে নতুন আবিস্কারে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করতে উৎসাহিত হন না।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক, তবে বাস্তবতা হলো দেশে উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং যথাযথ ব্যবসায়ী নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট শিক্ষা ক্যারিকুলাম গড়ে উঠেনি। তিনি নতুন এবং সফল উদ্যোক্তা গড়তে উদ্যোক্তামুখী একটি শিক্ষানীতি এবং শিক্ষা ক্যারিকুলাম প্রণয়নের আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, দেশে শিল্পায়ন সম্প্রসারণে তরুণদের মেধা ব্যবহার করা যেতে পারে। এ লক্ষে তিনি তাদেরকে উপযোগী করে গড়ে তুলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করতে শিক্ষা সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আমাদের বেকার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি এবং প্রতি বছর কয়েক লাখ যুবক চাকরির বাজারে প্রবেশ করছে। শুধুমাত্র চাকরির সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে এই বিপুলসংখ্যক বেকার তরুণের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

মূলধন যোগানদাতা (ভেনচার ক্যাপিটাল) বহু সংস্থা নতুন উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহযোগিতা দিতে সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রয়োজনীয় নীতিমালার ত্র“টির জন্য বাংলাদেশে এ ধরনের উদ্যোগ বিকশিত হতে পারছে না।

‘এখানে ইতোমধ্যেই কিছু যৌথ বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে শুনে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, ‘ভেনচার ক্যাপিটাল’ উদ্যোক্তা সৃষ্টির পাশাপাশি দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে ব্যাপক সফলতা নিয়ে আসবে।

রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, দেশে ‘ভেনচার ক্যাপিটাল অরগানিজেশন’ প্রসারে সরকার প্রয়োজনীয় নীতিমালা তৈরি করবে। তিনি বলেন, প্রতিটি উপজেলাতেই একটি করে ঐতিহ্যবাহী পণ্য খুঁজে পাওয়া সম্ভব। এ সকল পণ্য এবং ঐতিহ্যকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে ‘একটি উপজেলা একটি পণ্য’ এই ধারণা বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। এতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি সহজ হবে এবং বিশ্বে বাংলাদেশ নতুনভাবে পরিচিতি লাভ করবে।

রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বলেন, বিশ্বব্যাপী দুই দফা অর্থনৈতিক মন্দা, বৈশ্বিক তীব্র প্রতিযোগিতা এবং নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দেশের অর্থনীতি একটি স্থিতিশীল অবস্থানে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, এছাড়াও বাংলাদেশের সামনে আরও বিপুল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন ইতিবাচক দিকগুলোকে ব্রান্ডিংয়ের মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে হবে।

ডিসিসিআই’র উদ্যোগের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং বিশ্বের দরবারে দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করতে এ ধরনের উদ্যোগ অপরিহার্য। তিনি ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে সম্পৃক্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি বিভাগ ও অধিদফতর, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, দেশী-বিদেশী দূতাবাস, দাতা সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ঢাকা চেম্বারের উদ্যেক্তা তৈরির কাজে অংশগ্রহণ করে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই)’র সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, ডিসিসিআই’র সভাপতি মো. সবুর খান এবং আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আফতাব উল ইসলাম বক্তৃতা করেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ