শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়হরতাল প্রত্যাহার হলেই কেবল বিরোধী দলের সাথে আলোচনা হবে : প্রধানমন্ত্রী

হরতাল প্রত্যাহার হলেই কেবল বিরোধী দলের সাথে আলোচনা হবে : প্রধানমন্ত্রী

ষ্টাফরিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

হরতাল প্রত্যাহার হলেই কেবল বিরোধী দলের সাথে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।

১৯৭৫ সালের এই দিন কেন্দ্রীয় কারাগারে মুক্তিযুদ্ধের চার সংগঠনকে নির্মমভাবে হত্যার দিনটিতে এই জনসভার আয়োজন হলেও তা রূপ নেয় নির্বাচনী জনসভায়। আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকরা নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাদের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা নিয়ে যোগ দেয় জনসভায়। সমাবেশ চলাকালে ‘নৌকা’, ‘নৌকা’ স্লোগানে মাতিয়ে রাখে তারা।
জেএসসি পরীক্ষা চলাকালে হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বিরোধীদলীয় নেতাকে অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘২১ লক্ষ ছাত্র ছাত্রীর পরীক্ষা দেবে। তাদের কথা ভেবে আপনি হরতাল প্রত্যাহার করুন। তাদের মন আপনি ভেঙে দেবেন না’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে যেন কোনো বিতর্ক না হয়, সে জন্য তিনি সর্বদলীয় সরকার করার কথা বলেছিলেন। এ জন্য বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে ফোন করে সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর যেন বাংলাদেশে অসাংবিধানিক পন্থায় কেউ ক্ষমতায় আসতে না পারে, গণতান্ত্রিক ধারা যেন অব্যাহত থাকে, সে জন্যেই আমি প্রস্তাব দিয়েছিলাম, আসুন আমরা সর্বদলীয় সরকার গঠন করি যেন কোনো বিতর্ক না হয়। আমি ওনাকে বললাম, আপনি আসুন, কোন কোন মন্ত্রণালয় চান বলেন। কিন্তু ওনি আসলেন না, ওনি দিলেন হরতাল’।
আলোচনার সুযোগ এখনও শেষ হয়ে যায়নি জানিয়ে এর আগে হরতাল প্রত্যাহারের শর্ত দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আলোচনার পথ এখনও খোলা আছে। তবে আর আগে হরতাল প্রত্যাহার করতে হবে, ওয়াদা করতে হবে যে আর কোনোদিন আর হরতাল করবেন না’।
বিরোধীদলের হরতাল মোকাবেলায় নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘প্রতি এলাকায় সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি হয়েছে আগেই। এই কমিটির সদস্যদের, স্বাধীনতার পক্ষের সব নেতা-কর্মীকে বলবো, আপনাদের সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে’।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানা হবে না জানিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এসে দেশের অনেক ক্ষতি করেছে। ওই সরকার আসার জন্য বিএনপি দায়ী অভিযোগ করে তিনি বলেন, সে সময় বিএনপি এক কোটি ২২ লাখ ভূয়া ভোটার করেছিল, বিএনপির সাবেক নেতা কে এম হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করতে তাকে প্রধান বিচারপতি বানিয়েছিল।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ফখরুদ্দিন আহমেদকে বিশ্বব্যাংক থেকে এনে বিএনপি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং মইন উ আহমেদকে নয়জনকে ডিঙিয়ে সেনা প্রধান করেছিল জানিয়ে তিনি বলেন, অসৎ উদ্দেশ্য করতে গিয়ে তারা নিজেরাই ধরা খেয়েছে।
আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে-এমন নিশ্চয়তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন ভূয়া ভোটার নাই, ছবিসহ ভোটার তালিকা এবং স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স আছে’।
নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার মতামতের ভিত্তিতে সার্চ কমিটি করে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আলোচনায় বিএনপিও গিয়েছিল। তাদের অধীনে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি জিতেছে। এরপরও কীভাবে তারা বলে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না।
বিএনপি আন্দোলন করে কিছু করতে পারবে না মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ওনি বলেছিলেন আমার চুল উড়িয়ে দেবেন। আমি বলেছি, আমার চুল মাথায় আছে। যার পরচুলা তার চুলই উড়ে যাবে। আমি ধৈর্যে্যর পরিচয় দিয়েছি’।
বর্তমান সরকারের আমলে দেশে নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, আগামী নির্বাচনে জনগণ এর মূল্যায়ন করবে এবং আবার নৌকা মার্কায় ভোট দেবে। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বানচাল বিএনপির আন্দোলনের আসল লক্ষ্য দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, যত চেষ্টাই করুক, ৭১ এর অপরাধীদের বাঁচাতে পারবে না বিএনপি।
আরও পড়ুন

সর্বশেষ