একটা সময় ছিল যখন দেশে মেয়েদের খেলাধুলার খুব একটা সুযোগ ছিল না। বাধার দেয়াল ভেঙে সেই অদম্যরাই এখন বিশ্বের বুকে লাল-সবুজকে গর্বিত করছে। বুধবার (৯ নভেম্বর) নিজ কার্যালয়ে সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ছেলেরাও যা পারে না, মেয়েরা তার চেয়ে বেশি পারে। শুনলে হয়তো ছেলেরা রাগ করবে; তবে রাগ করার কিছু নেই। ছেলেদের প্রতিযোগিতাটাও একটু বেশি, তাও আমি বলব আমাদের মেয়েরা যথেষ্ট ভালো করছে।
উনিশ বছর পর মেয়েদের হাত ধরে ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব আসে বাংলাদেশে। নারী সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে সাবিনা-সানজিদারা। ক্রীড়াঙ্গনে মেয়েদের সাফল্যের ফিরিস্তি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালের অক্টোবরে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০২১ সালে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল টেস্ট স্ট্যাটাস (মর্যাদা) পেয়েছে। তাছাড়া নারী ক্রিকেট দল বিশ্বকাপের মঞ্চে পাকিস্তানকে পরাজিত করেছে। এসময় প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন ছেলেরা কিন্তু পারেনি, মেয়েরা পেরেছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বর সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ প্রতিযোগিতায় নারী ফুটবল দল চ্যাম্পিয়ন হয়। মেয়েদের এমন সাফল্যের পেছনে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ এবং দেশের বাইরে গিয়ে প্রশিক্ষণ বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, মেয়েরা দেশের বাইরে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেবে, এটা কেউ ভাবতেও পারেনি একটা সময়। কিন্তু আমরা সেটা ব্যবস্থা করেছি। আমি মনে করি, যত বেশি প্রশিক্ষণ তত বেশি উৎকর্ষ।
এদিকে, সন্তানদের খেলাধুলার প্রতি উৎসাহিত করতে অভিভাবকদের অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামে আগে অনেক খেলাধুলা ছিল। বিশেষ করে ঢাকার বাচ্চারা তো ফ্ল্যাটে থেকে ফার্মের মুরগির মতো হয়ে যাচ্ছে। খেলাধুলায় যায় না। এটা হলো বাস্তব কথা। এখনতো ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি, সারাক্ষণ হয় মোবাইল ফোন নয়তো ট্যাব নিয়ে বসে থাকে। কাজেই ফিজিক্যালি চর্চাটা হচ্ছে না। কিন্তু এটা খুবই দরকার। প্রত্যেকটা অভিভাবককে আমি অনুরোধ করবো, অন্তত কিছু সময়ের জন্য হলেও আপনারা আপনাদের বাচ্চাদের খেলাধুলার দিকে নিয়ে আসেন।
নিজের পরিবারের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, আমার পরিবারেও খেলাধুলা আছে। বিশেষ করে ফুটবল খেলার দিকে সবার ঝোঁকটা একটু বেশি। আমি অন্য স্পোর্টস পারি না; তবে একবার আমাদের স্কুলে যেমন খুশি তেমন সাজো সেজে প্রাইজ পেয়েছিলাম।