শনিবার, মে ৪, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়বিশ্ববাসীর কাছে আবেদন যুদ্ধটা বন্ধ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

বিশ্ববাসীর কাছে আবেদন যুদ্ধটা বন্ধ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

সারা বিশ্বের মানুষের কষ্টের কথা তুলে ধরে যুদ্ধ বন্ধ ও পাল্টাপাল্টি স্যাংশন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে পায়রা বন্দরের বেশ কয়েকটি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমার আবেদন থাকবে বিশ্ববাসীর কাছে যুদ্ধটা বন্ধ করতে হবে। স্যাংশন প্রত্যাহার করতে হবে। মানুষকে বাঁচার সুযোগ দিতে হবে। জীবন মান ধরে রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে। উন্নত বিশ্ব যারা যুদ্ধাংদেহি ভাব নিয়ে পথে নেমেছেন তাদের কাছে আমার এই আবেদনটা থাকলো। আমি চাই এ অস্থিরতা বন্ধ হোক। শান্তির সুবাতাস যেন বয়ে যেতে পারে, মানুষের জীবন মান উন্নত হতে পারে সেটাই আমরা চাই।

বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট ও সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু বাংলাদেশ না সারা বিশ্বে জ্বালানি সংকট চলছে। বাংলাদেশ এই সংকটের বাইরে নয়। একদিকে করোনাভাইরাস অতিমারির প্রভাব। এর মধ্যে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও স্যাংশন। আজকে সারা বিশ্বের সাধারণ মানুষগুলো ভুক্তভোগী, তারা কষ্টে আছে। কারা লাভবান হচ্ছে জানি না। হয়তো লাভবান হচ্ছেন যারা অস্ত্র ব্যবসা করেন, বা অস্ত্র বানান। কিন্তু সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। শুধু বাংলাদেশ না সারা বিশ্বব্যাপী মানুষ কষ্ট পাচ্ছে।

এর আগে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী পায়রা সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল, রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ড্রেজিং, ছয় লেনের সংযোগ সড়ক ও একটি সেতু নির্মাণ কাজে এবং আটটি জাহাজ উদ্বোধন করেন। এ সময় পায়রা বন্দর প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য শাজাহান খান ও পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।

আনুমানিক ৪ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ, ১০০-১২৫ মিটার-চওড়া এবং ১০ দশমিক ৫ মিটার-গভীর পায়রা সমুদ্রবন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ড্রেজিং করা হচ্ছে। এ চ্যানেল পায়রাবন্দরে ৪০ হাজার টন কার্গো বা ৩ হাজারটি কনটেইনার বোঝাই জাহাজ ডক করার সক্ষমতা তৈরি করবে। ড্রেজিংয়ের কাজ করবে বেলজিয়ামভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি জান ডি নুল।

উদ্বোধন করা আটটি জাহাজের মধ্যে রয়েছে দুটি পাইলট ভেসেল, দুটি হেভি ডিউটি স্পিডবোট, একটি বয় লেইং ভেসেল, একটি সার্ভে বোট এবং দুটি টাগবোট। পায়রা সমুদ্রবন্দরের জন্য ২০৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে এসব জাহাজ নির্মাণ করা হয়। এসব জাহাজ ও নৌযানগুলো বন্দর কর্তৃপক্ষকে বিদেশি জাহাজের আগমন ও প্রস্থান পর্যবেক্ষণ এবং চ্যানেল রক্ষণাবেক্ষণে কাজ করবে।

প্রথম টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৪ হাজার ৫১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর নির্মাণ কাজ শেষ হলে পায়রা সমুদ্র বন্দরে তিনটি বিদেশি জাহাজ একযোগে কন্টেইনার বা বাল্ক কার্গো ডক করতে পারবে। ৬ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ছয় লেনের সংযোগ সড়কটি নির্মাণ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। এতে ব্যয় হচ্ছে ৬৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা ৭৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে পায়রা সমুদ্রবন্দরের পণ্য পরিবহনের জন্য আন্ধারমানিক নদীর ওপর নির্মিত হবে ১ হাজার ১৮০ মিটার দীর্ঘ সেতু।

২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নে পায়রা বন্দরের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কন্টেইনার জাহাজ খালাসের মাধ্যমে সমুদ্র বন্দরটির অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ