শনিবার, মে ৪, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনবোমা নিষ্ক্রিয় করতে দুই কোটি টাকার ‘বম্ব স্যুট’ সিএমপিতে

বোমা নিষ্ক্রিয় করতে দুই কোটি টাকার ‘বম্ব স্যুট’ সিএমপিতে

চট্টগ্রাম অফিস (বিডি সময় ২৪ ডটকম)

বোমা নিষ্ক্রিয় করতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)-এর গোয়েন্দা বিভাগকে দুই কোটি টাকা দামের একটি পোশাক দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এটির নাম ‘বম্ব স্যুট’। গত ৭ অক্টোবর নগরীর লালখান বাজারে মুফতি ইজাহারুল ইসলামের মাদ্রাসায় গ্রেনেড নিষ্ক্রিয়কাজে এ পোশাকটি ব্যবহার করা হয়।
জানা গেছে, ওইদিন মাদ্রাসায় গ্রেনেড বিস্ফোরণের পর এ পোশাকটি পরেই বোমা নিষ্ক্রিয় করার দায়িত্ব পালন করেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের ‘বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট’র সদস্য এসআই সন্তোষ চাকমা। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, অ্যান্টি টেররিজম অ্যাসিস্ট্যান্স (্এটিএ) প্রোগ্রামের আওতায় অনুদান হিসেবে বাংলাদেশকে এ পোশাকটি দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বোমা নিষ্ক্রিয়কাজে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া পুলিশ সদস্যরা এটি ব্যবহার করতে পারেন।
নগর গোয়েন্দা পুলিশে বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের মোট সদস্য সংখ্যা পাঁচ। বম্ব স্যুট পোশাকটি পরে কীভাবে বোমা বা গ্রেনেড নিষ্ক্রিয় করা যায় সে বিষয়টির ওপর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের। এ ইউনিটের প্রধান এসআই সন্তোষ চাকমা সুপ্রভাতকে বলেন, ‘এটিএ প্রোগ্রামের আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এ পর্যন্ত দুই দফা প্রশিক্ষণ নিয়েছে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের পাঁচ সদস্য। সর্বশেষ প্রশিক্ষণ শেষে দলটি দেশে ফিরেছে গত এপ্রিল মাসে। এতে সব খরচ বহন করেছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।’
জানা গেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যরা হলেন মোহাম্মদ মহসিন (বাকলিয়া থানার ওসি), নেজাম উদ্দিন (ওসি তদন্ত, কোতোয়ালি থানা), সদীপ কুমার দাশ (সাবেক ওসি তদন্ত কোতোয়ালি থানা), সন্তোষ চাকমা (এসআই, নগর গোয়েন্দা পুলিশ) ও জোবায়ের সৈয়দ (এসআই, নগর বিশেষ শাখা)।
গোয়েন্দারা জানান, আর্জেস গ্রেনেড নিক্ষেপ করলেও বম্ব স্যুট পরিহিত ব্যক্তির কোনো ক্ষতি হবে না। তবে এর বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন গ্রেনেড বিস্ফোরণ হলে এ পোশাক পরিহিত ব্যক্তির প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বম্ব স্যুটটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সেনাবাহিনী বোমা বা মাইন নিষ্ক্রিয় করার কাজে ব্যবহার করে থাকেন। প্রায় ৫০ কেজি ওজনের বম্ব স্যুটে রয়েছে একটি ব্যালাস্টিক হেলমেট, অক্সিজেন উৎপাদনকারী একটি পাখা, একটি চার্জার।
গোয়েন্দারা জানান, বম্ব স্যুট পরে ঘটনাস্থলে সতর্কতার সাথে চলাফেরা করতে হয়। ওজন বেশি হওয়ায় সহজে চলাফেরা করা যায় না। ঘটনাস্থলে এ পোশাক পরে কায়দা করে ওঠাবসা করতে হয়। ব্যবহারকারী নিজে এটি পরতে পারেন না। আরেকজন এটি পরিয়ে দিতে হয়।
লালখান বাজার মাদ্রাসায় এ পোশাক ব্যবহারের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের প্রধান এসআই সন্তোষ চাকমা সুপ্রভাতকে বলেন, ‘বম্ব স্যুট পরে ওই দিন ঘটনাস্থলে যাই। খুব সতর্কতার সাথে সেদিন অবিস্ফোরিত অবস্থায় গ্রেনেড উদ্ধার করি। একইসঙ্গে বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জামও উদ্ধার করা হয়।
যুক্ত হচ্ছে রোবটনগর গোয়েন্দা পুলিশে এবার যুক্ত হচ্ছে রোবট। বোমা নিষ্ক্রিয় করার কাজে ব্যবহারের জন্য এটি আনা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ইতিমধ্যে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের জন্য একসেট রোবট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল সুপ্রভাতকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ফোর্স) মাহমুদা বেগম।
সূত্রটি জানায়, অ্যান্টি টেররিজম অ্যাসিস্ট্যান্স (এটিএ) প্রোগামের আওতায় অনুদান হিসেবে এ যন্ত্রটিও দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নগর গোয়েন্দা পুলিশের ‘বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট’-এর জন্য কয়েক সপ্তাহ আগে এ যন্ত্রটি শিপমেন্টও করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এটি চট্টগ্রামে পৌঁছবে।
গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করে বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট প্রধান নগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই সন্তোষ চাকমা বলেন, ‘বোমা নিষ্ক্রিয় করার কাজে কৃত্রিম এ যন্ত্রটি ব্যবহার করা হবে। ফলে বোমা নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে কোনো পুলিশ সদস্যের জীবনের ঝুঁকি আর থাকবে না।’ কমপিউটার প্রোগ্রামের মাধ্যমে এ যন্ত্রটি দিয়ে সম্ভাব্য স্থানে অভিযান পরিচালিত হবে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ