রবিবার, মে ১৯, ২০২৪
প্রচ্ছদটপসবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যেতে চাই : অলি আহমদ

সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যেতে চাই : অলি আহমদ

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ  বলেছেন, এখন একটাই দাবি- এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। জাতির এই সন্ধিক্ষণে মুক্তির জন্য আমরা একতাবদ্ধ হয়েছি। বহুদিন ধরে বিএনপি এককভাবে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। এখন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যেতে চাই। সোমবার রাতে অলি আহমদের মহাখালী ডিওএইচএসের বাসায় বিএনপির সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির পক্ষে সংলাপে অংশ নেন- মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটি সদস্য নজরুল ইসলাম খান। আর এলডিপি থেকে অলি আহমদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল আলম, ড. নেয়ামুল বসির, ড. আওরঙ্গ জেব বেলাল ও অ্যাডভোকেট মাহবুব মোর্শেদ। রাত ৮টা থেকে দেড় ঘণ্টাব্যাপী ওই বৈঠক হয়।

অলি আহমদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় সব দল বন্ধ করে একদলীয় শাসন বাকশাল করেছিল। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেন। সাংবাদিকদের কোনো অধিকার ছিল না, পত্রিকা বন্ধ ছিল সেগুলি খুলে দিয়েছিল রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। সংসদীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছিল  খালেদা জিয়া। তিনি শুধু বেগম খালেদা জিয়া নন, তিনি স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। সেনা প্রধানের স্ত্রী। তিনি নিজে তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এতগুলো গুণে গুণান্বিত। তাকে আজকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে জেলে আবদ্ধ রেখেছে। আমরা নিঃশর্তভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই।বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় যেসব নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে তাদের মামলা প্রত্যাহার চাই।

তিনি আরও বলেন, মানুষ সুশাসন পাচ্ছে না, ন্যায় বিচার পাচ্ছে না। ন্যায় বিচার দিতে হবে। আজকে যে মানবতাবিরোধী অপরাধ হচ্ছে এগুলো থেকে মুক্ত হতে বিএনপিকে নেতৃত্ব দিতে হবে। এই নেতৃত্ব ছাড়া এখানে গণতন্ত্র ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনা নাই। বিএনপি ইতোমধ্যে স্পষ্ট ভাষায় বলেছে এই সরকারের আওতায় কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। অতীতে যেকোনো সময় আমরা ভুল করেছি, যার কারণে আমাদের খেসারত দিতে হচ্ছে। এবার আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই সরকারের পদত্যাগ চাই। সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা দ্বিতীয় দফার সংলাপে গণআন্দোলনের দফা নির্ধারণ করার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। এই সরকারের পদত্যাগ, পদত্যাগ করে সংসদ বাতিল করতে হবে। একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে তাদেরকে ক্ষমতা হস্তান্তর করে একটা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের পর তার অধীনে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়াসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তির বিষয়ে একমত হয়েছি। এই দাবিগুলোতে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করবো।

মির্জা ফখরুল বলেন, এবারের আলোচনায় আন্দোলনের যে দাবিসমূহ, যে দফা রয়েছে সেসব নিয়ে ঐক্যমত পোষণ করা হয়েছে। অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গেও বৈঠক করে অভিন্ন দাবি আদায়ে ঐকমত্য হয়ে তা জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হবে। সেই দাবিগুলোকে নিয়ে আন্দোলন শুরু হবে।

এর আগে সকালে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সঙ্গে সংলাপ করে বিএনপি। এতে দলটির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে  ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেন।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, প্রেসিডিয়াম সদস্য নওয়াব আলী আব্বাস, মাওলানা রুহুল আমীন, সেলিম মাস্টার, কেন্দ্রীয় নেতা হান্নান আহমেদ খান, এএসএম শামীম, কাজী মো. নজরুল ও গোলাম মোস্তফা। বিএনপির পক্ষে অংশ নেন – মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও  স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

সংলাপ শেষে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, এ টু জেড সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করা। আমরা সেই পথে অনেকখানি অগ্রসর হয়েছি। আওয়ামী লীগবিরোধী সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় সফলকাম হয়েছি। বিশ্বাস করি, আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ এই সংগ্রাম জয়যুক্ত হবেই।

গত রোববার ২০-দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সঙ্গে সংলাপের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দফা সংলাপ শুরু করে বিএনপি। এর আগে প্রথম দফায় সরকার বিরোধী ২২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে দলটি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ