বৃহস্পতিবার, মে ১৬, ২০২৪
প্রচ্ছদইন্টারভিউকঠোর নিরাপত্তা জালে রাজধানী

কঠোর নিরাপত্তা জালে রাজধানী

ষ্টাফরিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

রোববার ভোর থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা ৬০ ঘন্টার হরতালে রাজধানীতে কঠোর নিরাপত্তা জাল তৈরি করছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। বিগত দিনের মতো এবারও মহানগরীতে হরতালের সমর্থনে কোন ধরনের বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ড চালাতে দেয়া হবে না। এরই মধ্যে হরতালের জন্য গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যক্রম শেষ হয়েছে। শনিবার দুপুরের পর থেকে প্রতিটি এলাকায় বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

হরতালকে সামনে রেখে রাজধানী থাকছে চার স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী। মাঠে নামছে পোশাক ও সাদা পোশাকের প্রায় ২০ হাজার পুলিশ। এছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তায় থাকছে ৪ প্লাটুন বিজিবি সদস্য। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এলাকায় নামানো হচ্ছে অন্তত ৩৫টি স্থির ও ভিডিও ক্যামেরা। হরতাল চলাকালে পুরো মহানগরী জুড়ে তৎপর থাকবে প্রায় ২০ হাজার স্ট্রাইকিং, পেট্রোল ও  মোবাইল ফোর্স আর শক্তিশালী গোয়েন্দা ইউনিট।

শুক্রবার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ৩ দিনের হরতালের ঘোষণা দেয়ার পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএমপি’র এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা  জানিয়েছেন, ডিএমপি কমিশনারের পক্ষ থেকে মহানগরীর প্রতিটি জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি), সহকারী কমিশনার (এসি) ও ৪৯ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, হরতালের দিন বিএনপির প্রধান কার্যালয়, পল্টন মোড়, মুক্তাঙ্গন, শাহবাগ, মতিঝিল, শেয়ারবাজার এলাকা, মিরপুর ১, ২, ১০ নম্বর গোলচত্বর, মহাখালী, ওয়্যারলেস গেট, গাবতলি, যাত্রাবাড়ী, ফার্মগেট ও মগবাজারসহ প্রায় ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থির ও ভিডিও ক্যামেরা থাকবে।

একজন করে উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রতিটি স্থানে বিষয়টি তদারক করবেন বলেও জানান তিনি।  অপর এক সূত্র জানায়, হরতালের জন্য গৃহীত নিরাপত্তা কার্যক্রম শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই শুরু হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। মোটর সাইকেল, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে চালানো হচ্ছে তল্লাশি। প্রতিটি থানা এলাকায় সন্দেহভাজনদের উপর নজরদারী করছে পুলিশ।

সূত্র আরো জানায়, হরতালে ব্যবহারের জন্য তুরস্ক থেকে কেনা ডিএমপি’র ১২টি আর্মড পারসোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) ও জলকামান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।  হরতালে  যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে এগুলো ব্যবহার করা হবে। এদিকে হরতালে নাশকতা ঠেকাতে পুরো মহানগরীকে আনা হয়েছে সবোর্চ্চ গোয়েন্দা নজরদারীর আওতায়। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) সম্মিলিতভাবে এ গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

ডিবির এক কর্মকর্তা জানান, হরতালের দিন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সাদা পোশাকে বিভিন্ন স্থানে ভিডিও ক্যামেরা নিয়ে টহল দিবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, হরতালকে কেন্দ্র করে নয়া পল্টনের বিএনপি কার্যালয়, মগবাজারের জামায়াতের কার্যালয়, পুরানা পল্টনের মহানগর জামায়াত ও ছাত্র শিবিরের কার্যালয়ে ইতোমধ্যেই গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়েছে।

বিএনপি ও জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতার গতিবিধি ও তাদের দলীয় কার্যালয়ে আসা মানুষের উপর নজর রাখা হচ্ছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এসব এলাকায় নিয়মিত টহল দিচ্ছেন বলেও জানান তিনি। শনিবার দুপুরের পর থেকে প্রতিটি এলাকায় এ উপলক্ষে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে।

হরতালে ঢাকা মহানগরীর পুলিশি তৎপরতার ব্যাপারে ডিএমপি’র মুখপাত্র ও ডিবির যুগ্ম-কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম জানান, হরতালে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা বরদাশত করা হবে না।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ