রবিবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনটিসিবির ট্রাক সেল কার্যক্রম নাগরিক পরীবিক্ষনের আওতায় আনার দাবি-ক্যাব চট্টগ্রাম

টিসিবির ট্রাক সেল কার্যক্রম নাগরিক পরীবিক্ষনের আওতায় আনার দাবি-ক্যাব চট্টগ্রাম

নিত্যপণ্যমূল্যের সীমাহীন উর্ধ্বগতিতে নিরুপায় হয়ে সাধারণ মানুষ টিসিবির ট্রাকে ভিড় জমাচ্ছে। সরকার নিত্যপণ্যের বাজারে ক্রয় ক্ষমতা হারিয়ে ফেলা সমাজের অসহায় মানুষগুলোকে সহায়তা প্রদানে কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদান করে টিসিবি কার্যক্রম পরিচালনা করলেও নজরদারির দুর্বলতার কারনে যুগান্তকারী এই উদ্যোগের সুফল সাধারণ জনগন পাচ্ছে না। আর ট্রাক সেল বাড়ানোর দাবি বিভিন্ন মহল থেকে করা হলেও টিসিবির ট্রাক সেলকে নাগরিক পরিবীক্ষনের আওতায় আনার দাবি করেছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম নেতৃবৃন্দ।

১৪ ফেব্রæয়ারি ২০২২ইং চট্টগ্রামে টিসিবির লাইনে দীর্ঘ অপেক্ষার পর অনেকে ফিরে যাওয়া, টিসিবির পণ্য সাধারণ দোকানে বিক্রিসহ ট্রাক সেলে নানা অব্যবস্থাপনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক ডাঃ মেজবাহ উদ্দীন তুহিন, তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি চৌধুরী কে এনএম রিয়াদ ও সম্পাদক নিপা দাস উপরোক্ত দাবি জানান।

বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, সংকটকালীন সময়ে টিসিবির ট্রাক এখন সাধারন মানুষের ভরসার অন্যতম স্থলে পরিনত হলেও প্রতিটি ট্রাকে কি পরিমান পণ্য থাকছে, কতজনকে বিক্রি করা যাবে, তার কোন নজরদারি টিসিবি বা সরকারের অন্যকোন কর্তৃপক্ষ থেকে করা হচ্ছে না। ফলে টিসিবির ডিলার তার ইচ্ছামতো বিক্রি করছে। ফলে লাইনে দাড়ানো সিংহভাগ মানুষই শেষ পর্যন্ত পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফিরেন। অনেক জায়গায় হাতাহাতি ও চুলাচুলির ঘটনাও ঘটছে। এ অবস্থায় টিবিবির ট্রাক সেল কার্যক্রমটি নাগরিক পরিবীক্ষনের আওতায় আনা দরকার। যেখানে ভোক্তাদের প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি রাখা দরকার।

বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ক্যাব থেকে দীর্ঘদিন যাবত চট্টগ্রামে ট্রাক সেলের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি করা হলেও টিসিবি সে বিষয়ে কর্নপাত করেনি। চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী হলোও ঢাকায় ১০০টি ট্রাক সেল হলে চট্টগ্রামে আনুপাতিক হারে ৫০টি হওয়া দরকার। দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর, শিল্প ও বানিজ্যিক নগরী হবার কারনে চট্টগ্রামে শ্রমিক ও নিন্মআয়ের বিপুল পরিমান লোক বসবাস করেন। সম্প্রতি ভোজ্যতেলসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে এসব পণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তাই মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে সীমিত ও নিম্ন আয়ের মানুষ টিসিবির ট্রাক সেলের ওপর অধিক নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্যের জন্য স্বস্তির ঠিকানা হয়েছে টিসিবি। টিসিবির পণ্য ক্রয়ের মাধ্যমে তারা জীবনযাত্রার ব্যয়কে কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পারছে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, জনসংখ্যা ও নিন্মআয়ের ঘনত্ব বিবেচনায় চট্টগ্রাম নগরীতে ১৭টি স্থানে ট্রাক সেল কার্যক্রম প্রয়োজনের তুলনায় একবারেই অপ্রতুল। অনেক স্থানে ডিলাররা ট্রাকে পণ্য বিক্রি না করে বাইরে খোলা বাজারে বিক্রির ঘটনা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। আবার অনেকে বরাদ্দকৃত পণ্যের চেয়ে কম পণ্য বিক্রির অভিযোগ উঠছে। জেলা প্রশাসন বা স্থানীয় সরকার কোন পক্ষ থেকে ট্রাক সেলের কার্যক্রমটি মনিটরিং করা হচ্ছে না। ফলে ডিলাররা তাদের ইচ্ছানুসারে পণ্য বিক্রি করছে। ট্রাক সেল প্রতিদিন সকাল দশটার মধ্যে শুরু করার কথা থাকলেও অনেক জায়গায় দুপুর গড়িয়ে যায়। ফলে নগরীর সবকটি ট্রাক সেল পয়েন্টে ক্রেতাদের দীর্ঘলাইনের সৃষ্টি হচ্ছে। এসব পণ্য ক্রয় করতে ভোক্তাদেরকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আবার দেখা যায় যে বিক্রিকৃত পণ্য প্যাকেট করার নামে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। অথচ পণ্যগুলো বিক্রয়ের আগে প্যাকেট করে রাখলে জনগনের এ ভোগান্তি হতো না। আবার পণ্য শেষ হওয়ার কথা বলে বিক্রয় কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে করে ক্রেতারা ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও কাংখিত পণ্য পাচ্ছেন না ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ