মঙ্গলবার, মে ১৪, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনচট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক নগরী হিসেব গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী

চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক নগরী হিসেব গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী

চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক নগরী হিসেব গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  তিনি বলেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, পরিবেশ দূষণ রোধ, পরিকল্পিত নগরায়নসহ নাগরিক সুযোগ সুবিধা সম্প্রসারণে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি আমরা।  ভৌগলিক অবস্থানের কারণে নৈসর্গিক এলাকা চট্টগ্রাম। এশিয়ান হাইওয়ের জন্য এটি দেশের খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্থান। আমরা চাই চট্টগ্রাম সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ে উঠবে। যাতে চট্টগ্রামের সুনাম বজায় থাকে।  প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আমি যতোবার চট্টগ্রাম এসেছি ততোবার টুঙ্গি পাড়ায়ও যাইনি।

 শনিবার দুপুরে জাতীয় মসজিদ জমিয়াতুল ফালাহ ময়দানে সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  এর আগে শনিবার সকাল স‍াড়ে ১১টার দিকে জাতীয় মসজিদ জমিয়াতুল ফালাহ ময়দানে ফলক উন্মোচন করে চট্টগ্রামের ৩২টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

সকাল পৌনে ১১টার দিকে চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো নির্মিত বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার উদ্বোধন করেন।  সেখান থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে নির্মিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ সম্বলিত মুক্তিযুদ্ধের টেরাকোটা ম্যুরালের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী।

চট্টগ্রামের উন্নয়নে সরকার আন্তরিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে আমরা কাজ করেছি। ফলে এটি এখন আন্তর্জাতিম মানের বন্দর হয়েছে।

রেললাইন নির্মাণের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বাড়ানো হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরাই চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরে পরিণত করেছি।  গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের ইচ্ছা রয়েছে বলে জানান প্রধানন্ত্রী।  তিনি বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হচ্ছে।

 কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ সৈকত উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নত পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের উন্নয়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

 আগামীর বাংলাদেশ যাতে উন্নত ও সমৃদ্ধ হয় সেই লক্ষ্য নিয়েই উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছি। আর এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন উল্লেখ তিনি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র বিজয়ের পর ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গেও বাংলাদেশ বিজয় লাভ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

চট্টগ্রামের উন্নয়ন মহিউদ্দিনের হাতেই শুরু:

আওয়ামী লীগ সরকারই চট্টগ্রামের উন্নয়ন শুরু করেছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে চট্টগ্রাম অবহেলিত ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে চট্টগ্রামকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। তিনি বলেন, অতীতে চট্টগ্রামে তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। আমি ছোট কাল থেকেই চট্টগ্রামে আসি। তখন দেখেছি এখানকার রাস্তাঘাটের কি অবস্থা ছিল। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই চট্টগ্রামের চেহারা ‍পাল্টে যেতে শুরু করে।

 চট্টগ্রামের উন্নয়নের অংশ হিসেবে প্রথমবার সরকারে থাকার সময় মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের কাজ শুরু করলেও বিএনপি-জামায়াত সরকার এটি বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী হজব্রত পালন করতে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন।

আয় বেড়েছে:

বিশ্বমন্দা সত্ত্বেও ১৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার রিজার্ভ বেড়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়ে ১ হাজার ৪৪ডলারে দাড়িয়েছে। বিনিয়োগ বেড়েছে। দারিদ্র সীমা নিচে নেমেছে। খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।

 সরকার বিভিন্নভাবে আর্থ সামাজিক উন্নয়ন করে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আশ্রয়হীন, ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণ করে দেয়ার কাজ শুরু করেছি আমরা। ভূমিহীনদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করছি।

 তিনি বলেন,২০২১ সালে যাতে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত দেশ উপহার দিতে পারি সে লক্ষ্যে পরিকল্পনা করে কাজ করে যাচ্ছি। যাতে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ মর্যাদার আসনে আসতে পারে।  ‘২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করা হবে।’

আরও পড়ুন

সর্বশেষ