শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনবাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা এক অনবদ্য ইতিহাস : আ জ ম নাছির

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা এক অনবদ্য ইতিহাস : আ জ ম নাছির

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাশ। ঢাকায় হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর চট্টগ্রামে এসে সোমবার (১৭ জুন) সকালে চসিক মেয়রের দপ্তরে সাক্ষাৎ করেন এ কূটনীতিক।

মেয়র রিভা গাঙ্গুলি দাশকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা এক অনবদ্য ইতিহাস। সমগ্র ভারতবাসী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তথা ভারত সরকার এবং বিএসএফ ও ভারতীয় সৈন্যদের সাহায্য-সহযোগিতা এবং আত্মত্যাগের সফল পরিণতি বাংলাদেশ। সে সময়ে ভারত বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছিল।  বাংলাদেশের জন্য ভারতবাসীর এতটা ত্যাগ ও ভালোবাসা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল ঘটনা।

ভারতীয় হাইকমিশনার চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা সম্পর্কে জানসৌজন্য সাক্ষাৎকালে ভারতীয় হাই কমিশনারকে ক্রেস্ট উপহার দেন সিটি মেয়র।তে চাইলে সিটি মেয়র বলেন, বিগত ১০ বছরে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী নিজেই উদ্যোগী হয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রামের উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছেন। বন্দরের সক্ষমতা আরো বৃদ্ধির জন্য বে-টার্মিনাল, কন্টেইনার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে বর্তমানে বন্দরের যে সক্ষমতা আছে, তা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে।

মেয়র বলেন, প্রতিনিয়ত ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার পরিবহন চট্টগ্রাম বন্দরে যাওয়া-আসা করে। চট্টগ্রাম পোর্ট কানেকটিং রোড বন্দরে প্রবেশের একমাত্র মাধ্যম হলেও অতীতে পরিকল্পিতভাবে সড়কটি নির্মাণ করা হয়নি। বর্তমানে জাইকার অর্থায়নে সড়কটি  নির্মাণ করা হচ্ছে। মেয়র বর্তমান সরকারের নেয়া প্রকল্প মাতারবাড়ী ডিপ সি-পোর্ট, মিরাসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন টানেলসহ চট্টগ্রাম অঞ্চলে চলমান উন্নয়ন সম্পর্কিত বিষয়াদি নিয়েও আলোচনা করেন।

রিভা গাঙ্গুলি দাশ চট্টগ্রাম নগরকে গ্রীন ও ক্লিন সিটিতে রূপান্তরের জন্য সিটি মেয়রকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন,  সম্ভাবনাময় এই চট্টগ্রাম উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আমি এই শহরে অনেকবার এসেছি, কিন্তু এরকম সৌন্দর্যমণ্ডিত শহর দেখিনি। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এগিয়ে যাক, ভারত সরকারও তা চায়। ভারতের সহযোগিতা আগামিতেও অব্যাহত থাকবে এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে থাকতে ভারত অঙ্গীকারবদ্ধ।

বাংলাদেশকে ভারত সবসময় বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র হিসেবেই দেখে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দু’দেশের জনগণের মধ্যেও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বহুমুখি ব্যবহারের মাধ্যমে সেভেন সিস্টারসহ দু’দেশের জনগণের আর্থিক উন্নতি সম্ভব।

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর শুধু বাংলাদেশের নয়, পুরো অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। চট্টগ্রাম বন্দরের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে এ অঞ্চলে শ্রমবাজার, কর্মসংস্থান, পুঁজি বিনিয়োগ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং দু’দেশের জনগণের আর্থিক উন্নতি ঘটবে।

ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, দুই দেশের বন্ধুত্বের  নিদর্শন হিসেবে নমনীয় ঋণ চুক্তির আওতায় চট্টগ্রামে এলইডি প্রকল্প উপহার দিয়েছে ভারত সরকার। এটা ভারত সরকারের গ্রাউন্ড ওয়ার্ক। শুধুমাত্র ঘর-গৃহস্থালির কাজে নয়, এলইডি বাল্বের সাহায্যে আলোকিত হবে নগরের ৪১টি ওয়ার্ডের পথ-ঘাটও। দিনের যে সময়টিতে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে, সেই সময় এলইডি বাতি কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এতে বিদ্যুতের সাশ্রয় হবে। জ্বালানী সাশ্রয়ী এলইডি বাল্বের সাহায্যে অতিরিক্ত উৎপাদন খরচ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব এবং পরিবেশ রক্ষায়ও সহায়ক হবে।

তিনি এলইডি প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, শিগগির এই প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হবে।

সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন ভারতের সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জি, কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম ও প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ একেএম রেজাউল করিম।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ