সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪
প্রচ্ছদটপনুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল রিমান্ডে

নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল রিমান্ডে

ফেনীর আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহার রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার বরখাস্তকৃত প্রিন্সিপাল সিরাজ উদ দৌলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত। বুধবার জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সরফ উদ্দিনের আদালতে হাজির করলে বিচারক প্রিন্সিপালকে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে গণমাধ্যমকে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) সোনাগাজী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন।

তদন্ত কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘এ ছাড়া মাদ্রাসার শিক্ষক আফছার উদ্দিন ও মাদ্রাসার ছাত্র আরিফকেও আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হয়। প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত প্রিন্সিপালের সাত দিন এবং বাকি দুজনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত। এ সময় তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করেছে—এক ছাত্রীর এমন সংবাদে ভবনের চারতলায় যান তিনি। সেখানে বোরকা পরা চার-পাঁচ ছাত্রী তাঁকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে আনা শ্লীলতাহানির মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। এতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁর গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

এ ঘটনায় নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান সোমবার রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সম্পূরক এজাহার দাখিল করেছেন। এর আগে নুসরাতের মা বাদী হয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ তাঁকে ২৭ মার্চ গ্রেপ্তার করে। তিনি এ মামলায় কারাগারে রয়েছেন।

শনিবার ঘটনার পর পরই রোববার রাতে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক আফসার  উদ্দিন ও আলিম পরীক্ষার্থী আরিফকে আটক করা হয়। তখন এ ঘটনায় মামলা না হওয়ার কারণে পুলিশ দুজনকে পরদিন সোমবার ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠয়। আদালত তাদের জেলহাজাতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় বলে গণমাধ্যমকে জানান মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পি কে এম এনামুল করিম।

সোমবার এ ঘটনায় আরো সাতজনকে আটক করে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার তাঁদের সবাইকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত এর মধ্যে চারজনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাঁরা হলেন আলাউদ্দিন, কেফায়েত উল্লা, নুর হোসেন ও শহীদুল ইসলাম। বাকি তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মামলার এজাহারে নাম থাকা জোবায়েরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর আজ বুধবার সকালে পপি নামে আরেক মাদ্রাসাছাত্রীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পপি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার শ্যালিকার মেয়ে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক কামালা হোসেন জানিয়েছেন, জোবায়ের ও পপিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যও সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে। নুসরাত এবার সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা থেকে আলিম (এইচএসসি সমমান) পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তিনি সোনাগাজীর উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের মাওলানা এ কে এম মুসা মানিকের মেয়ে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ