সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়জনগণের দোরগোড়ায় স্বল্প খরচে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার

জনগণের দোরগোড়ায় স্বল্প খরচে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার

জনগণের দোরগোড়ায় স্বল্প খরচে মানসম্মত  স্বাস্থ্যসেবা  পৌঁছে দেয়ার বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, গত দশ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাস্থ্য সেক্টরে প্রশংসনীয় সফলতা এসেছে। সফলতার এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার পাশাপাশি দেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রতিষ্ঠার বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হবে।

মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত মন্ত্রণালয়ের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জি এম সালেহ উদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান, নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তন্দ্র শিকদার, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায় প্রমুখ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরসমূহের কর্মকর্তা কর্মচারীরা নতুন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করেন।

বিগত সংসদ নির্বাচনে ঘোষিত আওয়ামী লীগের ইশতেহার অনুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি করে কিডনি  ও ক্যান্সার হাসপাতাল স্থাপন করার ঘোষণা দিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, দেশে অসংক্রামক রোগ বিশেষ করে কিডনি ও ক্যান্সার রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এসব রোগের চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। দেশের সর্বত্র এই সব রোগের চিকিৎসাসেবা প্রদানের পর্যাপ্ত অবকাঠামো নেই। জেলা পর্যারের হাসপাতালগুলোতে ক্যান্সার ও কিডনি ইউনিট স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

সরকারি হাসপাতালগুলোতে পূর্ণাঙ্গ জরুরি বিভাগ স্থাপন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি সরকারি বিবেচনায় রয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে পূর্ণাঙ্গ জরুরি বিভাগ স্থাপিত হলে অনেক মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ বাঁচানোর সম্ভাবনা বাড়বে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে যন্ত্রপাতিসমূহের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে বলে জানান জাহিদ মালেক।

গত দশ বছরে স্বাস্থ্য সেক্টরের উন্নয়নের খন্ডচিত্র তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, গত দশ বছরে ব্যাপক সফলতার মুখ দেখেছে স্বাস্থ্য সেক্টর।  দেশে রোগী শয্যার সংখ্যা ২৭ হাজার থেকে বেড়ে ৪২ হাজার হয়েছে। একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হয়েছে চারটি। নতুন ২২টি মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়েছে। চারটি নার্সিং ইনস্টিটিউট থেকে বেড়ে হয়েছে ১৮টি। শিশুদের টিকাদান কর্মসূচির সাফল্যের জন্য এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম আদর্শ রাষ্ট্র হিসেবে তার স্থান করে নিয়েছে। প্রায় ৯১.৩ শতাংশ শিশুকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। পোলিও এবং ধনুস্টংকারমুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্যখাতকে যুগোপযোগী করতে প্রণয়ন করা হয়েছে “জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিমালা-২০১১”। তৃণমূল পর্যায়ের দরিদ্র মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে গড়ে তোলা হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক। ৩১২টি উপজেলা হাসপাতালকে উন্নীত করা হয়েছে ৫০ শয্যায়।  মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার এবং জন্মহার হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বর্তমানে প্রতি মাসে ৮০ থেকে ৯০ লাখ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা নেন। স্বাস্থ্য সেক্টরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে দেশে অত্যাধুনিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

জনগণের দোরগোড়ায় স্বল্প খরচে মানসম্মত  স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করে নতুন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে গত দশ বছরে স্বাস্থ্য সেক্টরে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ চিহিৃত করে সকলকে নিয়ে তা মোকাবেলা করা হবে। এ লক্ষ্যে তিনি মাঠ পর্যায় থেকে শুরু করে রাজধানীসহ সর্বস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ