সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪
প্রচ্ছদঅর্থ ও বানিজ্য সময়গ্রাহকের কাছে ক্ষমা চেয়ে সুদ কমালো উত্তরা ব্যাংক

গ্রাহকের কাছে ক্ষমা চেয়ে সুদ কমালো উত্তরা ব্যাংক

সুদের হার বাড়ানোর কারণ দেখিয়ে এক গ্রাহকের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৩৩ টাকা ৩৫ পয়সা দাবি করে উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড। কিন্তু গ্রাহকের আবেদনের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় শেষ পর্যন্ত ওই গ্রাহকের কাছে ক্ষমা চেয়েছে ব্যাংকটি। এমনকি অতিরিক্ত সুদও মওকুফ করতে বাধ্য হয়েছে বেসরকারি খাতের এই ব্যাংক। ঘটনাটি ঘটেছে ব্যাংকের রাজধানীর পোস্তগোলা শাখায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ২৫ লাখ টাকা বাড়ি নির্মাণের ঋণ নিয়েছিলেন নুরুল ইসলাম শেখ। ৮ বছর মেয়াদে প্রতিমাসে ৪১ হাজার ২৭০ টাকা করে কিস্তি পরিশোধ করার কথা ৩৯ লাখ ৬১ হাজার ৯২০ টাকা।

প্রায় ৩ লাখ টাকা পরিশোধের বাকি থাকলেও তার কাছে ৯ লাখ ২৪ হাজার টাকা দাবি করে বসে উত্তরা ব্যাংক। সুদহার বাড়ানোর কারণে ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৩৩ টাকা ৩৫ পয়সা অতিরিক্ত সুদ আরোপ কর‍া হয়েছে বলে নুরুল ইসলামকে ব্যাংক থেকে জানানো হয়। নুরুল ইসলাম অতিরিক্ত টাকা পরিশোধে অস্বীকৃতি জানালে তাতে কর্ণপাত করেনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ কারণে তিনি কিস্তির টাকা পরিশোধও বন্ধ করে দেন। এক পর্যায়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের দ্বারস্থ হন নুরুল ইসলাম শেখ।

অর্থমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন।  এধরনের কাজ অত্যন্ত অন্যায় ও গর্হিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। একই সঙ্গে ওই ব্যক্তির অভিযোগ সঠিক হলে উত্তরা ব্যাংককে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন। পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে উত্তরা ব্যাংকের কাছে ব্যাখা চাওয়া হয়। তবে এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে উত্তরা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রবিউল হোসেনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্ট্রিগ্রিটি ও কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট থেকে উত্তরা ব্যাংকে বিশেষ পরিদর্শন কার্যক্রম চালানো হয়। পরিদর্শনে নুরুল ইসলামের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে সুদ আরোপের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। নুরুল ইসলামের ঋণের সুদহার বৃদ্ধির কারণে যে পরিমাণ স্থিতি বেড়েছে, তা সঠিকভাবে হিসাব করে সর্বশেষ স্থিতি জানানোর নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

পরে নুরুল ইসলামের ঋণে আরোপ করা অতিরিক্ত ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৩৩ টাকা ৩৫ পয়সা মওকুফ করে বাকি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে অর্থমন্ত্রীকে জানিয়েছেন উত্তরা ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. মোখলেছুন নবী। তিনি বলেন, এখানে আমার কিছু বলার নেই। কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রাহক নুরুল ইসলাম শেখের সুদ মওকুফ করা তাই মওকুফ হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি ও কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক মো. জামাল মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, অভিযোগকারী গ্রাহকের অতিরিক্ত সুদ মওকুফ করেছে উত্তরা ব্যাংক। এছাড়া অন্যায়ভাবে সুদ আরোপ করায় অর্থমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার পাশাপাশি অনুশোচনা ও দুঃখ প্রকাশও করেছে তারা। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য সজাগ থাকবে বলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অঙ্গীকার করেছে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ