বিএনপি-জামায়াতসহ ১৮ দলের ডাকে বুধবার বন্দরনগরী চট্টগ্রামে হরতাল যথারীতি নিরুত্তাপভাবে চলছে। হরতাল চলাকালে রাস্তায় বের হয়েছে প্রচুর গণপরিবহন। রিক্সা চলাচলও স্বাভাবিক আছে। কিছুটা ব্যাঘাত ঘটলেও মানুষের জীবনযাত্রাও অনেকটাই স্বাভাবিক আছে। হরতাল শুরুর পর থেকে নগরী এবং জেলায় আর কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় হরতালের সমর্থনে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল-সমাবেশ করছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মো.নাছির উদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খোন্দকার এসব কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
হরতাল শুরুর পর নগরীর কাজীর দেউড়ির মোড়ে গোলাম আকবর খোন্দকারের নেতৃত্বে মিছিল বের হওয়ার পর পুলিশ বাধা দেয়। তবে এসময় অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘হরতাল একদম শান্তিপূর্ণভাবে চলছে। কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর এখনও আমরা পাইনি।’
এদিকে হরতালকে কেন্দ্র করে নাশকতা মোকাবেলায় নগরীতে অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি বিজিবিও মোতায়েন করা হয়েছে। নগর পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘নগরীর এক হাজার ৮’শ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছি। বিজিবিও পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। কেউ অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইলে কঠোরভাবে দমন করা হবে।’
হরতাল চলাকালে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে প্রচুর পরিমাণে সিটিবাস, মিনিবাস, টেম্পু, সিএনজি অটোরিক্সা চলাচল করতে দেখা গেছে। নগরীতে রিক্সা চলাচল প্রায় স্বাভাবিক আছে। এছাড়া নগরীতে সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন অফিস, কলকারখানা খোলা আছে। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও খোলা আছে। চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে পণ্য উঠানামা স্বাভাবিক থাকলেও পণ্যবাহী পরিবহন বাইরে যাচ্ছেনা বলে খবর পাওয়া গেছে।
ডা.শাহাদাৎ-নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা:
নগরীর কাজির দেউড়ি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এতে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা.শাহাদাৎ হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এএম নাজিম উদ্দিনসহ ১২ জন এবং আরও প্রায় দেড়’শ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) মো.কামরুজ্জামান বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। কোতয়ালী থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই উৎপল বড়ুয়া বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণ এবং পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। এতে ১২ জনের নাম আসামী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আরও এক’শ থেকে দেড়শ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে নগর বিএনপির নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয় থেকে আকস্মিক মশাল মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এসময় একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটলে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে দু’জনকে আটক করা হয়। মামলায় তাদের নাম আসামী হিসেব উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এস আই উৎপল বড়ুয়া।