নেপালে পথ চলার ৪৩ বছর অতিক্রম করলো বাংলাদেশের জাতীয় বিমান পরিবহন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাই্ন্স। ১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে হিমালয় কন্যার দেশে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা। এই দীর্ঘ পথ চলা উদযাপন উপলক্ষে ১৬ অক্টোবর নেপালের হোটেল অন্নাপূর্ণা’য় বর্নাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারী যাত্রা শুরু করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বর্তমানে ১৫টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান। ১৯৭৪ সালে নেপালে যাত্রা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ঢাকা-কাঠমান্ডু-ঢাকা রুটে প্রায় ২৫ লক্ষাধিক যাত্রী পরিবহন করেছে বিমান। বর্তমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থেকে সপ্তাহের প্রতিদিন বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের উড়োজাহাজে যাত্রী পরিবহন করা হয়। ১৬২ আসনবিশিষ্ট এ উড়োজাহাজে ১২টি বিজনেস ক্লাস ও ১৫০টি ইকোনমি ক্লাসের আসন রয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক বিপণন ও বিক্রয় মোঃ আলী আহসান বলেন, নেপালের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে সারা বছর জুড়ে পর্যটকদের চাপ থাকে। একই সাথে পর্যটনবান্ধব বাংলাদেশেও অনেকেই আসেন। কম খরচে মানসম্মত সেবা প্রদানের কারণে যাত্রীদের কাছে বিমান জনপ্রিয়। শুধু পর্যটন নয়, বাংলাদেশ ও নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য-সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি হচ্ছে। দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের কারণে ব্যবসায়ীদেরও যাতায়াত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরও বলেন,বাংলাদেশ থেকে কার্গো পরিবহন হচ্ছে বিভিন্ন দেশে। নেপাল থেকেও কার্গো পরিবহন করা হচ্ছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক জনসংযোগ শাকিল মেরাজ সংস্থাটির অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বলেন, ‘৪৩ বছর শুধুই সময় নয়, একটি মাইল ফলক। প্রতিবেশি রাষ্ট্র নেপালে ৪৩ বছর পার করতে পেরে আমরা গর্বিত। নেপালের মানুষজন বিমানের উপর আস্থা রেখেছেন বলেই এই দীর্ঘপথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব হয়েছে। আগামী দিনগুলোতেও সর্বোচ্চ মানের সেবা দিতে সচেষ্ট থাকবে বিমান।’
শাকিল মেরাজ আরও বলেন, পর্যটনের পাশাপাশি নেপালের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম বৃহৎ খাত জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধিতে বিমানের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। বিশেষতঃ নেপালের প্রবাসী শ্রমিকরা মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে যাতায়াতের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে ঢাকা-কে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে। বিপুল সংখ্যক নেপালী ছাত্র-ছাত্রী ও কর্মজীবিরা বাংলাদেশের সংগে যোগাযোগে বিমানকে প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নিয়েছে। বন্ধুপ্রতীম নেপালের সাথে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক যোগাযোগ ও পর্যটন বিনিময়েও বিমান বিগত ৪৩ বছর যাবত এক অন্যন্য ভূমিকা পালন করে আসছে। তিনি আরো বলেন, নেপালের রাষ্ট্রীয় সংস্থা রয়েল নেপাল এয়ারলাইন্সের কর্মীদের দক্ষতা ও কারিগরী সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিমান ট্রেনিং সেন্টার বিএটিসি সাফল্যজনকভাবে অবদান রেখেছে।
সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এতে নেপালের স্থানীয় শিল্পীরা ঐতিহ্যবাহী পাহাড়ী নৃত্য পরিবেশন করেন এবং বাংলাদেশের প্রখ্যাত ব্যান্ড শিল্পী জনাব শাফিন আহমেদ তাঁর জনপ্রিয় সংগীতসমূহ পরিবেশন করে দর্শকদের মন জয় করেন। নেপালে বাংলাদেশ বিমানের ৪৩ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে নেপাল সিভিল এভিয়েশন, রয়েল নেপাল এয়ারলাইন্স, গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম গ্যালেলি ও সেবার (প্রযুক্তি কোম্পানী) এর কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় ট্রাভেল এজেন্ট, নেপাল বাংলাদেশ চেম্বার এর কর্মকর্তাসহ মিডিয়া ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশ বিমানের কান্ট্রি ম্যানেজার জনাব রাজীব হাসান।