শনিবার, মে ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদইন্টারভিউআওয়ামী লীগ ওয়াদা রাখেনি নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখছি না : এইচ এম এরশাদ

আওয়ামী লীগ ওয়াদা রাখেনি নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখছি না : এইচ এম এরশাদ

ডেস্ক রিপোর্ট (বিডি সময় ২৪ ডটকম)

সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি ‘সংবিধান থেকে একচুলও নড়ব না’ নির্বাচন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন প্রতিক্রিয়ায় তার জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে।আওয়ামী লীগ ওয়াদা রাখেনি নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখছি না
তিনি এমনটা না বললেও পারতেন। রাজনীতিতে আলোচনা ও সমঝোতা করেই চলতে হয়। আবার প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া যখন বললেন, ‘আন্দোলনে চুল উড়ে যাবে, দিশাহারা হয়ে যাবেন’ তখন আর বুঝতে বাকি থাকল না যে নির্বাচন ইস্যুতে আপস ও সমঝোতার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। নির্বাচন ইস্যুতে দেশটাকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি সংঘাত চায় না। আল্লাহর কাছে দোয়া করি সমঝোতা, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দেশে সঠিক সময়ে সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুষ্ঠু একটা নির্বাচন হোক, দেশে শান্তি ফিরে আসুক। বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কের নিজ বাসায় একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় সাবেক এই রাষ্ট্রপতি নানান বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন। বিএনপি আগামী নির্বাচনে না এলে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, কোনো বড় দল নির্বাচনে অংশ না দিলে ওই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। এমন নির্বাচনে অংশ নিয়ে লাভ কী? দেশ-বিদেশের সবাই চাচ্ছে বাংলাদেশে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। তিনি বলেন, সব মিলিয়ে সঠিক সময়ে দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে সঠিক সময়ে নির্বাচন হওয়া উচিত। জ্বালাও-পোড়াও ভালো লাগে না।
মহাজোটে কেন থাকছেন না- জানতে চাইলে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, মনে অনেক দুঃখ। মহাজোটে জাতীয় পার্টির অস্তিত্বই নেই। আওয়ামী লীগ বেমালুম ভুলে গেছে জাতীয় পার্টিকে নিয়েই গঠিত হয়েছিল মহাজোট। তিনি বলেন, শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির সঙ্গে দেওয়া ওয়াদা রক্ষা করেনি। মহাজোটগতভাবে ৪৬টি আসন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ এর মধ্যে ১৭টি আসনে তাদের প্রার্থী দাঁড় করিয়ে রাখে। ফলে ২৯টি আসনে মহাজোটগতভাবে নির্বাচন করে জাতীয় পার্টি ২৭টিতে বিজয়ী হয়। এর পরও উপনির্বাচনে আরও ২টি আসন ছিনিয়ে নেয় আওয়ামী লীগ। ওইসব আর বলতে চাই না। আমরা মানুষের দুঃখ ঘোচানোর জন্য আগামীতে এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি এককভাবে ক্ষমতায় না-ও যেতে পারে। কিন্তু আমরা ১০০ আসনে কঠিনভাবে লড়াই করে ৬০-৭০টি আসন লাভ করতে পারবে। এরই মধ্যে ২৪১ আসনে জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী তিনি চূড়ান্ত করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ-বিএনপিও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবে না। ফলে নির্বাচনের পর সরকার গঠনের ক্ষেত্রে জোট গঠন হতে পারে। জাতীয় পার্টিকে ছাড়া কেউ ক্ষমতায় যেতে পারবে না। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে একটি জোট গঠন করে নির্বাচনে অংশ নিতে চাই। জোটে কোন দলগুলো থাকছে তাদের নাম এখন বলব না। মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা কবে দেবেন_ জানতে চাইলে বলেন, মহাজোট পাঁচ বছরের জন্য হয়েছিল। এখনো দুই মাস বাকি আছে। অপেক্ষা করে দেখি। তবে পার্টির নেতা-কর্মীরা আর মহাজোটে থাকতে চায় না। জাতীয় পার্টি আর কারও ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবে না। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অক্টোবরে মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দেব। দ্রুত সময়ের মধ্যে পার্টির কাউন্সিল করার প্রস্তুতি চলছে। এর আগে ৩০ আগস্ট থেকে অক্টোবরজুড়ে সারা দেশে ৪২টি মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা কমিটির কাউন্সিল করা হবে। এ জন্য পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে কাউন্সিল বাস্তবায়নে সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই কাউন্সিলগুলোয় তিনিসহ পার্টির প্রেসিডিয়ামের সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানান। এরশাদ বলেন, হাতে গোনা কয়েকজন বাদে বর্তমান মন্ত্রিসভার অধিকাংশই অযোগ্য। অযোগ্য মন্ত্রীদের কারণে সরকার ডুবছে। প্রশাসনিক দুর্বলতা এখন চরম পর্যায়ে। এর নেপথ্যে রয়েছে উপদেষ্টা ও মন্ত্রীদের সমন্বয়হীনতা। কারও কারও দায়িত্বহীনতাও। তিনি বলেন, মানুষ আর দুই দলকে চায় না। তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে ২৩ বছর মানুষ গণতন্ত্রের নামে যা দেখছে তাতে তার সরকারকে আর স্বৈরাচার ও দুর্নীতিবাজ বলছে না। যারা বলতেন তারা এখন লজ্জিত। এরশাদ বলেন, তার নয় বছর ছাত্র সমাজসহ সব রাজনৈতিক দল রাজপথ আন্দোলনমুখর করে রেখেছিল। পদে পদে রাজনৈতিক শক্তি হরতাল-অবরোধে তার শাসনামলকে বাধাগ্রস্ত করেছিল। কিন্তু অবাক হয়ে আজ মানুষ মূল্যায়ন করে বলছে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এরশাদ যা করেছেন পরের ২৩ বছরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কিছুই করেনি। -বাংলাদেশ প্রতিদিন

আরও পড়ুন

সর্বশেষ