শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
প্রচ্ছদটপশরণার্থীদের ফেরত পাঠাতে ট্রাম্পের আদেশ স্থগিত আদালতে

শরণার্থীদের ফেরত পাঠাতে ট্রাম্পের আদেশ স্থগিত আদালতে

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বৈধ ভিসাধারী অভিবাসী ও শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ সাময়িক স্থগিত করেছেন আদালত। স্থানীয় সময় শনিবার আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) নামে একটি সংস্থা ট্রাম্পের আদেশের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির কেন্দ্রীয় বিচারক অ্যান ডনেলি এ আদেশ দেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সাতটি মুসলিম দেশের নাগরিক ও শরণার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এরপরই মার্কিন আদালতের পক্ষ থেকে এ আদেশ দেওয়া হয়। বৈধ কাগজপত্র থাকলেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন মুসলিম দেশের নাগরিকরা।

ট্রাম্পের জারি করা নিষেধাজ্ঞার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিমানবন্দরে বিক্ষোভে যোগ দেন শতাধিক মানুষ। এ ছাড়া নির্বাহী আদেশের ১০০ থেকে ২০০ বিদেশি নাগরিক এখনো আটকে রয়েছেন দেশটির বিমানবন্দরগুলোতে। বিচারক অ্যান ডনেলি জানান, স্বীকৃত শরণার্থী আবেদনপত্র, বৈধ ভিসা এবং অন্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য আইনগতভাবে বৈধ। যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্র্যান্টস রাইটস প্রজেক্টের (শরণার্থী অধিকার প্রকল্প) কর্মকর্তা লি গিলির‍্যান্ট মামলাটিতে বাদীপক্ষের হয়ে লড়েন। আদালত রায় জানানোর পর তাঁকে উল্লাস করে অভ্যর্থনা জানায় বাইরে থাকা জনতা।

গিলির‍্যান্ট বলেন, ‘সরকার কী করছে, তা বিচারক দেখেছেন এবং আমরা যা চেয়েছি সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের আদেশকে স্থগিত করে দিল এবং যারা এসেছে ও আটক করা হয়েছে, তাদের ফিরিয়ে দেওয়া থেকে সরকারকে বিরত রাখল।’ স্থানীয় সময় শনিবার সাতটি মুসলিম দেশ ও শরণার্থীদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইসলামী জঙ্গিদের দূরে রাখার জন্য এটি একটি পদক্ষেপ। আমরা তাদের এখানে চাই না। ট্রাম্প আরো বলেন, ‘যারা আমাদের সেনাদের জন্য হুমকি, তাদের আমরা নিতে পারি না। আমরা তাদেরই নেব, যারা আমাদের দেশ ও দেশের মানুষকে গভীরভাবে ভালোবাসে। এর ফলে ওই সাতটি দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া নাগরিকরা বেশ ঝামেলায় পড়েন। নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয় দুই ইরাকি নাগরিককে। তাঁরা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলাও ঠুকে দেন।

গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ভোটে ডেমোক্র্যাট দলের হিলারি ক্লিনটনকে ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে হারিয়ে দেন তিনি। দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সদ্য বিদায়ী বারাক ওবামার বেশ কয়েকটি আদেশ বাতিল করে দেন। এর মধ্যে আছে স্বাস্থ্যবিষয়ক ‘ওবামাকেয়ার’। এ ছাড়া মেক্সিকোর সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। নর্থ ডাকোটায় তেল পাইপলাইন নির্মাণেরও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। যদিও বিক্ষোভের মুখে বারাক ওবামা এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছিলেন।

এদিকে, ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিতির সংখ্যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সিএনএনসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ভিডিও ফুটেজে ২০০৯ সালে বারাক ওবামার অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত জনতার সংখ্যা বেশি দেখা যায়। তবে হোয়াইট হাউসের নতুন প্রেস সেক্রেটারি শন স্পাইসার বলেন, সংবাদমাধ্যম মিথ্যাচার করছে। এমনকি ট্রাম্পও তাঁর টুইটারে সংবাদমাধ্যমের দিকে অভিযোগের তীর তোলেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে হিলারির পক্ষে জাল ভোট পড়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন। নির্বাচনের আগেও তিনি এ বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। নির্বাচনে ট্রাম্প ইলেকটোরাল কলেজ ভোট বেশি পেলেও হিলারি জনপ্রিয় ভোট বেশি পেয়েছেন। ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ভোট ব্যবধান প্রায় ৩০ লাখ।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ নেওয়ার দিনই যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এদের বেশির ভাগই নারী। তারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। ভোট গ্রহণের আগেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ আসতে থাকে। অনেক নারী সংবাদ সম্মেলনে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়ী হওয়ার পরও তাঁর বিরুদ্ধে এক নারী যৌন হয়রানির মামলা করেছেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ