সোমবার, মে ২৭, ২০২৪
প্রচ্ছদদেশজুড়েশাকিলের দাফন সম্পন্ন

শাকিলের দাফন সম্পন্ন

 দাফন সম্পন্ন হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কবি মাহবুবুল হক শাকিলের। তার মৃত্যুতে যেন অস্বাভাবিক এক শূন্যতা গ্রাস করেছে ময়মনসিংহবাসীর হৃদয়ে। প্রিয়জন হারানোর অব্যক্ত বেদনায় অশ্রুসজল হয়ে পড়েছে লাখো মানুষের চোখ। নগরীর বিশিষ্টজন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ-সবাই যেন স্বজন হারানোর শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছেন। জ্যেষ্ঠ সন্তান শাকিলকে চিরদিনের জন্য বিদায় দিতে গিয়ে অঝোর কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা। তার কান্না স্পর্শ করে কাছের মানুষ থেকে দূরের মানুষকেও। ০৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে শাকিলের দ্বিতীয় নামাজে জানাজার সময় নিজের সন্তানের টুকরো টুকরো স্মৃতি তুলে ধরে আহাজারি করছিলেন ময়মনসিংহ আওয়ামী লীগের এ বর্ষীয়ান রাজনীতিক।

প্রতিটি মানুষ চায় নিজে মারা গেলে তার সন্তান কাঁধে লাশ নেবে। জানাজা পড়বে। কিন্তু আমার বেলায় ব্যতিক্রম হয়েছে। আমার সন্তানের লাশ আমার কাঁধে নিতে হবে। এটা যে কী দুঃসহ যন্ত্রণার ভারী বোঝা তা বলে বোঝানো যায় না’ শোকাতুর কণ্ঠে এমন বেদনার্ত উচ্চারণ অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকার।

এ সময় অশ্রুসজল চোখে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান বলেন, আমরা দু’জনেই চরম দুর্ভাগ্যের শিকার। তিন বছর আগে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আমি আমার কনিষ্ঠ সন্তান ডা. শুভকে হারিয়েছি। প্রবীণ রাজনীতিক অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা হারালেন আদরের সন্তান শাকিলকে।’ এ সময়টাতেও অসংখ্য মানুষের চোখ ভিজে যায় বোবা কান্নায়।

তার মতো সৃজনশীল রাজনীতিকের চলে যাওয়া আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি, বলছিলেন ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগ নেতা শাহীনুর রহমান। ময়মনসিংহ নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে শাকিলের দ্বিতীয় নামাজে জানাজায় হাজার হাজার মানুষ শরিক হন। শোকার্ত মানুষের ভিড়ে সেখানে সৃষ্টি হয় জনারণ্যের।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, প্রধানমন্ত্রীর এপিএস সাইফুজ্জামান শেখর, আশরাফুল আলম খোকন, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক উহাব আকন্দ, এফবিসিসিআই পরিচালক আমিনুল হক শামীম, যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বদিউজ্জামান বদি, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুল পাঠান সেতু, ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগ নেতা শাহীনুর রহমান। এর আগে ০৭ ডিসেম্বর দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা থেকে নগরীর বাঘমারা রোডস্থ বাসায় এসে পৌঁছে কবি মাহবুবুল হক শাকিলের মরদেহ।

এরপর বিকেল ৪ টার দিকে তার মরদেহ নগরীর টাউন হল এলাকার ভাষা শহীদ শামসুল হক মঞ্চের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে শেষবারের মতো শোক-শ্রদ্ধা জানান রাজনীতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এরপর নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে সন্ধ্যা পৌনে ৭ টার দিকে নগরীর ভাটিকাশর গোরস্থানে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। প্রসঙ্গত, ৬ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর গুলশানের একটি রেস্তোঁরায় মাহবুবুল হক শাকিলের মরদেহ পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ