শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সভাপতি পদে এমপিদের না থাকার রায় বহাল

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সভাপতি পদে এমপিদের না থাকার রায় বহাল

ইচ্ছা পোষণ করে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসেবে সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব পালন এবং গভর্নিং বডির বিশেষ কমিটির বিধান অবৈধ বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর ফলে সংসদ সদস্যরা স্কুল-কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি থাকতে বা হতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। ০৭ নভেম্বর সকালে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। ০৬ নভেম্বর এ বিষয়ে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ড. ইউনুছ আলী আকন্দ। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রবিধানমালা ২০০৯-এর ৫  ও ৫০ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেছিলেন আইনজীবী ইউনুচ আলী।

গত ০১ জুন বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা ২০০৯ এর ৫ (২) এবং ৫০ ধারাকে বাতিল করে ওই রিট আবেদনের রায় দেন বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এর মধ্যে ৫ ধারা হচ্ছে এমপিদের সভাপতি পদ ও ৫০ ধারা হচ্ছে বিশেষ কমিটি গঠন নিয়ে। আদালত দু’টি ধারাই বাতিল ও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করেন।

এর আগে গত ১৩ এপ্রিল ওই রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব পালন এবং নির্বাচন ছাড়া কমিটি গঠন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

পরে ৮ জুন হাইকোর্টের ওই রায়ের স্থগিতাদেশ চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন জানান রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন স্থগিতাদেশ না দিয়ে আবেদনটি ১২ জুন শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন চেম্বার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি শেষে ১২ জুন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ স্থগিতাদেশ না দিয়ে রায় বহাল রাখেন। এ রায়ের পর জাতীয় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করে পদ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন সংসদ সদস্যরা। এরপর রায়ের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

আইনজীবী ড. ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, এমপিদের পদে থাকার বিধান ও বিশেষ কমিটির বিধান নিয়ে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে ভিকারুন্নিসা ও অন্যদের আবেদন কার্যতালিকায় রয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধ্যাদেশের (১৯৬১) আওতায় ‘মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা-২০০৯ এর ৫ ধারা (গভর্নিংবডির সভাপতি মনোনয়ন) এর (১) উপ-বিধিতে বলা হয়েছে, ‘কোনো স্থানীয় নির্বাচিত সংসদ সদস্য তার নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এমন সংখ্যক উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতির দ্বায়িত্ব গ্রহণ করতে পারবেন’।

(২) উপ-বিধান ১ এর অধীন সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের জন্য স্থানীয় নির্বাচিত সংসদ সদস্য, তার নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত যেসব উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণ করতে ইচ্ছুক তার উল্লেখসহ লিখিতভাবে এ প্রবিধানমালার অধীন বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে তার অভিপ্রায় ব্যক্ত করবেন এবং এ অভিপ্রায়পত্র সংশ্লিষ্ট বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানগুলোর সভাপতি হিসেবে তার মনোনয়ন হিসেবে গণ্য হবে’।  ৫০ ধারায় বলা হয়েছে, ‘বিশেষ ধরনের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটি- বিশেষ পরিস্থিতিতে বোর্ড এবং সরকারের পূর্বানুমোদক্রমে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের কোনো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ ধরনের গভর্নিং বডি বা ক্ষেত্রমতে ম্যানেজিং কমিটি করা যাবে’।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ