বকেয়া পরিশোধের জন্য হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণার পরও রাজপথ-রেলপথ অবরোধ করছেন খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত সাতটি পাটকলের শ্রমিকরা। বুধবার ভোর ছয়টা থেকে দ্বিতীয় দফা অবরোধের তৃতীয় দিন শুরু করেছেন শ্রমিকরা। একইসঙ্গে শ্রমিক ধর্মঘটের ৯ম দিনের মতো বন্ধ রয়েছে পাটকলের উৎপাদন। বুধবার সকাল ছয়টায় শ্রমিকরা কাজে যোগদান না করে প্রথমে মিল গেটে জড়ো হয়। পরে লাঠি মিছিল আর মাটির বাসন নিয়ে খালিশপুর নতুন রাস্তা এবং আটরা শিল্প এলাকার ইস্টার্ন গেটে গিয়ে রাজ ও রেলপথ অবরোধ শুরু করে। এ সময় শ্রমিকরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে এবং কাঠের গুঁড়ি দিয়ে প্রতিরোধ সৃষ্টি করে।
ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে শ্রমিকরা প্রতীকী কর্মসূচি হিসেবে কচু গাছে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। এছাড়া প্রবীণ শ্রমিক নেতা শাহ আলমের সভাপতিত্বে সড়কের উপর সমাবেশ করা হচ্ছে। খুলনা রেল স্টেশনের সহকারি ম্যানেজার ফজলু শেখ জানান, খুলনা থেকে কোনো ট্রেন ছাড়তে বা ঢুকতে পারছে না। বিকল্প হিসেবে যশোরের নওয়াপড়া থেকে ঢাকাগামীসহ অন্য ট্রেন চলাচল করছে। বকেয়া মজুরি, মুজরি বৃদ্ধিসহ পাঁচ দফা দাবিতে ৪ এপ্রিল থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত জুট মিল সিবিএ নন সিবিএ ঐক্য পরিষদ অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের পাশাপাশি রাজ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে আসছে। খুলনা অঞ্চলের সাতটি জুট মিলের ১৪ জন শ্রমিক গতকাল মঙ্গলবার পাট মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে গেলেও তাদের সঙ্গে কোনো বৈঠক হয়নি। আজ সকালে ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন বুধবার জানান, তারা এখনও ঢাকায় অবস্থান করছেন। দুপুর আড়াইটায় তাদের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ফলপ্রসূ আলোচনা ও মজুরি প্রাপ্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এদিকে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের ঘোষণা ও খুলনা অঞ্চলের শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ে হাতিহাতির ঘটনায় খুলনায় শ্রমিকদের মধ্যে বিরূপ ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। গতকাল রাতেই বিভিন্ন মিল গেটে এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।