বুধবার, মে ২৯, ২০২৪
প্রচ্ছদরাজনীতিদলের ভিশন’২০৩০ ঘোষণা দিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া

দলের ভিশন’২০৩০ ঘোষণা দিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া

দলের ভিশন’২০৩০ ঘোষণা দিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। এ ভিশন’২০৩০ এর খসড়া পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, অচিরেই চূড়ান্ত করে সেটি জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হবে। ভিশন’২০৩০ এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরে জনগণই দেশের মূল মালিক বলে মন্তব্য করেন তিনি। সুখী, সমৃদ্ধ, আধুনিক ও আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই এ ভিশন’২০৩০ এর লক্ষ্য বলেও জানান খালেদা জিয়া। ১৯ মার্চ দুপুর পৌনে ১টার দিকে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ মিলনায়তনে বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিলের বক্তব্যে এ পরিকল্পনা উত্থাপন করেন তিনি।

খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছেন। ইতিবাচক রাজনীতির ধারা প্রবর্তন করেছিলেন। মহান স্বাধীনতার মূল্যবোধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। কেবল অতীত নিয়ে পড়ে না থেকে ভবিষ্যৎমুখী উন্নয়নমূলক রাজনীতির ধারাও এদেশে তৈরি করেছিলেন জিয়াউর রহমান। জিয়ার সেই আদর্শ আমাদের পথ, এটাই আমাদের নীতি। তিনি বলেন, বিশ্ব এখন বদলে গেছে। যে যার মতো করে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মেধা ও দক্ষতা থাকা সত্বেও আমাদের দেশ এখনও পিছিয়ে রয়েছে। দেশে নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা নেই এখন। জাতি হিসেবে আমাদের বর্তমান এখন সংকটে আর ভবিষ্যৎ অন্ধকার-অনিশ্চিতে। আমরা ঐক্য-শৃঙ্খলা এ সমন্বিত পরিকল্পনার অভাবে পিছিয়ে যাচ্ছি। যা হচ্ছে কেবলই যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে। এ পরিস্থিতিতে জাতিকে দেখাতে হবে নতুন দিক-নির্দেশনা। এই কাউন্সিল সেই পথ দেখাবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি প্রধান।

তিনি বলেন, বিরোধী দলে থাকতেও বিএনপি দেশকে এগিয়ে নেওয়ার রাজনীতি করে এসেছে। গঠনমূলক সমালোচনা ও পরামর্শ দিয়ে এসেছে। কিন্তু কখনো ক্ষমতাসীন দলের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। গণতন্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে, আমাদেরও শান্তিপূর্ণভাবে রাজনীতি করতে দেওয়া হয়নি। আমাদের নির্যাতনের মধ্যে রাখা হয়েছে। এ রকম অবস্থায় দেশ কখনো চলতে পারে না। এ অবস্থা থেকে বের হয়ে না আসতে পারলে দেশ ঘোর ‍অন্ধকারে চলে যাবে। খালেদা বলেন, এখনও বিএনপিই পারে শুধু ইতিবাচক ধারার রাজনীতির মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে। অন্ধকার থেকে দেশকে মুক্তি দিতে, আলোতে নিতে।তিনি বলেন, আমরা কখনো ১০ টাকা কেজি মূল্যের চাল ও ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দেইনি। আমরা যা বলি বুঝে শুনে বলি আর যা বলি তা করি।

খালেদা জিয়া বলেন, দেশের মানুষকে শান্তিতে রাখতে চাই। আমরা সকলের মত নিয়ে সুখী, সমৃদ্ধ, আধুনিক ও আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশ গড়তে চাই। সুন্দর ও ‍সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনাই বিএনপির লক্ষ্য। এ বিষয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছি। সেজন্যই ভিশন’২০৩০ পরিকল্পনা প্রণীত হচ্ছে, যা  অচিরেই ঘোষণা করা হবে। এর আগে বেলা পৌনে এগারটায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কাউন্সিলের উদ্বোধন করেন খালেদা জিয়া। এ সময় দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পতাকা উত্তোলনের সময় জাতীয় সংগীত এবং পরে দলীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর কেন্দ্রীয় নেতারা কাউন্সিল মঞ্চে গেলে প্রথমেই শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। পরে নেতাকর্মীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। কাউন্সিলে স্বাগত বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এরপর বক্তব্য দেন কাউন্সিলে আসা বিদেশি অতিথিরা। বক্তব্য দেন- যুক্তরাজ্যের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সংসদ সদস্য সাইমন ড্যান্সজুক, বিল বেনিয়ান ও যুক্তরাষ্ট্রের সিকাগো শহরের কাউন্সিলর জোসেফ এ মোরী। এর আগে সকাল দশটা ৪০ মিনিটের দিকে কাউন্সিলের ভেন্যুতে উপস্থিত হন খালেদা জিয়া। এ সময় হাজার হাজার নেতাকর্মী স্লোগান দিয়ে স্বাগত জানান তাদের নেত্রীকে। রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ মিলনায়তন চত্বর এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব-উত্তর অংশে কাউন্সিলে এসেছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। সকাল থেকে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল সহকারে এখানে এসেছেন তারা। তিন হাজার ১শ’ কাউন্সিলর, প্রায় ১০ হাজার ডেলিগেট, আমন্ত্রিত অতিথি, বিদেশি মেহমান ও দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী মিলে প্রায় ৩০/৩৫ হাজার মানুষের অংশগ্রহণে এবারের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ