শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
প্রচ্ছদঅর্থ ও বানিজ্য সময়বাঁশখালীতে ২০ হাজার কোটি টাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্র করছে এস আলম গ্রুপ

বাঁশখালীতে ২০ হাজার কোটি টাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্র করছে এস আলম গ্রুপ

বেসরকারি উদ্যোগে বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে দেশের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হচ্ছে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গণ্ডামারার পশ্চিম বড়ঘোনায়। চায়না সেবকো এইচটিজি’র সঙ্গে যৌথভাবে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ। কয়লাভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াটের এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৭০ শতাংশের মালিকানা এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের। ৩০ শতাংশের মালিক চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান। আজ বিকেল ৪টায় ঢাকার আবদুল গণি রোডের বিদ্যুৎ ভবনের মুক্তি হলে এ বিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর হবে। এখানে উপস্থিত থাকবেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ।

এ প্রসঙ্গে সাইফুল আলম মাসুদ বলেন, ‘আমার ৩০ বছরের ব্যবসায়িক জীবনে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্পটি সবচেয়ে বড় ও মর্যাদাপূর্ণ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উৎসাহ ও পরামর্শে এটির আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হবে আগামী মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। আমি সরকারের কাছে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাবো এখানে উৎপাদিত বিদ্যুতের সবটাই যেন চট্টগ্রামে বিতরণ করা হয়।’ চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায় বিদ্যুতের মোট চাহিদা হলো প্রায় ৩ হাজার মেগাওয়াট। এর মধ্যে বৃহত্তর চট্টগ্রামের চাহিদা হলো দেড় হাজার মেগাওয়াট।

এস আলম গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ লাভু বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে সরকারি এবং বেসরকারি খাতে এটি এমন এক প্রকল্প যেখানে বাংলাদেশের কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া হয়নি। ফলে ব্যাংকিং খাতে বা অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়ার সামান্যতম আশংকাও নেই। আর চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগেই এ প্রকল্পের জন্য ৬শ’ একর জায়গা আমরা কিনেছি। এটিও একটি নজিরবিহীন ঘটনা। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাংলাদেশে দক্ষ কোনো শ্রমিক নেই। চীনের দক্ষ শ্রমিকরা এসে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। তাদের সঙ্গে থাকবে বাংলাদেশি ৫ হাজার অদক্ষ শ্রমিক। এ অদক্ষ বাংলাদেশি শ্রমিকরাই আগামীতে কাজ শিখে আরো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করতে সক্ষমতা অর্জন করবে যা এদেশের শিল্প বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’

বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ইতোমধ্যে ৬শ’ একর জায়গা কিনেছে এস আলম গ্রুপ। প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত এস আলম গ্রুপের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ফিন্যান্স) সুব্রত ভৌমিক জানান, জার্মান ও আমেরিকান প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রে। জাহাজ থেকে কয়লা নামানোর জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে তৈরি করা হবে বেসরকারি বন্দরের মতো একটি জেটি। প্রকল্প চলাকালীন এখানে কাজ করবে প্রায় ৫ হাজার শ্রমিককর্মচারী। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর বিশেষজ্ঞ, প্রকৌশলী, কর্মকর্তাকর্মচারী মিলে কাজ করবে প্রায় ৬শ’ জন।

প্রায় ৩০ বছর আগে দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে পণ্য বেচাকেনা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন সাইফুল আলম মাসুদ। তারপর একে একে ঢেউটিন, সয়াবিন তেল, সিমেন্ট, চিনি, সিআর কয়েলসহ বেশ কয়েকটি শিল্পকারখানা গড়ে তোলেন। এছাড়াও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্স, রিলায়েন্স ফিন্যান্সসহ অসংখ্য বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার মালিকানা রয়েছে। সম্প্রতি তিনি দেশের প্রথম বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন একুশে টেলিভিশনএর মালিকানা কিনে নিয়েছেন। ৫৭ বছর বয়সী এ শিল্পোদ্যোক্তা বিদেশ থেকে তেল, চিনি, গমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করে দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে অন্যতম ভূমিকা পালন করছেন বলেও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। 

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ