বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪
প্রচ্ছদঅর্থ ও বানিজ্য সময়সংযত ও সমর্থনমূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক

সংযত ও সমর্থনমূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক

২০১৫-১৬ অর্থ বছরের দ্বিতীয়ার্ধে উৎপাদন ও মূল্য পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সংযত ও সমর্থনমূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ১৪ জানুয়ারি দুপুরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে গর্ভনর ড. আতিউর রহমান এ ম‍ুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। গর্ভনর ড. আতিউর রহমান বলেন, সুদহার কমানোয় বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রেপো ও রিভার্স রেপো হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে যথাক্রমে ৬.৭৫ ও ৪.৭৫ শতাংশ করা হয়েছে। ব্যাপক মুদ্রা ও বেসরকারি খাতের ঋণ যোগানের প্রবৃদ্ধি প্রক্ষেপিত হয়েছে যথাক্রমে ১৫.০ ও ১৪.৮ শতাংশ।

গর্ভনর বলেন, এ লক্ষ্যমাত্রা আগের মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সামান্য কম, তবে প্রকৃত অর্জনের চেয়ে যথেষ্ট বেশি। কমতি নীতি সুদহার, যথাযথ ঋণ যোগান ও ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে আমাদের এই পলিসি রিক্যালিব্রেশন (নীতি পুনঃসমন্বয়) মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে একদিকে কোনো বিঘ্ন ঘটাবে না। ‘অন্যদিকে, কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য যথেষ্ট হবে বলে আমরা মনে করি। বরাবরের মতো এবারও আমরা বর্তমানের বাস্তবতা ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা বিবেচনায় আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি সমন্বয় করতে সদা প্রস্তুত রয়েছি। মাঝপথেও, এই নীতিভঙ্গি পরিবর্তনের সুযোগ অবারিত থাকবে।’

সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচকগুলোর ওপর আগের মুদ্রানীতির প্রভাব তুলে ধরেন গভর্নর। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আর্থিক ব্যবস্থার অগ্রগতি ছিলো বেশ ভালো। বছরের শুরুর দিকের কিছু চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমরা ৬.৫১ শতাংশের সম্মানজনক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি। অর্জন করেছি ম্যাক্রো-অর্থনৈতিক ও মূল্য স্থিতিশীলতা। ‘২০১৫ সালেই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি নয়া মাইলফলক অর্জিত হয়েছে। গত বছরই আমরা নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা লাভ করেছি। গত মুদ্রানীতি থেকেই ভোক্তামূল্য মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। ভোক্তা মূল্যস্ফীতি জুনের ৬.৪ শতাংশ থেকে আরও কমে ডিসেম্বরে দাঁড়িয়েছে ৬.২ শতাংশ। বর্তমান মূল্যস্ফীতি আমাদের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই রয়েছে।’

আতিউর রহমান বলেন, ডিসেম্বর শেষে খাদ্য ও জ্বালানি বহির্ভূত কোর মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৬.৮ শতাংশ, যা মূল্যস্ফীতিকে ঊর্ধ্বমুখী চাপে রেখেছে। তাই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। বছর শেষে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। বৈদেশিক সূত্রের অর্থায়নসহ বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি জুনের ১৩.২ শতাংশ থেকে বেড়ে নভেম্বরে ১৩.৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

গর্ভনর বলেন, আমানত ও ঋণের সুদহার কমেছে ও এ দু’টি সুদহারের ব্যবধান অর্থাৎ স্প্রেড পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। তবে এই স্প্রেড আরও কমানোর জন্য ব্যাংকগুলোকে আমরা তাগিদ দিয়ে যাচ্ছি। অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্ব উভয় খাতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে ৬.৮ থেকে ৬.৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ও ৬.১ শতাংশ মূল্যস্ফীতি প্রক্ষেপণ করছে। তবে বর্তমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে অর্থবছর শেষে এই প্রবৃদ্ধির হার সাত শতাংশও স্পর্শ করতে পারে। এসময় প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. বীরুপাক্ষ পাল, ডেপুটি গর্ভনর, নির্বাহী পরিচালক, মহাব্যবস্থাপকরা উপস্থিত ছিলেন।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ