চট্টগ্রাম অফিসঃ (বিডিসময়২৪ডটকম)
সহপাঠীকে হত্যার দায়ে তিন কিশোর অপরাধীকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। একইসঙ্গে তাদের এক হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাস করে কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
চট্টগ্রামের প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো.গোলাম সরওয়ার বুধবার এ রায় দিয়েছেন।
মামলায় বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আজাদ বলেন, ‘দন্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় দায়ের হওয়া মামলার সর্বনিম্ন শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড। কিন্তু আসামীরা বয়সে কিশোর হওয়ায় তাদের লঘু সাজা অর্থাৎ ১০ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।’
দন্ডিত তিন আসামী হল, পারভেজ হোসেন (১৬), শুভ চৌধুরী (১৬) এবং ফরহাদ হোসেন (১৬)। তাদের হাতে খুনের শিকার কিশোর হল, শাহরিয়ার খন্দকার হৃদয় (১৩)।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় চারজন নগরীর পাহাড়তলী থানার উত্তর কাট্টলী এলাকার মোস্তফা হাকিম সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের অস্টম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। হৃদয়ের কাছে একটি গান শোনার যন্ত্র এমপি-থ্রি ছিল। তিন বন্ধু গান শোনার জন্য হৃদয়ের কাছ থেকে সেটি নিতে চাইলে হৃদয় দিতে অস্বীকৃতি জানাত। এর জের ধরে ক্ষোভ থেকে তিন বন্ধু হৃদয়কে খুনের পরিকল্পনা করে।
২০০৯ সালের ৯ মে হৃদয় স্কুলে যাবার পর তিনজন তাকে সাগর পাড়ে বেড়াতে নিয়ে যাবার কথা বলে কাট্টলীর বেড়িবাঁধের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে হৃদয়কে গলাটিপে হত্যা করে লাশ সাগরে ফেলে দেয় তারা।
এ ঘটনার দু’দিন পর ১১ মে পুলিশ কাট্টলী বেড়িবাঁধ এলাকায় সাগরে ভেসে আসা অবস্থায় হৃদয়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওইদিনই নিহতের মা তাসনেহার বেগম বাদি হয়ে পাহাড়তলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের ২৭ দিন পর ৭ জুন পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। তিনজনই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে।
এ মামলায় পুলিশ তদন্ত করে ২০০৯ সালের ৪ আগস্ট আদালতে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১০ সালের ৬ মে আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে আনা ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার রায় দেন আদালত।
রায় ঘোষণার সময় আসামী পারভেজ ও ফরহাদ আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। আর আসামী শুভ চৌধুরী জামিনে গিয়ে পলাতক আছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।