শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়১ জুলাই ২০১৬ থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করতে যাচ্ছে সরকার

১ জুলাই ২০১৬ থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করতে যাচ্ছে সরকার

ব্যবসায়ীদের আপত্তির মুখে আগামী অর্থবছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জুলাই, ২০১৬ থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করতে যাচ্ছে সরকার। ওই দিন থেকেই বিনিময় মূল্যের ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হবে ব্যবসায়ীদের। এর আগে আগামী জানুয়ারি থেকে শুরু হবে নতুন আইনে ভ্যাট নিবন্ধন কার্যক্রম। আর ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ভ্যাট অটোমেশন প্রক্রিয়া বা অনলাইন নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণভাবে কার্যকর করবে সরকার।
সম্পূর্ণ অটোমেশন পদ্ধতিতে ব্যবসায়ীরা যাতে ভ্যাট দিতে পারে সে জন্য বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় ৫৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ বাস্তবায়ন (ভ্যাট অনলাইন)’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ প্রকল্পের আওতায় ভ্যাট অনলাইন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার, নেটওয়ার্কিং ও ম্যানেজড সার্ভিসেস কেনার জন্য ভিয়েতনামের এফপিটি ইনফরমেশন সিস্টেমকে ১৯৬ কোটি টাকার ক্রয়াদেশ দিতে যাচ্ছে সরকার। অটোমেশন কার্যক্রমে ব্যবহৃত হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যারসহ অন্যান্য উপকরণ সরবরাহ, স্থাপন (ইনস্টলেশন) করার পাশাপাশি চার বছরের পোস্ট-ওয়ারেন্টিসহ তিন বছরের ওয়ারেন্টি সুবিধা দেবে।


নতুন আইনে ভ্যাট নিবন্ধন শুরু জানুয়ারিতে
ক্রয়াদেশ অনুমোদনের জন্য প্রস্তাবটি এখন সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির হাতে রয়েছে। কমিটির কাছে পাঠানো প্রস্তাবের সারসংক্ষেপে অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘নির্ধারিত সময়সীমা অনুসারে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে নতুন ভ্যাট ব্যবস্থাপনার অধীনে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর ওই বছরের ১ জুলাই প্রথম ভ্যাট দাখিলপত্র অনলাইন সিস্টেমে গ্রহণ করা হবে এবং ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে অটোমেশন প্রক্রিয়া তথা অনলাইন নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণরূপে কার্যকর করা হবে।’
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত পূরণের অংশ হিসেবে নতুন ভ্যাট আইন প্রণয়ন করে সরকার। ব্যবসায়ীদের আপত্তি সত্ত্বেও সব পণ্য ও সেবার ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের বিধান রাখা হয়েছে আইনটিতে। এক অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের শর্তে প্রণয়ন করা আইনটি বাস্তবায়নের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে আরেক বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংকের। তাদের ঋণ নিয়েই নতুন ভ্যাট আইন কার্যকরে অটোমেশন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সুলতান উল ইসলাম চৌধুরী স্বাক্ষরিত ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে পাঠানো প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতায় মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ বাস্তবায়ন (ভ্যাট অনলাইন) প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৫৫১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ১০১ কোটি টাকা। বাকি ৪৫০ কোটি টাকার জোগান দেবে বিশ্বব্যাংক। ইতিমধ্যে অর্থ জোগানের বিষয়ে সরকার ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সংস্থাটি তাদের ‘প্রোগ্রাম ফর রেজাল্টস’ কর্মসূচির আওতায় প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করবে।
প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছে, ‘কর ব্যবস্থাপনা সংস্কারের অংশ হিসেবে ২০১২ সালের ২৭ নভেম্বর মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ সংসদে পাস হয়। আইনটি ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর করার উদ্দেশ্যে মূল্য সংযোজন করব্যবস্থা অটোমেশন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের ভ্যাট ব্যবস্থায় তথ্য ব্যবস্থাপনার প্রবর্তন, ভ্যাট ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার সংস্কার এবং ভ্যাট বিভাগের সাংগঠনিক কাঠামোর পুনর্গঠনের মাধ্যমে ভ্যাট ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন করা হবে। ভ্যাট ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের আওতায় বর্তমানের এলাকাভিত্তিক কর্মপদ্ধতি পরিবর্তন করে কার্যক্রমভিত্তিক করা হবে।’
সরকারের ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে পাঠানো ক্রয় প্রস্তাব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ভিয়েতনামের এফপিটি ইনফরমেশন সিস্টেম ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কমার্শিয়াল-অব-দ্য শেলফ (কটস) সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার, নেটওয়ার্কিং অ্যান্ড সাপোর্ট সার্ভিসেস সরবরাহ করার মাধ্যমে ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম (আইভিএএস) বা সমন্বিত ভ্যাট প্রশাসন পদ্ধতি স্থাপন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে। এ সিস্টেমের মাধ্যমেই বাংলাদেশের ভ্যাট ব্যবস্থার যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইনে সম্পাদন করা হবে। বর্তমানে ভ্যাট ব্যবস্থার প্রায় সব কাজ সনাতন পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা হয়।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ