আগামী ২৮ এপ্রিল ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উত্তর ও দক্ষিনের নির্বাচনকে কেন্দ্র পুরো মহানগরীতে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে। শনিবার রাত ১২টা থেকে নির্বাচন কমিশন থেকে অনুমতির বাইরে কোনো মোটরসাইকেল চালানো যাবে না। নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচন পরবর্তী সময় এই তিন দফায় পুরো রাজধানীকে কঠোর নিরাপত্তায় আনা হয়েছে।
নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা বিষয় নিয়ে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মিডিয়া সেন্টারে ঢাকা মহানগর পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত কমিশনার ইব্রাহিম ফাতেমি, ব্যারিস্টার মাহাবুব হোসেন, যুগ্ন কমিশনার মনিরুল ইসলাম, মীর রেজাউল আলমসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ডিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের জানান, গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) আর সাধারণ ভোটকেন্দ্রের জন্য পৃথক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের জন্য অস্ত্রধারী ১২ জনসহ মোট ২৪ জন এবং সাধারণ কেন্দ্রে ১০ জন অস্ত্রধারীসহ মোট ২২ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও র্যাব ও বিজিবির টহল থাকবে। সঙ্গে থাকবেন ম্যাজিস্ট্রেট।
তিনি জানান, ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ মিলে ৯৯টি ওয়ার্ড। প্রতিটি ওয়ার্ডকেন্দ্রিক বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনগণ যাতে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পারেন, সেজন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, উত্তর ও দক্ষিণের জন্য ফলাফল ঘোষণার স্থান যথাক্রমে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র ও মহানগর নাট্যমঞ্চ- এই দুই স্থানই সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। পাশাপাশি দুই স্থানের পুরোটাই নিরাপত্তায় বলয়ে আনা হবে।
তিনি বলেন, যেগুলো অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র সেই কেন্দ্রগুলোতে প্রবেশের ক্ষেত্রে মেটাল ডিটেক্টর বসানো হবে। যেন কোনো অবস্থাতেই অস্ত্র বিস্ফোরক নিয়ে কেউ প্রবেশ করতে না পারে।
তিনি বলেন, ভোটের দিন পুরো নগরী মনিটরিংয়ের জন্য ৪টি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। এগুলো হলো গুলশান চেঞ্চারি, তেজগাঁও থানা, মিরপুর পিওএম এবং আব্দুল গনি রোড সেন্ট্রাল কমান্ড।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন নিয়ে গৃহীত ডিএমপির পুরোপুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলে ধরা হয়।
নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে, নির্বাচনের আগের দিন দক্ষিণে ৮টি ও উত্তরে ৮টিসহ মোট ১৬ স্থান থকে নির্বাচনী সামগ্রী বিতরণ করা হবে। এ সামগ্রীর নিরাপত্তা ও যেসব স্থানে সামগ্রী যাবে তা যাওয়ার জন্য পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
২৭ এপ্রিল দিবাগত রাত ১২টা থেকে ২৮ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত ও জরুরি সার্ভিস ছাড়া অন্য সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ থাকবে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার।
তিনি জানান, একটি ভোটকেন্দ্রে ৫ জনের অধিক সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারবেন না। এবং একই কেন্দ্রে দীর্ঘক্ষণ অবস্থানও করা যাবে না।
শনিবার রাত ১২টার মধ্যে বহিরাগতদের এলাকা ত্যাগ করতে হবে। ভোটের দিন বহিরাগতরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ২৫ এপ্রিল (শনিবার) রাত ১২টা থেকে ১ মে পর্যন্ত বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বহন নিষিদ্ধ। ২৬ এপ্রিল রাত ১২ টা থেকে সব ধরনের মিছিল, জনসভা করা যাবে না।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে কোনো ক্যাম্প স্থাপনা করা যাবে না। কোনো অবস্থাতেই পর্যবেক্ষক সাংবাদিকরা ভোট প্রদানের গোপন কক্ষে প্রবেশ করা যাবে না।