শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদরাজনীতিবাসায় ফিরেছেন বেগম খালেদা জিয়া

বাসায় ফিরেছেন বেগম খালেদা জিয়া

দীর্ঘ ৯২ দিন পর গুলশান ২-এর এক নম্বরে অবস্থিত ‘ফিরোজা ভবনে’ নিজ বাসায় ফিরেছেন বেগম খালেদা জিয়া। রোববার ঢাকার বকশীবাজার এলাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অবস্থিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পাওয়ার পর বেলা ১২টা ১৮ মিনিটে সরাসরি গুলশানের বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপার্সন। বিএনপির মিডিয়া উইং জানিয়েছে, কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন না হলে বাসায় যাওয়ার পর তিনি আজ আবার কার্যালয়ে অফিস করবেন। এর আগে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে আদালতের উদ্দেশে রওয়ানা করেন বেগম জিয়া। এরপর সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে রাজধানী ঢাকার বকশিবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত পৌঁছে জামিন আবেদন করেন তিনি।  শুনানি শেষে আবু আহমেদ জমাদারের আদালত জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। বিএনপির অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, সরকার তার চলাফেরায় বাধার সৃষ্টি না করলে শিগগিরই তিনি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রচারে নামতে পারেন। আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা ও তারা যাতে প্রকাশ্যে কর্মকাণ্ড চালাতে পারেন সে জন্যই এ কৌশল নেয়া হয়েছে।দলটির নীতিনির্ধারকদের মতে, খালেদা জিয়া রাজপথে নির্বাচনী প্রচারে নামলে তিন সিটি নির্বাচনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ ভোটাররাও উজ্জীবিত হতে পারেন। নির্বাচনী প্রচারের সুযোগে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাওয়ারও চিন্তাভাবনা রয়েছে তার।৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তিকে কেন্দ্র বিএনপির ঘোষিত কর্মসূচির প্রেক্ষিতে ৩ জানুয়ারি রাত থেকে খালেদা জিয়া গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হন। এরপর সামনে ইট-বালুর ট্রাক রেখে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় কার্যালয়। মূল গেটেও তালা লাগিয়ে দেয়া হয়। খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল কাইয়ুম, প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মাহবুব আলম ডিউ, নিরাপত্তা সমন্বয়কারী আবদুল মজিদ, প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, শায়রুল কবির খানসহ প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মী ও অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রায় এক মাস আগে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।৩০ জানুয়ারি ভোররাতে কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। পরেরদিন পর্যায়ক্রমে ডিশলাইন, ইন্টারন্টে, টেলিফোন, ফ্যাক্স লাইনও কেটে দেয়া হয়। দুর্বল করে দেয়া হয় দুটি ছাড়া অন্য সব মোবাইল কোম্পানির নেটওয়ার্ক। ১৯ ঘণ্টা পর ৩১ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে বিদ্যুতের সংযোগ পুনরায় দেয়া হয়। কার্যালয়ে প্রবেশে আরোপ করা হয় কড়াকড়ি। ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া ছাড়া কারও খাবার ঢুকতে দেয়া হয়নি। চলমান অবরোধ-হরতালের বিরোধিতা করে সরকার সমর্থক বিভিন্ন পেশাজীবী গুলশান কার্যালয় ঘেরাও-বিক্ষোভ সমাবেশ করে।কার্যালয়ে অবস্থানকালে মালয়েশিয়ায় মারা যান ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো। ২৭ জানুয়ারি কোকোর লাশ দেশে আনা হয়। ছেলে মারা যাওয়ায় তাকে সমবেদনা জানাতে ছুটে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু কার্যালয়ের তালা না খোলায় মূল গেটে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ফিরে যান তিনি। অবরুদ্ধ থাকাবস্থায় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এছাড়া ড. কামাল হোসেন ও রাজনৈতিক নেতাসহ নানা পেশাজীবীরাও দেখা করেন তার সঙ্গে।
  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ