শনিবার, মে ৪, ২০২৪
প্রচ্ছদরাজনীতিসংলাপের সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

সংলাপের সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বিএনপি নেতা খালেদা জিয়ার মানসিক সুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। যারা সংলাপের কথা বলছেন, তাদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুনিদের সঙ্গে আবার কিসের সংলাপ!  তিনি বিএনপি-জামায়াতের কর্মকাণ্ডকে ‘জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তা প্রচার না করতে সংবাদমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান। বুধবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পেট্রোল-বোমায় আহতদের দেখতে  ও তাদের মধ্যে অনুদানের চেক প্রদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংলাপের কথা বলা সুশীল সমাজের সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা এই কথা বলছেন, তাদের আমি বলবো, আগে যারা সন্ত্রাস করছে, বোমা মেরে মানুষ হত্যা করছে- এরা তো জঙ্গিবাদী কাজ করছে। আগে তাদেরকে বিরত করুক তারা।  তিনি বলেন, তাদের যদি এতই উদ্যোগ নেওয়ার উৎসাহ থাকে, তাহলে আগে এই সব কাজ যারা করছে- তাদের এ কাজ বন্ধ করুক। তারা যেন খুনিদের খুন করা থেকে বিরত রাখে। তিনি বলেন, আরেক দল নেমে গেছে, ‘সংলাপ’, ‘সংলাপ’ করে। একেকজন তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। তারা কী করেছেন? তারা তো ইলেকশন করতে পারেননি। তারা তো পদত্যাগ করে চলে গেছেন।  তিনি বলেন, কিছু লোকের একটা খেলা শুরু হয়েছে। তারা চোখে দেখে না, একজন সন্ত্রাস করে যাচ্ছে। মানুষ পুড়িয়ে মারছে। এখানে আমার অপরাধ কী? দু’জনকে এক করবে কেন?

সংলাপ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কার সঙ্গে? হত্যাকারীর সঙ্গে! আগুনে যে পুড়িয়ে মারে, তার সঙ্গে? তিনি বলেন, খুনির সঙ্গে আবার কিসের সংলাপ! যার মাঝে এতটুকু মনুষ্যত্ব নেই! এতটুকু দয়ামায়া নেই, যেভাবে মানুষ পুড়িয়ে মারে! শেখ হাসিনা বলেন, আমি তো গিয়েছিলাম। খালেদা জিয়ার ছেলে মারা গেল, সহানুভূতি জানাতে। গেট বন্ধ করে রাখলো। আমাকে যেতে দেয়নি। আমাকে যেভাবে অপমান করেছে, এই যারা ‘সংলাপ’, ‘সংলাপ’ বলছে- তাদের যদি এভাবে অপমান করে, তারা দ্বিতীয়বার যাবে নাকি!

এসএসসি পরীক্ষার সময় হরতাল-অবরোধের কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করতে পারছে না। ছেলেমেয়েরা মানসিকভাবে প্রস্তুত। তারা পরীক্ষা দিতে পারছে না। পরীক্ষা দিতে দিচ্ছে না। যেদিন পরীক্ষা, সেদিন হরতাল দিয়ে পরীক্ষার পথ বন্ধ করছে।  শুক্রবারও বাদ যাবে না। শুক্রবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত হরতাল। এটা কী! এটা ফাজলামো নাকি! খেলা পেয়ে গেছে মানুষের জীবন নিয়ে!

হরতাল-অবরোধের নামে সহিংসতা বন্ধে আরো কঠোর হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডের হুকুমদাতা, অর্থ জোগানদাতা এবং যারা করছে, জঙ্গিবাদের যেভাবে শাস্তি ও বিচার হয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেভাবে হয়- ঠিক আমরা সেভাবে বিচারের ব্যবস্থা করবো। সেভাবেই আমরা সব কিছু করবো।

সহিংসতায় অর্থের যোগানদাতাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থ যে দেবে, হুকুম যে দেবে, বোমা যে বানাবে, বোমা যে মারবে- তারা সবাই সমান দোষী। যারা বোমা সাপ্লাই দেয়, যারা বোমা মারে এবং যারা হুকুমদাতা, সবার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশে এই জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই। জঙ্গিবাদ থাকবে না। এটা হলো বাস্তব কথা।

জঙ্গিদের নিউজ সংবাদমাধ্যমে প্রচার না করা আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা তো জঙ্গি দলই। জামায়াত-বিএনপি এরা জঙ্গি। আপনারা দেখছেন না! জঙ্গিদের নিউজ দেখানো বন্ধ করেন না! জঙ্গিদের নিউজ দেখানো বন্ধ করেন, সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তিনি বলেন, তাদের যারা বেশি কভারেজ দিচ্ছেন, তারা বেশি উৎসাহিত করছেন। এটা বন্ধ করেন। দেখবেন, অমনি তা কমে যাবে। কেন জল্লাদের প্রচার করছেন। জল্লাদের প্রচার বন্ধ করেন, সব কমে যাবে।

দেশব্যাপী বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ-হরতালের নামে চলমান সহিংসতা ও পেট্রোল-বোমায় দগ্ধদের দেখতে বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি আহত প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে অনুদান তুলে দেন। পারিবারিক সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে এই অনুদান দেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে অবরোধ সমর্থকদের আগুনে দগ্ধ হয়ে ৬৩ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ