তবে খালেদা জিয়া সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি চেয়ে সময়ের আবেদন জানাবেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। তারা বলেন, উচ্চ আদালতে অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে করা আবেদনের কথা উল্লেখ করে তারা সময় চাইবেন। খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত হতে রওনা হচ্ছেন বলেও জানান তারা। এর আগে বিচারক তার পরিচিতি উল্লেখ করে এ মামলার বিচার কাজ চালাতে রাষ্ট্র, দুদক ও আসামিপক্ষের সহযোগিতা চান। গত ১৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের সুপারিশে আইন মন্ত্রণালয় আগের বিচারক বাসুদেব রায়ের বদলে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ হিসাবে নিয়োগ দেয় আবু আহমেদ জমাদারকে। তিনি আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন।
গত ১৭ ডিসেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি চেয়ে দুই দফায় খালেদা জিয়ার করা সময়ের আবেদন খারিজ করে দেন আগের বিচারক বাসুদেব রায়। পরে খালেদার আইনজীবীদের তুমুল হট্টগোলের মধ্যেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদের আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এরপর বাকি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য বুধবার দিন ধার্য করে খালেদাকে অবশ্যই আদালতে হাজির করাতে আইনজীবীদের নির্দেশ দেন আদালত। গত ২২ সেপ্টেম্বর, ১ ডিসেম্বর ও ৮ ডিসেম্বর আরও তিন কার্যদিবসে সাক্ষ্য দেন একই সাক্ষী। হারুন-অর-রশিদ খালেদার বিরুদ্ধে দায়ের করা অপর মামলা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলারও বাদী ও প্রথম সাক্ষী। একই আদালতে বিচার চলছে এ মামলারও।
গত ২২ সেপ্টেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার প্রথম সাক্ষী বাদী হারুন অর রশিদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর পর থেকে আবেদন জানিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ কয়েকবার পিছিয়ে নেন খালেদার আইনজীবীরা। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে খালেদার তিনটি লিভ টু আপিল বিচারাধীন থাকা বা হরতালের কারণ দেখিয়ে এসব আবেদন করা হচ্ছিল। তবে খালেদার সব আপিল ও লিভ টু আপিল সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে গেছে।
খালেদা ছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার অপর পাঁচ আসামি হচ্ছেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেকরহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামালউদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান। তাদের মধ্যে কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল এবং শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনে আছেন। তারা আদালতে হাজির থাকবেন।মামলার অপর আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের বাইরে আছেন। তার পক্ষে তার আইনজীবীরা আদালতে হাজিরা দেবেন। অপর দুই আসামি ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমনকমিশন। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকাআত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি তদন্ত করে দুদকের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ মোট ছয়জনকে অভিযুক্তকরে ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।