এছাড়া খালেদা জিয়ার দুই পুত্রের জীবন যাপনের দিকে ইঙ্গিত করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারেক কোকো বিদেশে বিলাসী জীবন যাপন করে, এসব কী ছেঁড়া-গেঞ্জি আর ভাঙ্গা স্যুটকেসের জাদু? তিনি বলেন, ‘ছেঁড়া-গেঞ্জি আর ভাঙ্গা স্যুটকেস থেকে শুধু টাকা নয় এখন দেখছি ডলার পাউন্ডও বের হয়?’ বিদেশী দূতদের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিদেশীদের কাছে নালিশ করে লাভ হবে না, তারা ক্ষমতায় বসাবে না। জনগণের ভোট নিয়ে ক্ষমতায় আসতে হবে। আদালতে খালেদার হাজিরা প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এতই যদি সততা তবে কেন আদালতে হাজিরা দেন না। এতিমের টাকা যারা মেরে খায় তাদের মুখে অপরের সমালোচনার কথা মানায় না।’
এ সময় হাছান মাহমুদ অভিযোগ করে বলেন, ‘২০১৩ সালে স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে নিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে আগুনে পুড়িয়ে শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ পথচারী, গাড়ীচালক হত্যা, আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী হত্যা, মন্দির পোড়ানো, কোরান শরীফে আগুন দেয়া, বায়তুল মোকাররমে আগুন, পুলিশ হত্যা, রেললাইন উপড়ে ফেলা, সবই করেছে বিএনপি। এছাড়া খালেদা জিয়ার মনের জ্বালা ডিসেম্বর মাসে আরও বেড়ে যায় উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে বিএনপি নেত্রীর মনের জ্বালা বেড়ে যায়। ১৯৭১ এ ক্যান্টনমেন্টে সময় কাটানোর স্মৃতি মনে করে উনার কষ্ট লাগে।‘
নির্বাচনে বিএনপি না আসা প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন,‘ বিএনপি নির্বাচনে না এসে যে ভুল করেছে, তার মাশুল তাদের দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, বিএনপি রাজনীতি না করে রাত-নীতি করে। রাতের আঁধারে গোপন মিটিং করে ষড়যন্ত্র করে। ষড়যন্ত্রকারীদের রেহাই দেয়া হবে না।‘ বিএনপিকে বিষফোঁড়া উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি এখন দেশের জন্য বিষফোঁড়া। উন্নয়নের জন্য বাধা। দেশের কল্যাণের জন্য হুমকিস্বরূপ। দেশের কল্যাণে এইসব বিষফোঁড়া প্রয়োজনে কেটে ফেলতে হবে।‘ খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় সময় দেশ দুর্নীতির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তার দুই ছেলের মানি লন্ডারিং সিঙ্গাপুরের আদালতে প্রমাণিত। এফবিআই এসে সাক্ষ্য দিয়ে যায়। তিনি নিজে প্রধানমন্ত্রী হয়ে কালো টাকা সাদা করেছেন। লজ্জা করে না?’ সম্প্রতি খালেদা জিয়ার বড় পুত্র এবং বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মন্তব্যের জবাবে শুক্রবার ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির বাসভবনে আয়োজন করা হয় এ সংবাদ সম্মেলনের।
সংবাদ সম্মেলনে ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম বেগম খালেদা জিয়া তার অর্বাচীন পুত্র তারেক রহমানের অশোভন, অশালীন এবং চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের পর তিনি এজন্য দুঃখ প্রকাশ করবেন কিংবা জাতির কাছে ক্ষমা চাইবেন। কিন্তু জাতিকে অবাক করে দিয়ে তিনি পুত্রের সাথেই সুর মিলিয়ে তার অসংযত জিভ দিয়ে একই ধরণের বক্তব্য রেখেছেন। সম্ভবত, বিজয়ের মাস ডিসেম্বর মাস আসলেই ১৯৭১-এ পাকিস্তানিদের আতিথেয়তায় থাকার কথা মনে পড়ে তার কষ্ট বেড়ে যায়। তাই তিনি ডিসেম্বর মাসে বেসামাল হয়ে পড়েন এবং অসংলগ্ন কথা বলা শুরু করেন এবং অসংযত আচরণ করেন।
বেগম খালেদা জিয়াকে অনুরোধ জানাবো দয়া করে নিজের এবং নিজের পুত্রের মুখটা সামলান এবং দেশের মানুষের উপর পেট্রোল বোমা, হামলা পরিচালনার হিংস্র হায়েনার মানসিকতা পরিহার করুন। তাহলে দেশের মানুষ স্বস্তি পাবে। অন্যথায় দেশের মানুষের রোষানলের আগুনে আপনি এবং আপনার পুত্র দুজনই দগ্ধ হবেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী প্রমুখ।