বুধবার, মে ১৫, ২০২৪
প্রচ্ছদঅর্থ ও বানিজ্য সময়কক্সবাজারে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং মিরসরাই স্পেশাল ইকোনোমিক জোন গড়ে তোলা...

কক্সবাজারে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং মিরসরাই স্পেশাল ইকোনোমিক জোন গড়ে তোলা হবে : বাণিজ্যমন্ত্রী

গ্যাস সংকট সমাধানে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প পরবর্তী ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। টার্মিনালটির ধারণক্ষমতা হবে ৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন টন। প্রতিদিন ৫০০ এমএমসিএফ (মিলিয়ন ঘনফুট) এলএনজি কাতার থেকে আমদানির মাধ্যমে দেশের চলমান গ্যাস সংকট নিরসন করা সম্ভব হবে মনে করছেন তিনি।

মন্ত্রী জানান, কক্সবাজার মহেশখালী মাতার বাড়িতে ৩৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং চট্টগ্রামের মিরসরাইসহ বেশ কয়েকটি স্থানে স্পেশাল ইকোনোমিক জোন গড়ে তোলা হবে। নির্মাণ করা হবে একটি রিফাইনারি।  বুধবার দুপুরে নগরীর হালিশহর গরীবে নেওয়াজ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। হালিশহর আবাহনী মাঠে মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও রফতানি মেলার উদ্বোধনী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।  চীনের অর্থায়নে চট্টগ্রামে ১ বিলিয়ন ৫ ডলার ব্যয়ে একটি রিফাইনারী নির্মাণ করা হবে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম সত্যিকার অর্থেই বাণিজ্যিক রাজধানী হবে আপনারা তা দেখতে পাবেন।

তৈরি পোশাক রফতানির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে পণ্যের বাজার বহুমুখিকরণের পরামর্শ দিয়ে ব্যবসায়ীদের প্রতি তিনি বলেন, আমরা শুধু তৈরি পোশাক রফতানির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবো না। পণ্যের বাজার বহুমুখিকরণ করবো।  চীন-জাপান বাংলাদেশের বড় বাজার উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশ শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজারে প্রবেশের সুযোগ দিয়েছে। কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেয়নি। তারপরও একক হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাজার।

মন্ত্রী বলেন, রফতানি বাণিজ্যে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ৬৮ দেশে ২৫ ধরণের পণ্য রফতানি হতো ৩৪৮ মিলিয়ন ডলার; আর গত অর্থবছরে রফতানি হয়েছে ৩০ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার। তখন রিজার্ভ না থাকলেও বর্তমানে ২২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ বাংলাদেশের।  ৪৮টি স্বল্প উন্নত দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো। এক সময় বাংলাদেশের ৫০ থেকে ৭০ ডলার মাথাপিছু আয় ছিল। বর্তমানে ১২০০ ডলার। মাথাপিছু আয় ছাড়া অন্য সবদিক দিয়ে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

দেশে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা হলেও সেগুলো থেকে সিএমসিসিআই আয়োজিত মেলাটি ভিন্ন উল্লেখ করে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, এই মেলায় রফতানিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এতে করে রফতানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হলে সরকারের ধারাবাহিকতা থাকা প্রয়োজন। কারণ ঘন ঘন সরকার বদল হলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হয়।

শিল্প-বাণিজ্য বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য ডা.আফসারুল আমীন।  চট্টগ্রামের উন্নয়নে কেবল প্রতিশ্রুতির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে তা ‍বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান সংসদ মঈনুদ্দিন খান বাদল। তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতি দিবেন না, বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাবেন। কারণ চট্টগ্রামের উন্নয়ন বাংলাদেশের উন্নয়নের সমর্থক। চট্টগ্রামে যা হবে তার সুবিধা পুরা বাংলাদেশ ভোগ করবে।

সিএমসিসিআই সভাপতি খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক মন্ত্রী ডা.আফসারুল আমীন, সংসদ সদস্য মঈনুদ্দিন খান বাদল, মেহজাবিন মোরশেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ সালাম, সংসদ সদস্য শামসুল হক, আবু রেজা মোহাম্মদ নদবী, ওয়াসেকা আয়শা খানম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম, মেলার আহ্বায়ক আমিনুজ্জামান ভূঁইয়া, সিএমসিসিআই সহ-সভাপতি মাহবুব চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ