বুধবার, মে ১৫, ২০২৪
প্রচ্ছদরাজনীতি লতিফ সিদ্দিকীর শাস্তির দাবিতে রোববার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল

লতিফ সিদ্দিকীর শাস্তির দাবিতে রোববার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল

আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর শাস্তির দাবিতে সম্মিলিত ইসলামী দল রোববার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কর্মসূচি দিয়েছে। হজ, মহানবী স. এবং তাবলীগ জামাত সম্পর্কে কটুক্তি করে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী মুরতাদ হয়ে গেছেন দাবি করে তার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে এই হরতাল কর্মসূচি দিয়েছে কয়েকটি ইসলামী দলের এই মোর্চাটি। বিদেশে অবস্থানরত লতিফ সিদ্দিকীকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতার করে দেশে ফেরত এনে শাস্তি দেয়ার দাবি জানাচ্ছে তারা।
মন্ত্রীসভা ও আওয়ামী লীগ থেকে লতিফ সিদ্দিকীকে বহিষ্কার তার অপরাধের তুলনায় যথেষ্ট নয় দাবি করে ইসলামী দলগুলো বলছে, সরকারিভাবে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে দেশের মানুষ দলীয় এসব সিদ্ধান্তকে আইওয়াশ বলে মনে করছে। একই সাথে ধর্ম অবমাননার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করে আইন পাশেরও দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। এর আগে ইসলামী দলসমুহ লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেফতারের জন্য দুই দফায় আল্টিমেটাম দিয়েছিল। প্রথম দফায় ১৫ অক্টোবরের মধ্যে এবং সর্বশেষ ২২ অক্টোবরের মধ্যে তাকে গ্রেফতারে সময়সীমা বেধে দিয়েছিল। সরকার এ সময়ের মধ্যে তার ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় ২২ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কালকের হরতালের চূড়ান্ত কর্মসূচি দেয় সম্মিলিত ইসলামী দল।
হরতালের সমর্থনে সম্মিলিত ইসলামী দল শনিবার রাজধানীসহ সরাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। ইসলামী দলসমুহের পক্ষ থেকে আজ এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে ঈমান রক্ষার হরতালে বাঁধা দেয়ার পরিণাম হবে ভয়াবহ। নিছক ঈমান ও দ্বীন রক্ষার তাগিদেই এই হরতাল। আমরা সরকারকে কয়েক দফা সময় বেধে দেয়ার পরও সরকার স্ব-ঘোষিত ধর্মদ্রোহী, মুরতাদ কুলাংগার লতিফের বিরুদ্ধে সরকারিভাবে কোনো মামলা করেনি, তাকে গ্রেফতারের ব্যাপারে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপও গ্রহণ করেনি। প্রিয় নবীজি স., পবিত্র হজ ও তাবলীগ জামাত নিয়ে তার কটুক্তি, ধৃষ্টতা ও বেয়াদবির সর্বোচ্চ শাস্তি না হলে নাস্তিক মুরতাদদের দৌরাত্ম বেড়ে যাবে। ইসলামের দুশমন, মুরতাদ গোষ্ঠীকে যাতে আস্কারা ও রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা না হয় সে ব্যাপারে হুঁশিয়ারী করতেই ইসলামী দলসমূহের কালকের হরতালে সব ঈমানদার মুসলমানকে সক্রিয়ভাবে মাঠে থাকার আহবান জানান তারা।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, আমরা আশা করি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতসহ সব রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবি সংগঠনের যারা আল্লাহ, মহানবী স., হজ ও ইসলামে বিশ্বাস করেন সবাই এ ঈমানী হরতালে সমর্থন দিবেন এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ করবেন। সরকার আসে, সরকার যায় ইসলামের দুশমনদের পক্ষ নিয়ে কেউ পার পাবে না। তারা আরো বলেন, যে সব নেতা নেত্রী হরতালের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন তাদেরকে শিক্ষা নিতে হবে, যুগে যুগে স্বৈরাচার জালিম গোষ্ঠীর করুন পরিণতি থেকে। হরতালের সমর্থনে সব পেশার লোক যার যার অবস্থানে থেকে সহযোগিতা করবেন। ব্যাংক, বীমা, দোকান পাঠ, যানবাহন, রিক্সা, সবই আপন আপন দায়িত্বেই বন্ধ রেখে স্বতস্ফূর্তভাবে শাস্তিপূর্ণ এ হরতালে সবাই পূর্ণ সহযোগিতা করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। কোনো সুযোগ সন্ধানী যাতে হরতালে নাশকতা করতে না পারে সে ব্যাপারে তারা সবার সহযোগিতা চান।
এ দিকে হরতারের সমর্থনে শনিবার সকালে রাজধানীতে মহাসচিব মাওলানা জাফরুল্লাহ খানের নেতৃত্বে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। নগরীর লালবাগে মিছিল শেষে নেতৃবৃন্দ সবাইকে কালকের হরতালে সরকার, প্রশাসন ও বিরোধীদলসহ সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। রাজধানীর সব থানায় থানায় হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয় বলে সম্মিলিত ইসলামী দলের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হেেয়ছে।
হরতালের সমর্থনে কামরাঙ্গীর চর মিছিলের নেতৃত্ব দেন মুফতি ফখরুল ইসলাম ও মাওলানা আবুল কাসেম কাসেমী, যাত্রাবাড়ীর মিছিলে নেতৃত্ব দেন শর্ষিনার পীর মাওলানা শাহ আরিফ বিল্লাহ সিদ্দিকী ও মুফতি মিজানুর রহমান, রামপুরায় মাওলানা আবদুস সবুর মাতুব্বর, গুলশানে ডাঃ মুফতি আবদুল কাউয়ূম আজহারী ও মাওলানা সালেহ সিদ্দিকী, উত্তরায় মাওলানা কামরুল হাসান ও মুফতি জোবায়ের। মতিঝিলে মুহাদ্দিস শাহ আলমের নেতৃত্বে। পল্টনে মিছিল হয় মাওলানা আবু তাহের জিহাদীর নেতৃত্বে। মোহাম্মাদপুর মিছিলের নেতৃত্ব দেন মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী। সাভার বাসস্ট্যান্ড থেকে মাওলানা মহিউদ্দীন রব্বানীর নেতৃত্বে মিছিল বের হয়। ধানমন্ডি মিছিল হয় মুফতি মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে। অ্যাম্বুলেন্স, ওষুদের দোকান, লাশবাহী গাড়ি, ফায়ার সার্ভিস ইত্যাদি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ