শনিবার, মে ৪, ২০২৪
প্রচ্ছদরাজনীতিপিয়াস করিমের মৃত্যুতে খালেদা ও মির্জা ফখরুলের শোক

পিয়াস করিমের মৃত্যুতে খালেদা ও মির্জা ফখরুলের শোক

সোমবার সকালে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে দেশের বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. পিয়াস করিম-এর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। সোমবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ শোক জানানো হয়।

শোকবার্তায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেন, সত্য প্রকাশে এক নিঃশঙ্কচিত্ত নির্ভীক ব্যক্তিত্ব ড. পিয়াস করিমের পৃথিবী থেকে চলে যাওয়া বর্তমানে দেশের এই সংকটকালে এক অপূরণীয় বিশাল ক্ষতি হলো। দেশে যখন নাগরিক স্বাধীনতা সম্পূর্ণরূপে হরণ করা হয়েছে, বিরোধীদলের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো যখন সম্পূর্ণরূপে কেড়ে নেওয়া হয়েছে, গণমাধ্যম ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে যখন সংকুচিত করা হয়েছে, ঠিক সেই মুহূর্তে পিয়াস করিমের পৃথিবী থেকে চিরবিদায় এক গভীর শূন্যতার সৃষ্টি করলো। তিনি বলেন, মরহুম ড. পিয়াস করিম ছিলেন এই সময়ের স্বাধীন বিবেকের উজ্জ্বল প্রতিনিধি।

তিনি বলেন, স্বাধীনচেতা এই মানুষটি সব সময়ই ছিলেন আপসহীন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে অকুতোভয় উচ্চকণ্ঠ। নিজস্ব মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অকম্প, অবিচল। অবৈধ শাসক গোষ্ঠীর উৎপীড়ন তাকে কোনোভাবেই নতজানু করতে পারেনি। পিয়াস করিমকে সত্যনিষ্ঠ ও দৃঢ়চেতা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, সত্যনিষ্ঠ, দৃঢ়চেতা এই মানুষটি শাসকগোষ্ঠীর রোষানলে পড়া সত্বেও সত্য ঘোষণায় ছিলেন দ্বিধাহীন। বর্তমান আওয়ামী দুঃশাসনের সময়ে অপশক্তির আক্রমণ থেকে এই উচ্চশিক্ষিত বিদগ্ধ মানুষটিও রেহাই পাননি। ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী প্রকাশ্যে, গোপনে নানা হুমকির মধ্যেও তিনি সমান স্বাচ্ছন্দে, সমান উৎসাহে তার পথচলায় ছিলেন নির্ভীক, অবিশ্রান্ত, আত্মপ্রত্যয়ী।

তিনি বলেন, দেশ ও দশের প্রতি সহমর্মী এই মানুষটির অন্তর্লোক ছিল অকৃত্রিম আদর্শবাদিতার আধার। জাতীয় স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং মানুষের হারানো সম্মান, আত্মমর্যাদা এবং তাদের মৌলিক অধিকারগুলোর সম্পূর্ণ পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রশ্নে এই দুঃসময়ে দুঃসাহসের ওপর ভর করে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে তিনি কখনোই পিছপা হননি।

তিনি বলেন, প্রগতিশীল, জাতীয়তাবাদী, বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী এই মানুষটি   নিরলস, একনিষ্ঠ, আপসহীন এবং স্থির লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার অগ্রপথিক। পাশাপাশি ক্ষমাশীল, সহৃদয়, উদারচেতা ও বিনীত এক ব্যক্তি স্বভাবের কারণে তিনি আমাদের সবার কাছে ছিলেন আত্মজন। অন্যায়, অবিচার, কুশাসন ও অপকীর্তির বিরুদ্ধে তার নির্ভয় উচ্চারণ যুগের পর যুগ দেশবাসীকে প্রেরণা যোগাবে।

অপর এক শোকবার্তায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশের বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী, কীর্তিমান বুদ্ধিজীবী, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার রক্ষার অনন্য ভাষ্যকার ড. পিয়াস করিমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, স্বাধীনচেতা, নির্ভীক এই ব্যক্তিটি বর্তমানে অবৈধ ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর তীব্র আক্রমণের মুখোমুখি হয়েও ন্যায় ও সত্যের সপক্ষে তার কণ্ঠকে রেখেছিলেন প্রতিবাদমুখর।

মির্জা আলমগীর বলেন, যে সময়ে শাসক গোষ্ঠী তার সব হিংস্রতা দিয়ে জনসাধারণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে, ঠিক সেই মুহূর্তে ড. পিয়াস করিমের মতো এক অবিচল সংগ্রামী পুরুষের পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়াতে জনগণ শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে। তার পরিবারের ওপর ফ্যাসিস্ট আক্রমণের মুখেও মরহুম ড. করিম গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলাকে নিজের জীবনের সবচাইতে বড় অঙ্গীকার পূরণ বলে মনে করেছেন।

পিয়াস করিম নাগরিক জাগরণে সক্ষম ছিলেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান শাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে সব হুমকিকে অগ্রাহ্য করে তিনি তার চিন্তা, কথা ও লেখনীতে  নাগরিক জাগরণের উদ্বোধন ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। তার এই বিরোচিত ভূমিকা দুঃসময়ের সব বাধা অতিক্রম করে জনগণের কাছে অনন্তকাল ধরে অভিনন্দিত হবে। মির্জা আলমগীর মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের সদস্য, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ