ফখরুল ইসলাম চৌধুরী পরাগ, সম্পাদক ও প্রকাশক, (বিডি সময় ২৪ ডটকম)
রমজানে অত্যাবশ্যকীয় ভোগ্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে প্রতিটি দোকানে মূল্য তালিকা টাঙানো বাধ্য করা, মানবস্বাসে’্যর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ফরমালিন ও কার্বাইডযুক্ত, পচাবাসি, ভেজাল পণ্য বিক্রি ও ওজনে কারচুপি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান শুরু করেছে। আর তাতে কিছু কিছু দোকানে মূল্য তালিকা টাঙানোর তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে।
আইন অনুযায়ী প্রতিটি দোকানের সামনে মূল্যতালিকা প্রদর্শন করতে হয়। কিন’ বাংলাদেশের কোথাও এই আইন মান্য করতে দেখা যায় না। ফলে দোকানিরা যার যেমন ইচ্ছা মূল্য নির্ধারণ করে ক্রেতাদের ঠকিয়ে আসে দিনের পর দিন। ভোক্তা অধিকার আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় ক্রেতা বা ভোক্তারা নিজেদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে এসেছে দীর্ঘদিন এই পরিসি’তিতে রমজানকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চট্টগ্রাম চেম্বার, ক্যাব, বিএসটিআই, নগর পুলিশ ও বাজার কমিটির সহায়তায় এই অভিযানকে সাধুবাদ জানাতে হয়।
তবে অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে হয় শুরুর দিকে বেশ ঢাকঢোল পিটিয়ে অভিযান শুরু হলেও কয়েকদিনের মধ্যে তা স্তিমিত হয়ে যায় এবং পরিসি’তি পূর্বাবস’ায় ফিরে যায়। বাংলাদেশ ভেজাল খাদ্য ও ভেজাল পণ্যের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে অনেকদিন আগে থেকেই। শিশুখাদ্য, ঔষুধ, পানীয়, ফলমূল, মাছ-মাংস, তরিতরকারি, শাকসবজি এমন কোনো খাদ্য নেই যেখানে ফরমালিন বা কার্বাইডের মতো শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর কেমিক্যাল মেশানো হয় না। বিগত কয়েক বছর থেকে সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টাও কম করা হয়নি। আন্দোলন-সংগ্রাম-মানববন্ধনও কম হয়নি। শেষ পর্যন্ত কয়েকদিন আগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ নগরীতে ফরমালিনযুক্ত কোনো ধরনের ফলমূল ও আনাজ প্রবেশ করতে না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এবং এ লক্ষ্যে নগরীর প্রবেশ পথসমূহে কড়াকড়িও আরোপ করেছে।
চট্টগ্রামেও আমরা তদ্রূপ কঠোর অবস’ান দেখতে চাই। কারণ প্রতিবছর রমজান এলে অধিক মুনাফালোভী ও অসৎ ব্যবসায়ীরা পণ্যের ব্যাপক চাহিদার সুযোগে ভেজাল, পচা ও খাওয়ার অনুপযোগী পণ্যে বাজার সয়লাব করে ফেলে। দীর্ঘকাল ধরে এ পরিসি’তি বিরাজমান। পরিসংখ্যানে দেখা যায় রমজানেই এই ধরনের প্রবণতা ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। কাজেই বর্তমানে যৌথ বাজার মনিটরিং সেল তাদের যে অভিযান শুরু করেছে আমরা চাই তা আরও বিস্তৃত ও কার্যকর করা হোক এবং এ ধরনের অভিযান শুধু রমজানের শুরুতে সীমাবদ্ধ না রেখে সারা বছরজুড়ে অব্যাহত রাখা হোক। ভেজাল ও বিষাক্ত পণ্যে জাতি যে বিপন্নের সম্মুখীন হয়েছে তা থেকে উত্তরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা জরুরি।