বৃহস্পতিবার, মে ১৬, ২০২৪
প্রচ্ছদঅর্থ ও বানিজ্য সময়একে আজাদ শাহজালাল ব্যাংকে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন

একে আজাদ শাহজালাল ব্যাংকে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন

পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হয়ে একে আজাদ শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। তার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে গ্রেফতার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ব্যাংকটির পরিচালক মো. সোলায়মান। বুধবার বেলা আড়াইটায় গ্রেফতারের পর ব্যাংকটির পরিচালক দুদকের ভেতরে প্রবেশ করতে করতে বলেন, ‘আমি একে আজাদের ষড়যন্ত্রের শিকার। তার বিরুদ্ধে বলায় আমার এ অবস্থা।’

গ্রেফতারের পর গাড়ি থেকে দুদকের ভেতরে প্রবেশ করার সময় দুদকে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের বলেন, একে আজাদ শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে একক কর্তৃত্ব চান। ব্যাংকের পর্ষদ থেকে তিনি আমাকে অপমান ও অপসারণের অপচেষ্টা করছেন। তার কারণেই শক্তিশালী আর্থিক ভিত্তির ব্যাংকটি ক্রমেই দুর্বলতার দিকে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ভুয়া সার্টিফিকেটধারী একে আজাদের বোন ও কয়েকজন পরিচালকের আত্মীয়ের তথ্য বের করা এবং বোর্ডে ভুয়া বিলের বিরোধিতা করায় আমাকে এ অবস্থায় পড়তে হয়েছে। ব্যাংকটি থেকে তার আত্মীয়-স্বজনকে খেয়াল খুশিমতো ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করছেন একে আজাদ। তদন্ত করলে সব বেরিয়ে আসবে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, একে আজাদ তার মালিকানাধীন চ্যানেল টোয়েন্টিফোর ও সমকাল পত্রিকায় ব্যাংকের সব বিজ্ঞাপন বেশি করে দেওয়ার জন্য চাপ দিতেন। আমি বলেছি সব মিডিয়ায় সমানভাবে পাবে। আমার এমন কথায় তিনি আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিতেন। বিজ্ঞাপন দেওয়ার বিরোধিতা করায় তিনি আমার বিরুদ্ধে আত্মসাতের মিথ্যা মামলা সাজিয়েছেন।

সোলায়মানের কাছে এসময় সাংবাদিকরা জানতে চান- আপনি কি মনে করছেন একে আজাদ দুদককে ব্যবহার করেছে? এসময় তিনি বলেন, আমি দুদকের বিষয়ে কিছু বলবো না। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক মো. সোলায়মানকে রাজধানীর বিজয় নগর আকরাম টাওয়ার থেকে গ্রেফতার করে দুদক। ডিবি পুলিশের সহায়তায় দুদকের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে।

জানা যায়, ২০১১ সালের ২০ নভেম্বর শাহজালাল ব্যাংকের চট্টগ্রামের জুবিলী রোড শাখার গ্রাহক এসকে স্টিলের নামে ১৪০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে পরিচালনা পষর্দ। ঋণ অনুমোদনের পর্ষদ বৈঠকে মোহাম্মদ সোলায়মান উপস্থিত না থাকলেও তা পাসে তিনি পরোক্ষ ভূমিকা রাখেন বলে দাবি পর্ষদের একাধিক পরিচালকের। এমনকি তিনি ঋণের অর্থ আদায়ে নিশ্চয়তাও দেন বলে দাবি পর্ষদের। এ ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মামলাও করেছে মোহাম্মদ সোলায়মান, সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপক ও এসকে স্টিলের বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগ করেছেন মো. সোলায়মান।

জানা যায়, কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় গত বছর ঋণটি খেলাপি হয়ে যায়। এ অবস্থায় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ তা আদায়ে সোলায়মানকে চাপ দেন। এ সময় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্তে বেরিয়ে আসে, জুবিলী রোড শাখার ব্যবস্থাপক আ ন ম জাহাঙ্গীর ওই শাখার তত্কালীন ব্যবস্থাপক, যিনি পরিচালক মোহাম্মদ সোলায়মানের আত্মীয়। ঋণের অর্থের মধ্যে প্রায় ১৯ কোটি টাকা পরিচালক সোলায়মানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান প্যারাডাইজ করপোরেশনের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর হয়েছে। পরিচালক মোহাম্মদ সোলায়মানের দাবি, এসকে স্টিলকে ঋণ প্রদানের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

দুদকের উপ-পরিচারক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য  বলেন, তদন্তের স্বার্থে ব্যাংকটির দায়ের করা মামলার আসামি সোলায়মানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতের অনুমোদনের পর দুদক এখন তাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ