পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ছবির জনপ্রিয় নায়িকা স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় গত মাসেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে জোর গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। রক্তাক্ত হাত নিয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছিলেন। তবে তার পরিবারের সদস্য এবং ঘনিষ্ঠজনরা এই গুজব উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছেন, হোটেলে পড়ে গিয়ে গ্লাস ভেঙে তিনি আহত হয়েছিলেন। ঘটনাটি ঘটেছিল নিউটাউনের একটি পাঁচতারা হোটেলের ঘরে। সেই ঘরে স্বস্তিকার সঙ্গে রাতযাপন করেছিলেন বিশিষ্ট পরিচালক সুমন মুখোপাধ্যায়। সুমনের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরেই স্বস্তিকার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা শোনা যাচ্ছিল। তবে সেই সম্পর্ককে পরিণতি দেয়ার চেষ্টা নিয়ে দু’জনের মধ্যে প্রবল ঝগড়ার পরিণতিতেই নাকি গ্লাস ভাঙাভাঙি এবং আহত হওয়া। অথচ এ ঘটনার কয়েকদিন আগেই স্বস্তিকা তার ফেসবুকে লিখেছিলেন, প্রেমে পড়ার ব্যাপারে একটা সীমা থাকা দরকার। কেননা, হৃদয় চায় শান্তি। সেই শান্তিই কি সুমনের মধ্যে খুঁজে পেতে চেয়েছিলেন স্বস্তিকা? অবশ্য স্বস্তিকার প্রেমে পড়া নিয়ে টালিগঞ্জে কত যে কাহিনী রয়েছে তা বলে শেষ করা যাবে না। স্বস্তিকা নিজেও মাঝে মাঝেই বলেন, দু’পক্ষেরই ভালবাসা করার অধিকার যেমন রয়েছে তেমনি ছেড়ে যাওয়ার অধিকারও রয়েছে। আর এই অধিকারের তাগিদে স্বস্তিকার সঙ্গে অনেকেরই সম্পর্ক ভেঙেছে। আবার নতুন করে প্রেমে পড়েছেন তিনি। তাতেও যে ক্লান্ত হয়ে উঠেছিলেন স্বস্তিকা সেকথা বোঝা গেছে তার ফেসবুক পোস্ট থেকে। টালিগঞ্জে স্বস্তিকার প্রথম সম্পর্ক তৈরি হয় জনপ্রিয় নায়ক জিতের সঙ্গে। সেই সময় দু’জনে রাতের পার্টিতে নিয়মিত যেতেন। একসঙ্গে ঘোরাফেরা করতেন প্রায় সর্বত্র। জিতের সঙ্গে সেই সম্পর্ক পরিণতি পাওয়ার মতো অবস্থাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু স্বস্তিকা গৃহবধূটি হয়ে থাকতে চাননি। আবার জিৎ সেটাই চেয়েছিলেন। তবে সঠিক কি কারণে সেই সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল তা এখনও গোপন রয়েছে। এরপরই স্বস্তিকার সম্পর্ক গড়ে ওঠে পরমব্রতের সঙ্গে। পরমের সঙ্গে তার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে বেশি সময় লাগেনি। সর্বত্রই তখন পরমসঙ্গী স্বস্তিকা। দু’জনে একসঙ্গে কিছুদিন ছিলেন বলেও শোনা যায়। তবে পরমের বিদেশ পাড়ি নিয়ে তিক্ততা চরম ওঠে। পরমও ইকা নামে এক বিদেশিনীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলায় ইতি পড়ে পরম-স্বস্তিকা সম্পর্কে। পরমের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি নিয়ে মিডিয়ায় প্রবল বাদ-প্রতিবাদও হয়েছিল। তবে স্বস্তিকা হতাশা কাটিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন গায়ক ও অভিনেতা দিব্যেন্দুর সঙ্গে। শোনা যায় সেই সম্পর্ক চলাকালীনই পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ডেটিং শুরু করেন স্বস্তিকা। সৃজিত ও স্বস্তিকার সম্পর্ক নিয়ে কোন রাখঢাক ছিল না কোন তরফে। এই ইংরেজি নববর্ষেই দেখা গেছে সৃজিতের কোলে উঠে নাচছেন স্বস্তিকা। টালিগঞ্জে এমন আলোচনাও শোনা গিয়েছিল, এই সম্পর্ক স্থায়ী হতে পারে। তবে চার বছর ধরে এই সম্পর্ক চলার পর ‘জাতিশ্মর’ ছবির কোন একটা বিষয় নিয়ে দু’জনের সম্পর্কে ফাটল ধরে। স্বস্তিকা জাতিশ্মরের প্রচারেও অংশ নেননি। সৃজিতের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর স্বস্তিকা আবার প্রেমে পড়েন সুমনের। কিন্তু সেই সম্পর্ক পরিণতি পাওয়ার আগেই ভেঙে যাওয়ায় স্বস্তিকা ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, এবারও আমাকে ভগ্নহৃদয় নিয়ে ফিরে আসতে হলো। স্বস্তিকা বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবীণ অভিনেতা সন্তু মুখোপাধ্যায়ের কন্যা। অনেক দিন আগে তার বিয়ে হয়েছিল প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সাগর সেনের ছোট ছেলে প্রমিত সেনের সঙ্গে। তাদের একটি মেয়েও রয়েছে। কিন্তু সেই সম্পর্ক বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। মামলা মোকদ্দমাও হয়েছে। এখন মেয়ে অন্বেষাকে নিয়ে স্বস্তিকা একাই থাকেন।
